মাসুমা জাহান, বরিশাল ব্যুরোঃ
ঈদুল আযহার দীর্ঘ ছুটিতে তৃতীয় দিনেও সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি পর্যটন কেন্দ্র সাগরকন্যা কুয়াকাটায় সমুদ্র সৈকতে লাখো পর্যটকের উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত। বহু প্রতিক্ষীত স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো ঈদের লম্বা ছুটি উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছে বহু পর্যটক। ফেরি ছাড়া কুয়াকাটা ভ্রমনে এবারের ঈদে প্রচুর পর্যটকের ভিড়। কুয়াকাটার একাধিক পর্যটন স্পট পর্যটকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠছে।
দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে আছে রাখাইনদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন প্রাগৈতিহাসিকা স্থাপত্য নিদর্শন। এরই মধ্যে ৮০/৯০ শতাংশ হোটেল মোটেল কক্ষ বুকিং হয়েছে, বুকিং করা পর্যটক ইতিমধ্যেই এসে পৌছেছে। দূব-দূরান্ত থেকে আগত এসব পর্যটকদের সবধরনের নিরাপত্তা ও সেবা দিতে প্রস্তুত উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পৌর কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীদের চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব ও পশ্চিমে মনোমুগ্ধকর ১৮ কিলোমিটার বেলাভূমি রয়েছে। পর্যটকরা এখানকার নারিকেল বিথী, ফয়েজ মিয়ার বাগান, জাতীয় উদ্যান (ইকোপার্ক), শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার ঘুরে দেখেন। এছাড়া কুয়াকাটার পশ্চিমে সমুদ্র পথে ফাতরার বন, গঙ্গামতি, লাল কাঁকড়ার চর, কাউয়ার চর, লেম্বুর চর, শুটকি পল্লীও ভ্রমণ-পিপাসুদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে। আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন কিংবা প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে প্রকৃতির মনোরম-নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করার পাশপাশি সাগর সৈকতে ছাতার নিচে বসে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ অবলোকনের সুযোগ হাতছাড়া করতে চাচ্ছেননা ভ্রমণ-পিপাসুরা। পদ্মা সেতুর দ্বার উম্মোচন হওয়ায় পর্যটকদের কুয়াকাটা ভ্রমনের সকল রেকর্ড এবার ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
যশোর থেকে থেকে ভ্রমনে আসা পর্যটক দম্পতি জেসমিন-ফারুক জানান, এর আগেও আমরা কুয়াকাটায় ভ্রমনে এসেছি, ৭ থেকে ৮টি ফেরী পার হতে হয়েছে ১০ থেকে ১২ঘন্টা ফেরী ঘাটে বসে থেকে, আজকে পদ্মা সেতু পার হয়ে আসলাম মাত্র ৬ ঘন্টায়, তাও আবার এসে হোটেলে রুম পেতে অনেক কষ্ট হয়েছে।
কুয়াকাটায় থ্রি স্টার মানের অভিজাত হোটেল সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলাসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আল-আমিন খান উজ্জল জানান, পর্যটক বরণে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ ধুয়ে মুছে প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে তাদের ভিলা এবং রিসোর্টের বেশির ভাগই আগ্রীম রুম বুকিং হয়ে গেছে। এখনও অনেক পর্যটকরা রুমের জন্য যোগাযোগ করছেন।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, পদ্মা সেতুৃ চালু হওয়ার ফলে এবার ঈদুল আযহার ছুটিতে অসংখ্যা পর্যটকের সমাগম হচ্ছে। ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট গুলোর ৮০ ভাগ রুম অগ্রীম বুকিং হয়ে গেছে।