মোঃ রাসেল সরকার,গজারিয়া প্রতিনিধিঃ
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাধীন গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্য বাউশিয়া বাস স্যান্ড থেকে পোড়াচক বাউশিয়া নদীর ঘাট পর্যন্ত গ্রামীণ সড়কের দেড় কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। শুরু থেকেই রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ রাস্তায় চূড়ান্ত কাজের পূর্বের ধাপগুলোতে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানায় এলাকাবাসী। দেড় কিলোমিটারের রাস্তার মধ্যে তিনটি স্থানে ২০০ মিটার করে, নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে গাইড ওয়াল তৈরি করে এবং আর সি সি ডালাইয়ের কাজ সম্পূর্ণ করে সিডিউলে নাম না থাকা রেডি মিক্স প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল দিয়ে,তারাহুরো করে রাতের আঁধারে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা ছাড়াই,এতে করে রাস্তার সংস্কার কাজে ব্যবহৃত মালামালের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন জাগে জনমনে,পুরো রাস্তার ভাঙা এবং নিচু স্থানে খুব নিম্নমানের ইট ও রাস্তার ভেঙে যাওয়া ইট, শুড়কি ব্যবহার করে রোলার করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলেও জনশ্রুতি শোনা যাচ্ছে। কিন্তু রাস্তা মেরামতের ইস্টিমেটে উল্লিখিত নির্মাণসামগ্রী ভেঙে যাওয়া কিম্বা নিচু স্থানে ব্যবহার করা হচ্ছে না। আবার রাস্তাটি ভেজাতে যে পরিমাণ পানি ব্যবহার করার কথা তাও করা হচ্ছে বা পরবর্তী হবে কি-না তা নিয়ে ও সন্দিহান। সরেজমিন রাস্তারটিতে গিয়ে উপরোক্ত অনিয়মগুলো চোখে পড়ে। শুধু তাই নয়,তারাহুরো করে অনিয়মের মাধ্যমে কাজ সম্পূর্ণ করতে গিয়ে রাস্তার উপর পল্লী বিদ্যুতের ব্যবহার অনুপযোগী পুরাতন তারের সংযোগ বিহীন খুঁটি অপসারণ না করেই আর সি সি ডালাই কাজ সম্পূর্ণ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এমএম ট্রেডার্স,কাজের সময় শ্রমিকদের সেফটির কথাও চিন্তা না করে কোন প্রকার সেফটি ইউনিফর্ম ছাড়াই কাজ করতে দেখা যায়, শুকনো রাস্তায় কাটব্যাকের কাজ করার নিয়ম থাকলেও তা কতটুকু নিয়ম মাফিক করা হচ্ছে তা প্রমান করে বৃষ্টি হওয়ার পর পর রাতের আঁধারে আলো বিহীন অন্ধকারে মধ্যে ভেজা এবং কাদাযুক্ত রাস্তায় রেডি মিক্সের ব্যবহার। গজারিয়া উপজেলা এলজিইডি অফিসের তদারকি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে রাস্তার কাজে অনিয়ম হলেও তাকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। ২০২১-২২ অর্থবছরে অনুমোদিত মেরামত ও সংরক্ষণ এর জন্য এই রাস্তাটির প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকার। এমএম ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাস্তা মেরামত ও সংরক্ষণ এ কাজটি পেয়ে দীর্ঘ কয়েক সময়ের পর কাজ শুরু করেন অর্থবছরের অনুমোদিত বাজেট থেকে বেশি মুনাফার আশায় রাস্তায় ব্যবহিত মাল মেট্রেসের দাম বৃদ্ধির অযুহাত দেখিয়ে একপ্রকার ইচ্ছে করেই ডিলে ডালা করেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে হাবিব মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রাস্তাটি মেরামতের শিডিউলে রেডি মিক্স প্রতিষ্ঠান সিসিসিএল এর নাম না থাকার পরও জেলা এক্সএন অফিস থেকে অনুমোদন পেয়ে ব্যবহার করছে বলে জানান, এবং ভাঙা কিম্বা নিচু অংশের জন্য বাজেট না থাকায় খরচ কমাতে এভাবেই করছি।
উপজেলা এলজিইডি অফিসের তদারকি কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, শিডিউলে না থাকায় রাস্তাটির ভাঙা কিংবা নিচু অংশের ব্যাপারে চাপ দিতে পারছি না। রাস্তার কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার সহ আনিত অভিযোগগুলোর কথা অস্বীকার করেন।
গজারিয়ার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইশতিয়াক আহমেদের সঙ্গে , রাস্তার কাজে অনিয়ম বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার জন্য কয়েকদফা চেষ্টা করা হয়,মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দিলেও ফোনের ওপাশ থেকে রেসপন্স পাওয়া যায়নি।
গ্রামীণ গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটির সংস্কার কাজে অনিয়ম মানতে নারাজ স্থানীয় এলাকাবাসী। নিয়ম অনুযায়ী রাস্তার কাজটি ভালোভাবে সম্পন্ন করবেন সংশ্লিষ্টরা এমনটাই প্রত্যাশা করেন।