শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎ  ‎ জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎ এমজেএফ বিশেষ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ঈদ উপহার বিতরণ কালিগঞ্জে সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাংবাদিক পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ কালিগঞ্জের নলতায় কৃষকদলের আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত টঙ্গীবাড়ীতে পবিত্র কুরআনের সবক ও পুরস্কার বিতরণী । ‎ জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদ (জিসপ) এর জেলা কমিটি অনুমোদন মুন্সীগঞ্জে হেরোইন সহ আটক মামলার আসামীর ৫ বছরের কারাদণ্ড কালিগঞ্জের মৌতলায় সেনাবাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান

বরিশালে ইলিশের বাজারে আগুন,নিম্ন আয়ের মানুষের পাতে উঠছে না ইলিশ

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ১৭৮ বার পঠিত

মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:

 

ইলিশের মৌসুম যাই যাই করছে।এর মধ্যে পাইকারি থেকে শুরু করে খুচরা বাজারে ইলিশের দাম বেশ চড়া। নিম্ন আয়ের মানুষেরা ইলিশ পাতে তুলতে পারছেন না। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হবে প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা,দেশে ইলিশ ধরা বন্ধ হয়ে যাবে ২২ দিনের জন্য। ডিম ছাড়ার পর এমনিতেই ইলিশ মেদহীন ও অপুষ্ট হয়ে যায়।এতে ইলিশের সেই স্বাদ আর থাকে না। ফলে সুস্বাদু ইলিশ খেতে চাইলে কিনতে হবে এই ১১ দিনের মধ্যেই।সেই আশা নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন মধ্য ও নিম্নবিত্ত ক্রেতারা,তবে দাম শুনেই ভ্রু কুঁচকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন অনেকে।

গতকাল সোমবার বরিশালের কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। বাজারে ইলিশের সরবরাহ ভালো থাকলেও দাম নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে।বাংলাবাজার ছিল ক্রেতায় ঠাসা। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী আবদুল গফুর এসেছিলেন ইলিশ কিনতে। তাঁর কাছে বিক্রেতা প্রতি কেজি ছোট ইলিশের দাম চাইলেন ৭০০ টাকা। এর চেয়ে একটু বড়, তবে ওজন এক কেজির নিচে সেগুলোর কেজি এক হাজার টাকা। এক কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে শুরু। চড়া দাম দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে আবদুল গফুর বলেন, ‘এবার মনে হয় কপালে ইলিশ জুটবে না।

আরেক ক্রেতা বেসরকারি কলেজ শিক্ষক মো. মাসুম ইলিশ বিক্রেতাকে প্রশ্ন করেন, বছরের অন্য সময় ইলিশের যে দাম, মৌসুমেও একই দাম কেন? বিক্রেতা কিছুটা বিরক্তির ভাব নিয়ে জবাব দিলেন, ‘আড়তে দাম বেশি হলে আমার করার কী আছে?

খোঁজ নিতে বরিশালের পোর্ট রোডের পাইকারি বাজারে গিয়ে জানা গেল, এবার মৌসুমের শুরু থেকেই ইলিশের বাজার চড়া যাচ্ছে।আর ভারতে রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার পর দাম আরও চড়েছে। বিক্রেতারা জানান,এবার ইলিশ ধরা পড়েছে কম। বৃষ্টিপাত দেরিতে আসায় এটা হয়েছে। আর এখন ইলিশ সরবরাহ বাড়লেও ভারতে রপ্তানি আর জ্বালানি তেলের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় মৌসুমে দাম কমেনি। কমার সম্ভাবনাও নেই।

আড়তদারেরা জানান, পোর্ট রোডের আড়তে গতকাল ৬০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৩৮ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়, কেজি পড়ে ৯৫০ টাকার মতো। এক কেজি আকারের ইলিশ বিক্রি হয় ৪৬ হাজার টাকা মণ দরে, কেজি দাঁড়ায় ১ হাজার ১৫০ টাকা। আর দেড় কেজি ওজনের ইলিশের দাম ছিল ৫৫ হাজার টাকা মণ,কেজি ১ হাজার ৩৭৫ টাকা।

দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মোকাম বরগুনার পাথরঘাটায় বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রেও দাম আরও কিছুটা বেশি। ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৩৪ থেকে ৩৬ হাজার টাকায়। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ এখানে পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৩৮ হাজার টাকায়। ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকায়। ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হয়েছে মণ ৪৫-৫০ হাজার টাকায়। এক কেজির ওপরে বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা মণ।

মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকার ভারতে ২ হাজার ৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সারা দেশের ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। এর মধ্যে বরিশালের ৯টি প্রতিষ্ঠান ৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করবে। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে থেকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ইলিশ ভারতে পাঠানো শুরু হয়। গতকাল রোববার পর্যন্ত বরিশাল থেকে ৬০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে। তবে এবার মাছের দাম বেঁধে দেওয়া হয়নি। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানি করা যাবে। আর ৭ অক্টোবর দেশে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর ইলিশ সীমিত আয়ের মানুষের নাগালে নাও পৌঁছাতে পারে। বরিশাল পোর্ট রোড আড়তদার সমিতির সভাপতি আশরাফ আলী বলেন, ভারতে রপ্তানির পাশাপাশি দেশের বাজারেও ইলিশের চাহিদা বেশি। তাই দাম এবার তেমন একটা কমার সম্ভাবনা নেই। তবে আমদানি গত দুদিনে অনেক বেড়েছে। এতে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে অর্থাৎ দাম কিছুটা কমতে পারে।

ইলিশের চড়া মূল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার প্রভাব গোটা দেশে রয়েছে। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ইলিশের দাম তেমন একটা বাড়েনি। বর্তমানে এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এর থেকে দাম কমে গেলে জেলে থেকে শুরু করে মৎস্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইলিশ ধরা যাবে আর ১০ দিন।এ সময় যদি বিপুল পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ে,তাহলেই কেবল সীমিত আয়ের মানুষের পাতে উঠতে পারে। নইলে অতৃপ্তি নিয়েই শেষ হবে এবার ইলিশের প্রধান মৌসুম।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।