বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার উজলকুড় বাবুরহাট এলাকায় ৩টি সরকারি খাস খাল দখল করে মাছ চাষের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় বাবুরহাট উজলকুড়ের অর্ধশতাধীক গ্রামবাসি বাগেরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। দীর্ঘ ৭/৮ মাস গত হলেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগে জানাগেছে, গত ইংরেজী ৩০/০৫/২০২২ তারিখ ৫৩ জন জমির মালিক ও এলাকাবাসি বাগেরহাট জেলা প্রাশাসক বরাবর জলাবদ্ধতা নিরাসন ও ধান চাষের স্বার্থে উজলকুড় মৌজার ১নং খতিয়ানের ২০ ও ৬নং দাগের বাবুরাম খাল, ২নং দাগের দুলালা খাল, সিএস ১ খতিয়ানের ৯৬০, ৯৬৩ দাগের বিলের খাল সরকারি তফসিলভুক্ত খাল। ওই খালের জমির পরিমান প্রায় ১০ থেকে ১২ একর। উক্ত খালগুলো উপজেলার গাববুনিয়া (তেতুলিয়া) গ্রামের মৃত অলিয়ার রহমানের পুত্র আব্দুল মান্নানসহ আরও কয়েক জন দখলে নিয়ে বিভিন্ন লোকের কাছে লিজ দিয়েছেন। ভোলা নদীর সাথে সংযুক্ত খাল ৩টির গোড়ায় বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার ফলে এলাকাবাসি চরম বিপাকে পড়েছেন। তারা বর্ষ মৌসুমে ব্যপক জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় আমন ও বোরো চাষ মারাত্মক ব্যহত হচ্ছে। জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক আজিজুল ইসলাম প্রতিবেদন চেয়ে উপজেলা ভূমি অফিসকে চিঠি দেন। উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের প্রতিবেদনে দেখা যায় উক্ত খাল জমাভুক্ত ও ব্যক্তি নামে বি.আর.এস খতিয়ানে রেকর্ড হয়েছে। বসত বাড়ি এবং বিদ্যুৎ সংয়োগ দেওয়া আছে ও ওই জমির উপর ২৯১ (আর) ২১-২২ নং একটি মিস ১৪৪ ধারা মামলা রয়েছে। এলাকাবাসির অভিযোগ ওই খালের উপর কোন বসতবাড়ি বা বিদ্যুতের সংযোগ নেই এবং চাঁদপুরের জনৈক কুমারেশ বিশ্বাসের ১৪৪ ধারার কেস এর তথ্য দিয়ে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর তথ্য প্রদান করা হয়েছে। সিএস, এসএ তে জনসাধারণের ব্যবহার্য্য খাল থাকলেও বিআরএস জরিপে সেটি রেকর্ড হয়েছে জনৈক শ্যমল সিংহ রায় এর নামে। ওই জমি তিনি আব্দুল মান্নানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে শ্যমল সিংহ রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ওই খালগুলি জমাভূক্ত খাল। ওই খালের উপর আমার চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার রায় রয়েছে (দেওয়ানী ১৪২/১৯৮৬)। তবে রায়ে ওই জমি কারও কাছে বন্দোবস্তো দিতে পারবেন না মর্মে দেখা যায়। এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন আমি বিআরএস রেকর্ড পেয়েছি। বৈধভাবে আমি আব্দুল মান্নানের কাছে জমি বিক্রি করেছি।
এ বিষয়ে আব্দুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন শ্যামল সিংহ রায়ের কাছ থেকে ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিক আমি। ওই জমি আমি অন্য মানুষের কাছে লিজ দিয়েছি তবে ক্রয়কৃত জামিতে কোন খাস খাল আছে কিনা তা আমি জানিনা। একটি কুচক্রিমহল আমার ব্যবসায়ীক সুনাম নষ্ট করার জন্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে রামপাল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা শেখ সালাউদ্দীন দিপুর দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, আমি পূণঃরায় সরজমিন গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাা গ্রহন করব। সরকারের স্বার্থ থাকলে বাগেরহাটের জিপি মহোদয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনে ল্যান্ডসার্ভে ট্রাইব্যুনাল এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে খাল দখলমুক্ত করে সরকারের অনুকুলে নেওয়া হবে। এবিষয়ে কারও কোন গাফিলতি থাকলে সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।