মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগর কন্যা কুয়াকাটা। কুয়াকাটা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি মাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকন করা যায়।সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপালী ইউনিয়নে অবস্থিত।এটি পটুয়াখালীর শেষপ্রান্তে অবস্থিত।অনিন্দ্য সুন্দর সমুদ্র সৈকত ছাড়াও কুয়াকাটায় আছে বেড়ানোর মতো আরো নানান আকর্ষণ।
কুয়াকাটার বেলাভূমি বেশ পরিচ্ছন্ন।ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এ সৈকত থেকেই কেবল সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সৈকতের পূর্ব প্রান্তে গঙ্গামতির বাঁক থেকে সূর্যোদয় সবচেয়ে ভালো ভাবে দেখা যায়।আর সূর্যাস্ত দেখার উত্তম জায়গা হল কুয়াকাটার পশ্চিম সৈকত|এছাড়াও রয়েছে প্রকৃতি সৌন্দর্যে ঘেরা অনেক দর্শনীয় স্থান।পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এখানে ছুটে আসছেন অসংখ্য পর্যটক।সেই সাথে বেড়ে চলছে যানবাহনের চাপ।তাই নির্মিত করা হচ্ছে আধুনিক মানের বাস টার্মিনাল।
ইতোমধ্যে মাটি ভরাট,বাউন্ডারি দেয়াল,ড্রেন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়।চলছে ভবনের নির্মাণ ও ইট বিছানোর কাজ।জানা গেছে,২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বাস টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৩ কোটি ৬ লক্ষ টাকা ব্যয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি করছে।কুয়াকাটা পৌর এলাকার সীমানায় মহাসড়কের পাশেই তুলাতলীতে ছয় একর জমিতে এ বাস টার্মিনালটি নির্মিত হচ্ছে।
এ বছরের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু জমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে একটু সময় পেরিয়ে গেছে।তাই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।স্থানীয়রা জানান,আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র করার লক্ষে ২০১০ সালে কুয়াকাটাকে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়।এর পর দীর্ঘ এক যুগেও নির্মান হয়নি বাস টার্মিনাল।
ফলে দূর পাল্লার বাস গুলো সড়কের অর্ধেক জুড়ে পার্কিংয়ে থাকে।পর্যটকের ভিড় দেখা দিলেই যানজট পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করে।
টেলিযোগাযোগ অফিস থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।বর্তমানে ঢাকাগামী পরিবহন রাখা হচ্ছে পর্যটন হলিডে হোমসের সামনের মূল সড়কে। কুয়াকাটা-কলাপাড়া- পটুয়াখালী-বরিশালগামী বাস রাখা হয় চৌরাস্তার জিরো পয়েন্টে।
এছাড়া সাপ্তাহিক কিংবা অন্যান্য সরকারি ছুটি গুলোতে রাখাইন মহিলা মার্কেটের মাঠেও রাখা হয় যানবাহন। বাস টার্মিনাল না থাকায় এলোপাতাড়ি গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পরিবহনের টিকিট কাউন্টার। এতে অনেকটা শ্রীহীন হয়ে পড়ছে কুয়াকাটার পরিবেশ।
তবে বাস টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ হলে দীর্ঘদিনের একটি বড় সমস্যার লাঘব হবে এমনটাই জানিয়েছেন পর্যটক ও স্থানীয়রা।দূর পাল্লার একাধিক পরিবহন চালক জানান,নির্ধারিত কোনও বাসস্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তার উপরেই যাত্রী নামাতে হয়।
এছাড়া একই স্থানে তাদের পরিবহন রাখাতে হচ্ছে। কুয়াকাটা বিচ ট্যুরিজমের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন আনু বলেন,পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে পর্যটকরা প্রাইভেটকার,মাইক্রোবাস ও
মোটরসাইকেল নিয়ে কুয়াকাটায় ছুটে আসছেন। এছাড়া সাপ্তাহিক ও অন্যান্য সরকারি ছুটি
গুলোতে পর্যটকবাহী যানবাহনের বেশি চাপ থকে।
বাস টার্মিনালের অভাবে এসব বাস রাস্তার উপরই পাকিং করছে চালকরা।এতে শৃংঙ্খলাহীন হয়ে পড়ছে কুয়কাটার মূল সড়ক।আর দুর্ভোগে পড়ছে পর্যটকরা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস টার্মিনালের দাবী জানিয়েছেন এই পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ি।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো.আনোয়ার হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটায় ৬ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে আধুনিক মানের বাস টার্মিনাল।এতে প্রায় ৫০০ গাড়ি পার্কিং করা যাবে।এছাড়া যাত্রীদের জন্য যাত্রী ছাউনির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।বাস টার্মিনাল নির্মান কাজ শেষ হলে সমস্যার সমাধান ঘটবে।