নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কালিগঞ্জের পল্লীতে আনসার ভিডিপির এক কর্মকর্তার কান্ডে রীতিমত চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হতবাক হয়েছেন উপজেলার বোদ্ধামহল। হৈ চৈ পড়েছে অফিস পাড়ায়।
জানা যায়, কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের শ্রীধরকাটি গ্রামের শেখ নজরুল ইসলামের ছেলে দিনমজুর শেখ আখেরুজ্জামানের রাজাহাঁস চুরি করে খেয়ে ফেলেছেন আনসার ভিডিপির কর্মকর্তা শেখ রুহুল আমিন। এতে করে তার বিরুদ্ধে বহু বিবাহেরও অভিযোগ সামনে এসেছে।
শেখ রুহুল আমিন একই এলাকার মৃত শেখ জেহের আলীর ছেলে। গতবছরের ২৯ আগস্ট সকাল ১০ টার দিকে বৈরী আবহাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতিবেশী দিনমজুর আখেরুজ্জামানের একটি রাজা হাঁস চুরি করে বাড়িতে থাকা মেয়ে জামাইদের খাওয়ান।
অন্যান্য দিনের ন্যায় কাজ থেকে বাড়ীতে ফিরে আখেরুজ্জামান ৪/৫ কেজি ওজনের একটি রাজহাঁস দেখতে না পেয়ে খুজতে থাকেন। একপর্যায়ে বেলা ৩ টার দিকে প্রতিবেশি শেখ রুহুলের দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার মেয়েকে তাদের রান্নাঘরে বসে রাজহাঁস কাটাকাটি করতে দেখেন। এসময় সন্দেহমূলকভাবে আখেরুজ্জামান রুহুল আমিনের জানতে চান – তিনি রাজহাঁস কোথা থেকে এনেছেন? তখন ভিডিপি কর্মকর্তা প্রভাবশালী রুহুল আমিন অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে আখেরুজ্জামানকে মারতে উদ্যত হন।
এ সময়ে দিশেহারা হয়ে আখেরুজ্জামান তার ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফারজানা শওকত (আফির) শরণাপন্ন হলে তিনি গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা পান। ইউপি সদস্য আফি দুই একদিনের মধ্যে শালিসের মাধ্যমে সমাধান করবেন বলে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। মুহূর্তের মধ্য বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে আখেরুজ্জামান ইউপি সদস্যের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি জানিয়ে দেন, বিষয়টি তার একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। পরিষদে অভিযোগ দেন। ইউপি সদস্যের কথামত আখেরুজ্জামান শেখ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দেয়। পরিষদে অভিযোগ দেয়ায় প্রভাবশালী রুহুল আমিন বিভিন্নভাবে আখেরুজ্জামানকে পুলিশ দিয়ে হয়রানী, মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ নানান হুমকি দিতে থাকে।
এদিকে, ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার জাহিদ আলম (রুহুল আমিনের ভাগ্নে) ও ৪ নং ওয়ার্ডের ফারজানা শওকত আফিকে ঘটনাস্থলে বসে মীমাংসা করার দায়িত্ব দেন। কিন্তু ভিডিপি কর্মকর্তা রুহুল আমিন জাহিদ মেম্বারের মামা হওয়ায় দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও গড়িমসি করে সময় ক্ষেপন করছেন। শালিস না হওয়ায় অসহায় আখেরুজ্জামান একবার চেয়ারম্যানের কাছে একবার আফি মেম্বারের কাছে ছুটেও কোন কূল কিনারা করতে পারেন নি। শেষমেষ অসহায় দিনমজুর আখেরুজ্জামান স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অভিযোগ পত্রটি নিজে দায়িত্বে তুলে নেন এবং ঘটনা সত্য হলেও বিচারের দাবি না করে এড়িয়ে যায় এমনটি বলেছেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য শেখ জাহিদ আলমের কাছে মুঠো ফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে ফোনটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ইউপি সদস্য ফারজানা শওকাত আফি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন বিষয়টি সত্য বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগও করেছিল আখেরুজ্জামান। পরবর্তীতে আখেরুজ্জামান কি কারনে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অভিযোগটি উঠিয়েছে এর সত্যতা আমি জানিনা।
ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোনটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।