হাফিজুর রহমান,কালিগঞ্জ থেকে:
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে মাসোহারার মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার ঘোষের নেতৃত্বে সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলাম, রাসেল কবীর মিলে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয় ভবনেই গড়ে তুলেছে মাসে অর্ধ লক্ষ টাকার প্রাইভেট বাণিজ্য। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ৩৫০ এবং পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিকট হতে মাসিক ৫ শত টাকা নিয়ে বছরের পর বছর এই কোচিং প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে গেলেও দেখার কেউ নাই। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টার সময় সরে জমিনে গেলে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে প্রাইভেট বাণিজ্যের এমন ঘটনা দেখা যায়।
সাংবাদিক দেখে শিক্ষার্থীদের টাকা নেওয়ার বিষয়টি চেপে যেতে বললেও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সামনে অকপটে সব সত্য প্রকাশ করে দেয়।
বসন্তপুর গ্রামের অভিভাবক আব্বাস আলী, আব্দুল গফফার, মনিরুল, রুস্তম সহ একাধিক অভিভাবক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের জানায় বাগ বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ তৃতীয় চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের দুটি গ্রুপে ভাগ করে তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিকট হতে বাধ্যতামূলক সাড়ে ৩শ এবং পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিকট হতে মাসিক ৫শ টাকা নিয়ে প্রাইভেট পড়াতে বাধ্য করা হয়। শ্রেণীপতি ২টি গ্রুপে বিভক্ত করে এক একটি গ্রুপে ৪০/ ৫০ জন শিক্ষার্থীদের ১ ঘণ্টা করে ২ ভাগে পড়ানো হয়ে থাকে। প্রথম গ্রুপ সকাল ৭টা থেকে৮টা পর্যন্ত দ্বিতীয় গুরুপ ৮টা হতে ৯ টা পর্যন্ত পড়ানো হয়। সাড়ে ৯টায় স্কুল শুরু হওয়ার আগেই প্রাইভেট পড়া ছাত্রছাত্রী গুলো স্কুল ত্যাগ করে। এইভাবে শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্য এবং প্রাইভেট বাণিজ্যে করে স্কুলে নামমাত্র হাজিরা দিয়ে সময় পার করে চলে যায়। আর এইভাবে প্রতিমাসে প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার ঘোষের ছত্র ছায়ায় প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকার প্রাইভেট বাণিজ্য করে আসছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও স্কুল ভবনে উপজেলা জুড়ে জমে উঠেছে রমরমা প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য। কোচিং বা প্রাইভেট বাণিজ্যে অংশ না নিলে ওই শিক্ষার্থীর ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে অভিভাবকদের রাজি করাতে বাধ্য হয়। এ ব্যাপারে মাশোহারার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান স্কুলের মধ্যে কোচিং, প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি তার জানা নাই। আপনারা পত্রিকায় লিখলে আমরা ব্যবস্থা নেব। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার ঘোষ বিষয়টি পত্রিকায় না লেখালেখির জন্য অনুরোধ জানিয়ে জেলা পরিষদের সদস্য ফিরোজ কবীর কাজলকে জানালে তিনি বিষয়টি পত্রিকায় না দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিনি এর নিকট জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। জেনে বিষয়টির দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।