উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
উল্লাপাড়া মডেল থানা পুলিশ সোমবার দুপুরে পৌর শহরের নবগ্রাম মহল্লা থেকে গলায় গামছা পেচানো এক পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম মোয়াজ্জেম হোসেন (৫৯)। তিনি মৃত জেকাত সরকারের ছেলে। মোয়াজ্জেম হোসেন উল্লাপাড়া মডেল থানায় কর্মরর্ত ছিলেন। তার চাকরির মেয়াদ ছিল মাত্র দু মাস। সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মোঃ আরিফুর রহমান মন্ডল, উল্লাপাড়া পুলিশ সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার অমৃত সূত্রধর, উল্লাপাড়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এনামুল হক ও জেলা সিআইডির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মোয়াজ্জেমের তিন ছেলে ও এক মেয়ে এদের মধ্যে বড় ছেলে মোশারফ তার স্ত্রীসহ কানাডায় থাকেন। অপর দুই ছেলে মাহবুব চলচিত্র সংস্থায় কাজ করেন এবং ছোট ছেলে প্রকৌশলী মসিউর রহমান ঢাকার বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। সবার ছোট মেয়ে মাহিমা আক্তার ঢাকার মিরপুর শহিদ স্মৃতি পুলিশ স্কুল এন্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
নিহত পুলিশ সদস্যের স্ত্রী হেনা পারভীন জানান, তিনি রোববার বাড়িতে ছিলেন না। শাহজাদপুরে তার এক স্বজনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তার বড় ছেলে মোশারফ কানাডা থেকে সকালে বার বার তার বাবাকে ফোন দিয়ে পাননি। পরে তার মাকে বিষয়টি জানান। হেনা পারভীন ছেলের ফোনের সংবাদের ভিত্তিতে শাহজাদপুর থেকে দুপুরে বাড়িতে ফিরে দেখতে পান ঘরের দরজা খোলা। তার স্বামী গলায় গামছা পেচানো রয়েছে এবং তিনি বিছানায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। ঘরের জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এসময় তিনি প্রতিবেশিদের ডাকেন এবং প্রতিবেশিরা উল্লাপাড়া থানা পুলিশকে খবর দেয়। তার ধারণা এই হত্যাকান্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত। তার স্বামীকে শাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে হেনা পারভীনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিকভাবে কিছু বলতে পারেননি। তবে তিনি জানান তার স্বামীর কাছে অনেক মানুষ প্রতিদিন টাকা ধার চাইতে আসতেন। স্বামী অনেককে দিতেন আবার অনেককে না করে দিতেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোন শত্রæতা সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু কারা টাকা চাইতে আসতেন বাড়ির ভেতরে থেকে তিনি তা জানতে পারেননি। তবে তিনি তার স্বামীর হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মোঃ মোঃ আরিফুর রহমান মন্ডল নিহত পুলিশ সদস্যের হত্যাকান্ডের ব্যাপরে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদেরকে জানান, ঘটনাটি ব্যক্তিগত শত্রæতা বা কোন সামাজিক কোন্দল থেকে সৃষ্টি হয়েছে কিনা তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। সঠিক কারণ না জানা পর্যন্ত তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। তবে তদন্ত শুরু হয়েছে।
উল্লাপাড়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এনামুল হক জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।