সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বজ্রযোগিনী প্রক্তন ছাত্র ও অভিভাবক ফোরাম এর উপলক্ষে বৃত্তি প্রদান মুন্সীগঞ্জে টঙ্গীবাড়ীর দিঘীরপাড় ইউনিয়ন শাখার উদ্দ্যোগে গন সমাবেশ অনুষ্ঠিত সুজন এর সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কমিটি অনুমোদন কালিগঞ্জে ইকরা তা’লীমুল কুরআন নূরানী মাদ্রাসায় সুধী ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জে প্রত্যয় আইডিয়াল স্কুলে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত  তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে ব্যারিষ্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন  গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আইইউটির শিক্ষার্থীর মৃত্যু ৩ আহত ১৫ রংপুরে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের বিভাগীয় সমাবেশ কালিগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে ৩৪৭বোতল ফেন্সিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক  বোয়ালখালীতে মদ বিক্রেতা আটক

ধান শুকনো আর গোলায় ওঠাতে”হাওরের কৃষাণীদের অবদান বেশি,,

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩
  • ১৫৩ বার পঠিত

এস এ আখঞ্জী, তাহিরপুরঃ

মানব জাতির আদি পেশাই হচ্ছে কৃষি।  আর এই পেশার উৎপত্তি হচ্ছে নারীর হাত ধরেই। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার হাওর বেষ্টিত জনপদের মৌসুমী বোরো ধান কাটাই, মাইরাই শেষে, শুকনো কিংবা গোলায়,বীজ সংরক্ষণে কৃষাণীদের শ্রমের দৃশ্য উপলব্ধি করা যায়। এসবে নারী শ্রমের  অবদান  থাকে বেশি।প্রখর রৌদ্রকে অপেক্ষা করে ধান ঢেলে -লেড়ে অল্প সময়ে শুকানোর চেষ্টায়, গতরখাটনী খেটেখুটে, মাথার ঘাম পায়ে পেলে, গোলায় তুলতে বা বীজ সংরক্ষণে,সারা দিন ব্যস্ত সময় পাড় করেন। এসব কাজে কৃষককের চেয়ে কৃষাণীর শ্রমের অবদান অধিক । তবুও নারীরা পিছিয়ে রয়েছেন।

কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে আদির কথা ভুলে গিয়ে, সামাজিক স্বীকৃতি কমে গেলেও, নারীর কর্মের পরিধি কমে যায় নি। আবহমান কাল থেকে,নারী শ্রমিকরা হাওরের কৃষি চালিকাশক্তিকে, সচল রেখেছেন। এর ফলে কৃষি আজ প্রধান আয়ের উৎস হয়ে দাড়িয়েছে। বাস্তবতায়, গ্রাম- বাংলার নারীরা শ্রমশক্তি ৭০শতাংশ কৃষি বনায়ন খাতে জড়িয়ে আছে। কৃষি চাষাবাদের শুরু থেকে,  বীজতলায় রোপণ করা,বীজের কেক গজাতে, ধানের বীজ বস্তাবন্দি, পানিতে ভিজানো, পানি ঝড়ানো, খর-কুটো দিয়ে জাক, রৌদ্রে শুকানো, ছায়ার রেখে ঠান্ডা করানোর কাজ গুলো মনোযোগ সহকারে করে থাকেন তারা। কিছু কিছু  সম্প্রদায়ের নারীরা, বীজতলা থেকে শুরু করে,পাকা ধান কাটাই, মাইরাই, বীজ সংরক্ষণ, গোলায় তুলাসহ সবেই করে থাকেন তাঁরা। বিশেষ করে আদি সম্প্রদায়ের নারী উল্লেখযোগ্য।

সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার শনি,  পালই, মাটিয়ান হাওর পাড়ের তরং, শ্রীপুর, নয়াবন্দ ও  বড়দল, বালিয়াঘাট, ধুতমা  গ্রামের কৃষাণীরা,গৃহের সব কাজ কর্ম রেখে, ছেলে+মেয়ে নিয়ে খলার মধ্যে সারা দিন অতিবাহিত করে, কষ্টার্জিত এক ফসলী বোর ধান গোলায় তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করে। মনে শংকাও বিরাজ করে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের রোষানল,, বৃষ্টি- ঢলের জলে প্লাবিত হলে, নিমিষেই হারিয়ে যাবে রঙিন স্বপ্ন । তাই দ্রুত  সময়ের মধ্যে শেষ করতে, প্রখর রৌদ্রকে উপেক্ষা করে,  বস্তাবন্দি বা টুখড়ি ভর্তি ধান মাথায়  নিয়ে খলার মধ্যে ঢেলে দিয়েছেন, টানরি দিয়ে হালকা করে দ্রুত শুকাতে , কিছুক্ষণ পরপর পা দিয়ে নড়েচড়ে, ধানের পোং পায়ে  বেঁধে যাওয়ার পরও ব্যথ্যা নিয়ে, উপ্ত্ গরমে শরীর ঘামিয়ে থেমে যাননি, বিরামহীন গতিতে শ্রম দেন। এত সব করার পরও সমাজ ও সংসারে ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতিবন্ধকতার কারণে নারীর শ্রম শক্তির নেই সামাজিক স্বীকৃতি।

তরং গ্রামের সরুফা বেগম জানান, আমার  স্বামীর কর্মশক্তি হাড়িয়ে যাওয়ার পর থেকেই, পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব আমার উপরে চলে আসে। তিন ছেলে থাকলেও

তারা পৃথক হয়ে গেছে। ওরাও আবার,  আমার ঔরস্য জাত সন্তান নহে। যার ফলে

নিজেই শ্রম বিক্রয় করতে হচ্ছে।আত্মমর্যাদা বজায় রেখে, যখন যে কাজ পাই, তাই করে,যে আয় হয়, তা দিয়ে  স্বামী-স্ত্রী চলি।পাথর কয়লা, মাটি, বৈশাখী বোরোধান জারাই, উতরাই করে কাজ করি। তবে প্রাপ্য মজুরী পেলে কিছু টা সচ্ছলতা আসত। কারণ  আমরা যে নারী, ফলে প্রাপ্য মজুরী থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকি।

সাংবাদিক আহম্মদ কবির বলেন, বৈষম্যের কারণে নারী শ্রমিকরা প্রাপ্য মজুরী থেকে বঞ্চিত। এসব দূর করে তাদের কাজের সঠিক মূল্যায়ন করলে কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়বে, ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি দ্রুত গতিতে উন্নত শিখরে পৌচ্ছবে। তিনি আরও বলেন কৃষক -কৃষাণী দের কাজের মান সমান দৃষ্টিতে দেখলে, তার সাথে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়মিত ভাবে মতবিনিময় সভা সেমিনারে অংশগ্রহণ  করলে প্রান্তিক কৃষকসহ দেশ উপকৃত হবে।

উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কৃষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ একরাম হোসেন আখঞ্জী বলেন,, মানব জাতির আদি পেশা হচ্ছে কৃষি।  সভ্যতার সূচনা লগ্ন থেকে মানুষ প্রথমেই  মাটিতে ফসল চাষাবাদ শুরু করে। আর এই পেশা নারীর অবদানে। হাওরাঞ্চলের নারীরা বৈশাখী ফসলের পাকাঁ ধান গুলো শুকানো আর গোলায় ওঠাতে বেশি শ্রম দিয়ে থাকেন। সত্যি কথা বলতে, পুরুষের চেয়ে ও বেশি।  তবে সামাজিক  স্বীকৃতি কম পেয়ে থাকে তাঁরা। দেশের বিভিন্ন পেশায়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা যেভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন,  কৃষিখাতেও ঘটছে তাই। এধারার অবসান হোক এটাই আমার প্রত্যাশা।

তাহিরপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হাসান উর দৌলা বলেন, আমাদের হাওর পাড়ের নারীরা ধান শুকানো আর গোলায় ওঠানোর কাজে বেশি অবদান রাখেন, এছাড়াও গৃহস্থালির কাজসহ  সকল ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকা  চোখে পড়ার মতো।  এখন নারীরা প্রতিটি জায়গায় তাদের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।  যে সকল নারী শ্রমিক পুরুষদের  পাশাপাশি  সোনালী ফসল ধান কেটে  ঘরে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন,  তারা যেন ন্যয্য মজুরি পায়, সমাজের চোখে যেন  সম্মান পায়, সে দিকে সবার দৃষ্টি রাখলেই,

তারা উৎসাহিত হয়ে আর-ও বিশেষ কাজে

অবদান রাখবে আমার বিশ্বাস।  সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে এইটুকু কামনা করছি। তিনি আরও বলেন, এবার উপজেলায় ১৭হাজার ৪শত২০ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষাবাদ হয়েছে, এর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৬হাজার মেঃটন চাউল।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।