এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ এবং স্বচ্ছ হবে বলে আমি আশাবাদী। তবে কোনো দল একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবে কিনা বলা মুশকিল। কেনোনা দলীয়ভাবে নমিনেশন বাছাইয়ে ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হলে, সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত ও আদর্শবান নেতারা হয়তোবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবে। যেহেতু প্রায় ১৫ বছর যাবত একই নেতারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে, সে-দৃষ্টিকোন থেকে অন্যান্যরা দলীয় সিদ্ধান্ত কতোটুকু মেনে নিবে বলা বাহুল্য।
বিশেষ করে কিছু খাদ্যদ্রব্য ও জিনিস-পত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে সাধারণ মানুষ কিছুটা ক্ষোভের বশবতি হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট প্রদানে আগ্রহী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরেক দিকে বাঙালী জাতির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে।
আপনি জীবন ভর যতোই ভরণপোষণ দেন না কেনো, শুধু সামান্য একটু কথা কিংবা ভুলের কারণে আপনার জীবনের সকল অর্জন এক মুহুর্তেই ভুলে যাবে অথবা মুছে দেয়ার চেষ্টা করবে।
অন্যদিকে যতো বড় অপরাধীই হোকনা কেনো ধর্ষক কিংবা খুনি, সে যদি ভিকটিমের হাত-পা ধরে মাফ চায়, তাহলে আবেগের তাড়নায় অনেক ক্ষেত্রে তাকে কোনো রকম বিচার-বিবেচনা ছাড়াই ক্ষমা করে দেয়া হয়।
আবার দীর্ঘদিন যাবত কেউ কাউকে সাহায্য
সহযোগিতা করে যাচ্ছে, অথচ হঠাত কেউ এসে যদি একদিন পোলাও কিংবা বিরিয়ানি খাইয়ে ৫০০ শতো টাকা হাতে ধরিয়ে দেয়, তাহলেতো কোনো কথাই নাই মুহুর্তেই তার পরিবর্তন ঘটে যায়। বলে ওতো আমাকে জীবন ভর পঁচা পানতা খাইয়েছে। এইনা হলো আসল মানুষ যে আমাকে পোলাও-মাংস খাইয়েছে।
আসলে ঘর বলি, রাষ্ট্র বলি কিংবা জনগণ বলি সকল ক্ষেত্রে একই প্রবনতা বিরাজমান।
সমাজের প্রতিটি মানুষের মধ্যেই এ-ধারা বহমান। তাই সকলেই ভেবে চিন্তে কাজ করা উচিত বলে মনে করি। নতুবা এই ভুলের মাশুল সবাইকে বহন করতে হতে পারে।
আমাদের দেশের তথাকথিত কিছু নেতাদের যা ভাবা উচিত ১০ বছর আগে, উনারা ভাবেন তা’ ১০ বছর পরে। এতোদিনে দেশ ও জাতির বহু ক্ষতি সাধন হয়ে যায়। তবে এ ক্ষতি কিংবা ভুলের দায়ভার টুকু তাদের উপরেই বর্তাবে।
* দেশ কিংবা রাষ্ট্র কোনো দলের কিংবাা গোষ্ঠীর অথবা ব্যক্তি বিশেষের সম্পদ নয়। দেশ হচ্ছে জনসাধারণের এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও তাদের উপরেই বর্তায় এবং প্রত্যেকেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে সংবিধানের ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে।
একক কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা দল অথবা রাজনৈতিক ব্যক্তির বলার অধিকার নেই যে, একমাত্র উনাদেরই দায়িত্ব রাষ্ট্র পরিচালনার-অন্যকারো নেই।
এ-ধরণের কথা সংবিধান পরিপন্থী ।
কেনোনা সংবিধানে রয়েছে জনগণ রাষ্ট্রের মালিক এবং ক্ষমতার অধিকারী। তাই দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে সকলেরই অধিকার রয়েছে সংবিধান মোতাবেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলাদা-আলাদা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার এবং জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেশ ও জাতির সেবা করার। সেক্ষেত্রে কোনো দল, গোষ্ঠী কিংবা ব্যক্তির নির্বাাচনে অংশগ্রহণ করা অথবা না করার কোনো বাঁধা-বাধ্যকতার সুযোগ নেই। সেইটা একান্তই দলীয় এবং ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল।