মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল বরখাস্ত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার নতুন সভাপতি মুফতি সাহাদাৎ হোসেন লস্করপুরী সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম বাদল নির্বাচিত । ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠন সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন বহিষ্কার সউফো স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ সম্মাননা পাচ্ছেন যাঁরা সাতক্ষীরায় এসএটিভি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উইনরক ইন্টারন্যাশন্যালের বাস্তবায়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রুপান্তর যশোরে দুই দিনব্যাপী আশ্বাস প্রকল্পের কর্মশালা অনুষ্ঠিত আলীকদমে মোটরসাইকেল দূর্ঘটায় ৩ জন নিহত. গাইবান্ধায় মিথ্যা মামলা ও ছোট্ট বোনের নিরাপত্তা চেয়ে নির্যাতিত পরিবারের সংবাদ সম্মেলন ৭ নং মশাখালী ইউনিয়নের ১.২.৩ নং ওয়ার্ডে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠিত

ঝালকাঠিতে দুই বছর যাবৎ শিকলে বন্দী জীবন, অর্থাভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা।

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২
  • ৩৫০ বার পঠিত

 

মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরোঃ

পরিবারের সদস্যদের চোখের আড়াল হলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে মহাসড়কের মাঝ খানে দাঁড়িয়ে যান আবদুস সত্তার মিয়া (৮০)। দুর্ঘটনা এড়াতে তখন সড়কের গাড়ি গুলো থেমে যায়, লেগে যায় যানজট। অকারণেই মানুষকে বিরক্ত করেন, এমন অভিযোগ আসে তাঁর বিরুদ্ধে। এমন অস্বাভাবিক অবস্থা সামাল দিতে দিতে বেসামাল হয়ে পড়েছেন স্ত্রী আলেয়া বেগম (৬০। বাধ্য হয়ে তাই স্বামীর পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে রেখেছেন তিনি।

বছর দুয়েক আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন বৃদ্ধ আবদুস সাত্তার মিয়া। পায়ে শিকল পরানোর পর থেকে এখন তাঁর দিন কাটে ঘরের ছোট্ট জীর্ণ একটি কক্ষে। যেটুকু সামর্থ্য ছিল, তা দিয়ে সাত্তার মিয়াকে ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তবে অর্থের অভাবে ভালো কোনো চিকিৎসকের কাছে তাঁকে নিতে পারেননি তাঁরা।

আবদুস সাত্তার মিয়া ঝালকাঠি পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কিফইতনগর এলাকার বাসিন্দা। চার মেয়ে ও এক ছেলের জনক তিনি। এলাকায় ঘরামি (কাঠমিস্ত্রি) হিসেবে তিনি পরিচিত। কর্মজীবনে দুই শতাধিক টিনের ঘর তিনি বানিয়েছেন। তাঁর কারুকাজের বেশ সুখ্যাতি রয়েছে। যে মানুষটি এলাকার মানুষকে থাকার ঘর তৈরি করে দিতেন, তাঁকে এখন কাটাতে হচ্ছে শিকলবন্দী জীবন।

আবদুস সাত্তার মিয়ার স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী এলাকার কত মাইনষেরে সুন্দর সুন্দর ঘর বানাইয়া দিছে। অথচ শ্যাষ বয়সে তাঁকে শিকলবন্দী অবস্থায় ঘরে আটকাইয়া রাখতে অয়। এডা যে কত কষ্টের, হেয়া বুঝাইতে পারমু না।’ তিনি বলেন, দুই বছর আগে কাঠমিস্ত্রি সাত্তার মিয়া অসংলগ্ন আচরণ করতে শুরু করেন। বাড়ির পাশের গাবখান সেতুর ওপর উঠে বা মহাসড়কের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকতেন। স্বামীকে সুস্থ করতে ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ করেছেন, কিন্তু সুস্থ করে তুলতে পারেননি।

আবদুস সাত্তার-আলেয়া দম্পতির চার মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে রহমান (৩৫) ইটের ভাটায় কাজ করে কোনো মতে সংসার চালান। তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ে আছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে তাঁদের ছয়জনের সংসার।

আলেয়া বেগম বলেন, কোনো সহায় সম্পত্তি নেই তাঁদের। তিন শতাংশ জমির ওপর নির্মিত বসতঘরটিও জরাজীর্ণ। তাঁর স্বামী বয়স্ক ভাতা পান, তবে প্রতিবন্ধী ভাতা পান না। অভাবের সংসারে স্বামীর চিকিৎসা অনেক পরের বিষয়, ছয়জনের দুবেলা খাবার জোগাড়ই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তিনি সরকার ও সমাজের বিত্তবান ব্যাক্তিদের সহায়তা চেয়েছেন।

গতকাল রবিবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে আবদুস সাত্তার মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ একটি কক্ষে বিছানায় থাকেন তিনি। অনেক রাত তাঁর নির্ঘুম কাটে। প্রাকৃতিক কাজকর্ম বিছানাতেই সারতে হয়। স্ত্রী আলেয়া বেগমই সব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন।

কিফইতনগর এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, কাঠমিস্ত্রি সাত্তার মিয়া একসময় ভালো ঘর তৈরি করতেন। তবে এখন বেশ অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছেন। কারও আর্থিক সহায়তায় উন্নত চিকিৎসা পেলে তিনি হয়তো সুস্থ হয়ে উঠবেন।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।