কাজি বিপ্লব হাসান,টংগিবাডি প্রতিনিধিঃ
টংগিবাড়ী থানার বালিগাঁও বাজারে সংঘটিত ক্লুলেস ডাকাতি মামলার রহস্য উদঘাটন বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল মামুন জানান, গত ২৯ ডিসেম্বর টংগিবাড়ী থানার বালিগাঁও বাজারে দুর্র্ধষ ডাকাতির ঘটনায় বিশেষ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনাস্থলের ফুটেজ সংগ্রহ, গ্লোবাল লোকেশন ট্র্যাকিং এবং পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহের ডাকাতি মামলাসহ গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের বিষয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান শুরু করা হয়। ঘটনাস্থলের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে কয়েকজন ডাকাতকে সনাক্ত করা হয়। সনাক্তকৃত ডাকাতদের মধ্য থেকে অভিযুক্ত মোঃ শফিকুল ইসলাম (২৭), মোঃ ফরিদ হাওলাদার (৪৫), মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪২), আব্দুর সোবহান ঢালী (৩২), কামাল খান (৪১), মোঃ দেলোয়ার খলিফা (৩৭), মোঃ ফারুক খা (২১), মোঃ কালু হাওলাদার (৩৮), হিরন তালুকদার (৪৩) এবং মিলন খলিফা (৩১)কে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতেরা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে অন্যান্য ডাকাতদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(নিঃ) আল মামুন ডাকাত মোঃ শাহীন শেখ (২২), সিরাজুল মাদবর (২৮), মোঃ ইমরান মাদবর (২৬), সবুজ খা (৩০) এবং মোঃ শাহীন শিকদারদেরকে (৩২) গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত ডাকাতেরা ডাকাতির সাথে সম্পৃক্ততার বিষয় স্বীকার করে এবং গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের মধ্য থেকে মোঃ শাহীন শেখ (২২), সিরাজুল মাদবর (২৮), মোঃ ইমরান মাদবর (২৬), মোঃ ফরিদ হাওলাদার (৪৫), মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪২), আব্দুর সোবহান ঢালী (৩২), কামাল খান (৪১), মোঃ দেলোয়ার খলিফা (৩৭), মোঃ শাহীন শিকদার (৩২) এবং মোঃ কালু হাওলাদার (৩৮) বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। একইসাথে গ্রেফতারকৃত মোঃ শাহীন শেখ (২২) ও সিরাজুল মাদবর (২৮) এর হেফাজত হতে লুন্ঠিত নগদ ১০ হাজা টাকা এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১ টি তালা কাটার যন্ত্র, ২ টি শাবল, ২ টি লোহার রড ও ১ টি স্ক্রু ড্রাইভার উদ্ধার করা হয়। ইতোমধ্যে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত স্পীডবোট জব্দ করা হয়েছে।
নথিপত্র ও সিডিএমএস পর্যালোচনায় দেখা যায়, গ্রেফতারকৃত মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪২) এর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি অস্ত্রসহ ১০ টি মামলা, মোঃ শাহীন শেখ (২২) এর বিরুদ্ধে ০২ টি মামলা, মোঃ ইমরান মাদবর (২৬) এর বিরুদ্ধে ০২ টি মামলা, সবুজ খা (৩০) এর বিরুদ্ধে ০১ টি মামলা, মোঃ শফিকুল ইসলাম (২৭) এর বিরুদ্ধে ০২ টি মামলা, মোঃ ফরিদ হাওলাদার (৪৫) এর বিরুদ্ধে ০২ টি মামলা, আব্দুর সোবহান ঢালী (৩২) এর বিরুদ্ধে ০৫ টি মামলা, কামাল খান (৪১) এর বিরুদ্ধে ০১ টি মামলা, মোঃ দেলোয়ার খলিফা (৩৭) এর বিরুদ্ধে ০৫ টি মামলা, মোঃ ফারুক খা (২১) এর বিরুদ্ধে ০৩ টি মামলা, মোঃ শাহীন শিকদার (৩২) এর বিরুদ্ধে ০৫ টি মামলা, মোঃ কালু হাওলাদার (৩৮) এর বিরুদ্ধে ০৫ টি মামলা, হিরন তালুকদার (৪৩) এর বিরুদ্ধে ০২ টি মামলা এবং মিলন খলিফার (৩১) বিরুদ্ধে ১৩ টি মামলা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা সকলেই আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য এবং তারা বিভিন্ন সময় সংগঠিত হয়ে বা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের মধ্য থেকে ০৮ জন মাদারীপুরের, ০৬ জন শরিয়তপুরের এবং ০১ জন ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বাসিন্দা বলে জানা যায়। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে মামলার তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্তকরত পরবর্তীতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করা হবে। ডাকাতির ঘটনায় টংগিবাড়ী থানায় মামলা নং-২৩ তারিখ: ৩০-১২-২০২২খ্রি:, ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড রুজু করেন।