নিজেস্ব প্রতিনিধিঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলায় ছোট কুড়িপাইকা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুল হক ভূইয়ার পরিবার নানা ভাবে আজ নির্যাতনের স্বীকার হোচ্ছে নিজের স্বার্থপর লোভী ভ্রাতা এডভোকেট সিরাজুল হক ভূইয়ার মাধ্যমে। বিষয়টি আমাদেরপ্রতিনিধি সরজমিন খোজ নিতে গিয়ে উঠে আসে এক হৃদয়বিদারক ইতিহাস। উঠে আসে পারিবারিক সংস্কৃতক , ঐতিহ্যবাহী একান্নবর্তী পরিবারের একজন স্বার্থপর লোভী ব্যাক্তির লোভের তোপে পরে একান্নবর্তী পরিবারের পন্ড হওয়ার গল্প ।
বলছিলাম মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুল হক ভূইয়ার পরিবারের কথা । মরহুম মুক্তিযোদ্ধার পিতা সওদাগর মিয়া সীমান্ত এলাকায় বসবাস করেও তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে সন্তানদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলেন।
বাংলাদেশ প্রতিষ্টা হবার পূর্বে যখন পাকিস্তান হানাদার বাহিনী এদেশের মানুষের উপর নির্মম গণহত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়েছে তা দেখে নিজের পিতৃস্নেহ ভুলে বড় সন্তান শামসুল হক ভূইয়াকে পাঠিয়েছেন দেশ স্বাধীন করার লক্ষে মুক্তিযুদ্ধে। পিতার আদেশ মাথা পেতে নিয়ে দেশ কে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে স্বাধীনতা নিয়ে ঘরে ফেরার প্রত্যায়ে সেদিন যুদ্ধে গিয়েছিলেন মরহুম মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ভূইয়া।
মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়ে পিতার কাছে দেয়া পুত্রের ওয়াদা দেশ স্বাধীন করেই ঘরে ফিরতে হবে সেই স্বপ্ন নিয়ে সেদিন বাংলার স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন । সেদিনে পিতার কাছে দেয়া ওয়াদা রেখেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ভূইয়া, দেশকে স্বাধীন করে স্বাধীন বাঙ্গলার পতাকা হাতে বীরের বেশে গ্রামে এসেছিলেন শামসুল হক ভূইয়া।
পিতা সওদাগর মিয়া নিজের জ্ঞানের ভান্ডার পুঁজি করে যে আদর্শ ইমারত করেছেন, তার জীবদ্দশায় প্রমাণ রেখে গেছেন তিনি সু-সন্তান গড়ার কারিগর অবিশ্বাসসূচক অভিব্যক্তি,মরহুম সওদাগর মিয়ার ছিল দুই পুত্র সন্তান, বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামছুল হক ভূঁইয়া ছিলেন একজন সুনামধন্য ইঞ্জিনিয়ার একাধারে তিনি একজন বিচক্ষোণ সাংবাদিক। ছোট ছেলে সিরাজুল হক ভূঁইয়া আইন পেশা বেছে নেন ,তিনি বর্তমানে একজন কু-কৌশলী আইনজীবী হিসাবে পরিচিত ব্যাক্তি। যার স্বার্থলোভী কুনজরে আজ পন্ড ঐতিহ্যবাহী একান্নবর্তী একটি পরিবার, যার স্বার্থ রোশানলে আজ একজন স্বাধীনতা সঙ্গগ্রামীর পরিবার অতিষ্ঠ।
প্রবাদে আছে চোরায় না শুনে ধর্মের কাহিনী। ঠিক তেমনি একজন আদর্শিক পিতার সন্তান হয়েও লোভে পরে আজ সে উল্মাদ।বিগত দিনের পারিবারিক ঐতিহ্য তার লোভের কাছে তুচ্ছো। ভাইয়ের আমানত তার কাছে এখন শুধুই ভোগের বস্তু তা সে যে ভাবেই হোক ভোগ করেই যাবে এতে তাকে বাধা দেয়ার সাধ্য যেন নেই কারো।
পেশায় আইনজীবী হয়ে আইনের ফাক ফোকর আর কু-কৌশল এমন ভাবে রপ্ত করেছেন যে তার ধারের কাছে যাওয়াই যেন অসাধ্য।
মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ভূঁইয়ার পরিবার এবং সিরাজুল হক ভূঁইয়ার পরিবার দীর্ঘদিন একান্নবর্তী পরিবার, তাহারা কেউই বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না সামাজিক কোনো অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় উৎসবে তারা বাড়িতে মিলিত হতো অমায়িক মনোমধ্যে প্রফুল্লতা নিয়ে. তাই তাদের সম্বন্ধস্থাপ রূদ্ধ আঁটসাঁট করার জন্য, ২০১৬ সালে দুই পরিবারের সমন্বয় ৭২ শতক জমিতে চতুর্পাশে উঁচু দেয়াল নির্মাণ করেন এবং জায়গাটির মাঝামাঝি স্থানে বসবাসের জন্য একটি বিলাসবহুল পাকা বাড়ি (বিল্ডিং) নির্মাণ করেন। বাড়িটির এত উচু দেয়ালের বিষয় পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে আমরা জানতে পারি, প্রতিবেশীরা আইনজীবি সিরাজুল হক ভূঁইয়াকে অভিযাচন করেন চতুর্পাশে এত বড় উঁচু বাউন্ডারি দিলে অন্যান্য বাড়িতে রোদ এবং বাতাস পর্যাপ্ত হারে পাবে না, কিন্তু আইনজীবি সিরাজুল হক ভূঁইয়া প্রতিবেশী আবেদনটি গ্রহন না করে সকল প্রতিবেশীদের ডেকে জানান তাহার ছোট ভাতিজা মরহুম মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ভূঁইয়ার ছোট ছেলে এস এম এনামুল হক ভূঁইয়া (ফ্রান্সের স্থায়ী বাসিন্দা) বিদেশ থেকে অর্থের যোগান দিচ্ছে তার টাকায় বাড়ি এবং দেয়াল নির্মাণ করছি আমরা তাই তার কথার বাইরে যাবার সাধ্যনেই সেই এত বড় দেয়াল দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রতিবেশী সুত্রে আমরা আরো জানতে পারি বাড়ি এবং দেয়াল নির্মাণ এর পূর্বে মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ভূঁইয়ার পিতা মরহুম সওদাগর মিয়ার জীবদ্দশায় পশ্চিম পাশ হইতে প্রথম ৩৬ শতক জায়গা ছিল মূল বাড়ি এবং বাকি ৩৬ শতক ছিল বাগানবাড়ি যেখানে চাষাবাদ হত।
মূল বাড়ির পশ্চিম পাশে ছিল মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামছুল হক ভূঁইয়ার টিন এবং মাটির প্রস্তুত ঘর,দক্ষিণ পাশে ছিল অন্য আরেকটি ঘর,পূর্বপাশের সওদাগর মিয়া নিজ বসবাস করতেন।
কর্ম জীবনের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে সুকৌশলে চতুর্পার্শ্বে বাউন্ডারির মাধ্যমে এডভোকেট সিরাজুল হক ভূঁইয়া মূল বাড়ি এবং বাগানবাড়ি এক করে ফেলেন,এমনকি পশ্চিম পাশের অর্থাৎ (মূল বাড়ির) ৩৬ শতাংশ জায়গা দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন । পরবর্তীতে বিল্ডিং বাড়ি এবং দেয়াল নির্মাণ হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুল হক ভূঁইয়ার সন্তান এস,এম এনামুল হক ভূঁইয়া ফ্রান্স থেকে সপরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন কোরবানির ঈদ করার জন্য ।
ঈদের দুই দিন আগে রাত দুইটায় মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুল হক ভূঁইয়ার সন্তান এস,এম এনামুল হক ভূঁইয়া যখন তার পরিশ্রমের টাকায় গড়া বিল্ডিং এ প্রবেশের সময় চাচা সিরাজুল হক ভূঁইয়া বাধা প্রয়োগ করে এতে এনামুল হক ভূঁইয়া কারন জানতে চাইলে চাচা এডভোকেট সিরাজুল হক ভূঁইয়া জানান বিল্ডিং এবং দেয়াল বাবদ তোমাদের একটি টাকাও দেয়া নেই।রাত দুইটায় প্রতিবেশীগণ চাচা-ভাতিজার চেঁচামেচি শুনে এগিয়ে আসে
সিরাজুল হক ভূঁইয়া প্রতিবেশীদের সামনেই যখন বলতে থাকেন যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুল হক ভূইয়ার পরিবারের কারো টাকায় আমার এই বাড়ি হয়নি তাই আমার বাড়িতে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়াও হবেনা বরং পরামর্শ প্রদান করে বলেন, চাইলে মূলবাড়ী হইতে বাকি অবশিষ্ট ৩৬ শতক জায়গা একসাথে বাউন্ডারি দেওয়া হয়েছে এইজন্য যে ভাতিজারা মূলবাড়ি ছেড়ে দিয়ে পূর্বদিকে নতুন করে বাড়ি করে।
রাতের আধারে বিপাকে পরে যায় মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুল হক ভূইয়ার পরিবারের সদস্যরা এমত অবস্থায় প্রতিবেশীরাই সিরাজুল হক ভূঁইয়া কে জানান আপনিতো আমাদের বলেছিলেন এনামুল হকের বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থেই বাড়ি এবং দেয়াল নির্মাণ করছেন আপনারা তাই তার কথার বাইরে গিয়ে দেয়াল বানাতে পারবেন না তাহলে আজ কেন বলছেন এনামুলদের টাকাইয় বাড়ি বানাননি। তোপের মুখে পরে গিয়ে সিরাজুল কনো সদ উত্তর দিতে পারেনি।
উপরোক্ত বিষয় নিয়ে মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে হাজির রেখে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর সভাপতিত্বে পাঁচ দফা সালিশী বৈঠক করে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু সিরাজুল হক ভূঁইয়া কোনভাবেই সালিশী বৈঠকের সিদ্ধান্তটি আমলে নেইনি উল্টো সিরাজুল নিজেই বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় বিজ্ঞ আদালতে ০৩/২০২২ দেওয়ানী মামলা করেন. সিরাজুল হক ভূইয়া তাহার পিটিশনে লিখেন তার ভাতিজারা “সমাজের বিশৃংখল মানুষ,তারা সন্ত্রাসী,তাদের অগাধ টাকা,তাহাদের আইনের প্রতি নেই কোন শ্রদ্ধা,সিরাজুল হক ভূঁইয়া বাড়িতে স্থাপনাটি একা অর্থায়নে নির্মাণ করেছেন ইত্যাদি,তিনি আরও লিখেন যে সিরাজুল হক ভূঁইয়া সমাজের একজন সম্মানিত লোক তাহার ভাতিজারা তার ক্ষতি করতে পারে, শামসুল হক ভূঁইয়ার সন্তানরা যেন বাড়ির আশেপাশে না আসতে পারে বিজ্ঞ আদালত বরাবর বাড়িতে ভাতিজাদের প্রবেশ অধিকার স্থায়ীভাবে বন্ধের জন্য বিজ্ঞ আদালত বরাবর ডিক্রি জারি করার জন্য আবেদন পেশ করেন, তার এই লিখিত পিটিশনটি এর মাধ্যমে কৌশল এবং ইচ্ছা পরিষ্কার প্রস্ফুটিত হয়,ভাতিজাদের নামে যদি বাড়িতে প্রবেশ অধিকার নিষেধাজ্ঞা ডিগ্রী বিজ্ঞ আদালতের ধোকা দিয়ে বাগিয়ে আনা যায় জনাব সিরাজুল হক তখন মোট ৭২ শতক জায়গা একাই ভোগ দখল করতে পারবেন,একথা উল্লেখ্য যে মরহুম সওদাগর মিয়ার মৃত্যুর পর বাড়ি বন্টন ব্যতিরেকে তার বাবার নামে বৈদ্যুতিক মিটার টি অন্য ওয়ারিশদের না জানিয়ে সিরাজুল হক ভূঁইয়ার স্থলে সিরাজুল ইসলাম নামে নিজের করে নেয়. পরিশেষে উভয় পক্ষের শুনানির পর বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক বিজ্ঞ বিচারক মাননীয় জনাব মোহাম্মদ শাহেদুল আলম সহঃ জজ , সর্বশেষ ৪/৭/২০২২ ইং তারিখে যাচাই-বাছাই ও পর্যবেক্ষণ এবং তদন্ত অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন আকারে আদেশনামা প্রেরণ করেন।আদেশনায় উল্লেখিত ছিল উভয় পক্ষ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে বাদী কর্তৃক মামলায় উল্লেখিত নিষেধাজ্ঞা ভূমিতে সমহারে ভোগ দখল করতে পারবে ।
চতুর সিরাজুল হকের অভিযোগ বিজ্ঞ আদালত প্রত্যাখ্যান করে রায় দেয়ার পরেও , নিজের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় হেড়ে যাবার পর বিজ্ঞ আদালতের রায় অমান্য করে আইনের পেশায় থাকা কু-কৌশলী সিরাজুল অদ্যবদী বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ভূঁইয়ার পরিবারের নিকট বিল্ডিং এর চাবি না দিয়ে নানা ধরনের ভয় ভীতি ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানী চালিয়েই যাচ্ছে।
কিছুদিন পূর্বেও সিরাজুল হক তার জবর দখলে থাকা বিল্ডিং এর পশ্চিম পাশে টিনের ঘরে এস,এম এনামুল হক ভূঁইয়ারদের অবর্তমানে তাদের কেয়ারটেকার ইমরান হোসেন কে ঘর ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রথমে অর্থের প্রলোভন দেখায় এতে কাজ না হলে ইমরান হোসেন কে গালমন্দ সহ প্রাণ নাশের ভুমকি দেয় ।
কেয়ারটেকার ইমরান হোসেন বিষটি আখাউড়া থানায় অবগত করলে পুলিশ ইমরান হোসেনের অভিযোগের বিষটি সাধারণ ডায়েরি হিসাবে আমলে নেন যার জিডি নাম্বার- ১৬৯৩/২৫-০৫-২০২২ ইং।
তাতেও খান্ত দেন না সিরাজুল হক, মরহুম মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী শিরীন আক্তার সরকার তার স্বামীর ভিটায় প্রবেশের সময় সিরাজুল হক তাকেও বাজে ভাষায় গালমন্দ সহ হত্যার হুমকি দেয় এতে জনাবা শিরীন আক্তার সরকার গত ১৯/০৬/২০২২ ইং আখাউড়া থানায় অবগত করলে পুলিশ অভিযোগের বিষটি সাধারণ ডায়েরি হিসাবে আমলে নেন যার জিডি নাম্বার- ১২১৩।
নানা ভাবে হয়রানির পরেও মরহুম মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী শিরীন আক্তার সরকার ও তার সন্তানদের চাওয়া সকল কিছু ভুলে গিয়ে সমাধানে আসুক সিরাজুল হক , আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই আমরা আশাকরি আমাদের পরিবারের যে ঐতিহ্য আছে তা ফিরে আসুক ,সিরাজুল ইসলাম তার ভুল বুঝতে পারবে এই স্বপ্ন নিয়ে শত হয়রানির পরেও আশায় বুক বেধে আছেন মরহুম মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সকল সদস্যরা।
পরিবারের সদস্যপদের মতোই সমস্ত গ্রামবাসী তাদের সবাইকে খুব ভাল জানেন,এবং তাদের সবাইকে ভালবাসেন।সমস্ত আখাউড়া উপজেলার এই গ্রামবাসী চায় এডভোকেট সিরাজুল হক ভূঁইয়া তার ভুল ত্রুটি সংশোধন করে সমাধানের আশার রংধনু দিয়ে গ্রামবাসীদের আবৃত করবেন, দুই পরিবার মিলনের ঐক্যের অনুভূতি দিয়ে।