শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাজগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি মুছা, বিদ্যুৎসাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন হুমায়ন সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি শাহ আলম,সম্পাদক এমদাদুল বোয়ালখালীতে পলিথিন মজুদ রাখায় দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা  ক্লাস চলাকালীন সময় শিক্ষিকার উপর হামলা বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে সুনামগঞ্জে র‌্যালি ও আলোচনা সভা মধ্যনগরে কৃষকদলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত  সাফ জয়ী তিন ফুটবলারকে সাতক্ষীরায় লাল গণসংবর্ধনা  সালথায় স্কুলে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল প্রধান শিক্ষকের বকশীগঞ্জে নিলাখিয়া বিএনপি নেতাকে স্বপদে বহালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  চারঘাটের সাংবাদিকদের সাথে জেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় 

আগুনে পুড়ে ছাই হলো রুপালীর শেষ সম্বল

আল-হুদা মালী, সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪
  • ১৫৬ বার পঠিত

 

আল-হুদা মালী, সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

সাতক্ষীরার কলারোয়া মশা তাড়ানোর সাজাল থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় অসহায় রুপালী খাতুনের শেষ সম্বল দুধের গাভীটি পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। একই সাথে ঘরে থাকা আসবাবপত্র, খাওয়ার চাউলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রবিবার ( ৩ মার্চ ) মধ্য রাতে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের দামোদরকাঠি গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
রুপালী খাতুনের স্বামী আব্দুস সালাম দামোদরকাঠী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ভ্যান চালক। রুপালী খাতুন অন্যের বাড়ীতে কাজ করে অর্থ জমিয়ে একটি দুধের গাভী ক্রয় করেন। দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। তার দুইটি ছেলে রয়েছে। বড় ছেলে তানভীর শেখ, তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী ও ছোট ছেলে অনিক শেখ, সে স্থানীয় কলারোয়া কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। আকস্মিক অগ্নিকান্ডে দুধের গাভীটি সহ ঘরের জিনিসপত্র পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। রুপালি খাতুনের আহাজারিতে চোখের পানি ফেলছেন স্থানীয়রা।

এখন কি রান্না করে সন্তানদের মুখে দেবে, দুধের গাভীর উপর নির্ভর করে সংসার চলতো। এখন রান্না করার মত অবশিষ্ট চাউল নেই তার ঘরে। এমন কথা দুশ্চিন্তা ভরা কন্ঠে আহাজারি করছেন ক্ষতিগ্রস্ত রুপালি খাতুন।

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ রাসেল হোসেন বলেন, এই পরিবারটি এলাকার মধ্যে সব চেয়ে অসহায় আর এদের গতরাতে আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে গেছে। দুগ্ধ গাভীর যে দুধ হতো তা বিক্রি করে তার সংসার চালাত। সব মিলিয়ে তাদের প্রায় দুই থেকে তিন লক্ষ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে এখন এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা তাদের একার পক্ষে কোনরকম সম্ভব নয়। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা দরকার।

রুপালী খাতুন বলেন, রোববার মধ্যরাতে হঠাৎ দেখতে পায় রান্না ঘরসহ গোয়াল ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তখন আমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে পানি দিয়ে আগুন নিভানোর চেষ্টা করলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে না। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরে দেখা যায় আমার শখের শেষ সম্বল দুধের গাভীটি পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। গাভীর বাচ্চাটা শরীরের অধিকাংশ জায়গা পুড়ে গেছে। রান্নাঘরে কয়েক মাস খাওয়ার জন্য চাউল মজুদ করে রাখা ছিল সব পুড়ে গেছে। একই সাথে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গাভীটার দাম প্রায়ই দেড় লাখ টাকার কাছাকাছি ছিলো। সবমিলে আমার প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ক্ষতি হয়ে গেছে।

আহাজারি করে রুপালী খাতুন বলেন, দুধ বিক্রির টাকা থেকে সংসার চালাতাম এবং প্রতিবন্ধী ছেলে সহ ছোট ছেলেটার পড়ালেখা চালাতাম। শেষ সম্বলটুকু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এখন কি করে সংসার চালাবো এবং জীবিকা নির্বাহ করব সেটা নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছি। একদিন খাওয়ার মত চাউল বা খাদ্য সামগ্রী নেই ঘরে।

দামোদরকাটি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তাইজেল হোসেন বলেন, অসহায় রুপালীর বাড়িতে হঠাৎ আগুন লেগে তার শেষ সম্বল যা ছিল সব পুড়ে গেছে। এজন্য আমরা স্থানীয়ভাবে যথাসম্ভব চেষ্টা করছি এই পরিবারটি পাশে থাকার এবং সকলে যদি এগিয়ে আসে তাহলে অবশ্যই এই পরিবারটি দুশ্চিন্তায় সময় কাটাতে হবে না। সকলে মিলে সহযোগীতা করতে পারলে তারা আগের মতো ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।

হেলেতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রূপালী বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে অর্থ জমিয়ে একটি দুধের গাভী কিনেছিলো। গাভী থেকে যে অর্থ আসতো সেটা দিয়ে সংসার চালাতে ও ছেলের পড়াশুনা করাতো। কিন্তু আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে তার গাভীটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বিষয়টা নিয়ে সকলে শোকাহত। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা করবো।

কলারোয়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের ফায়ার ফাইটার মামুন হোসেন বলেন, সংবাদ পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণে আনলেও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত রূপালী খাতুনের রান্নাঘর ও গোয়ালঘর পুড়ে গেছে এবং তার একটা দুগ্ধ গরু পুড়ে মারা গেছে। ধারনা করা হচ্ছে এতে প্রায় তার তিন লাখ টাকার কাছাকাছি ক্ষতি হয়েছে।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি জানামাত্র ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে বিষয়টি দেখেছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ভাষ্য অনুযায়ী মশা তাড়ানোর আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।