মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
বরিশালের অন্যতম চিকিৎসা কেন্দ্র বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালের আউটডোর,ইনডোর এবং জরুরী বিভাগে ভর্তিসহ প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চারশ’ থেকে পাঁচশ’ রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেন।রোগীর তুলনায় পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স থাকলেও চরম সংকট এবং অব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পরিচ্ছন্নকর্মীরা নিজ দায়িত্বের বাইরে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করছেন।যারা রয়েছেন তাঁদের মধ্যেও হাসপাতাল পরিস্কার পরিচ্ছন রাখার কোন আগ্রহ নেই বললেই চলে।অপরদিকে বিড়ালের অবাধ চলাচলের কারণে চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী হচ্ছে ভর্তি রোগীদের খাবার।পরিস্কার নেই হাসপাতালের টয়লেট,রোগীদের ময়লা ফেলার বলসহ আশপাশের ড্রেন গুলো।
সূত্রমতে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রায় পাঁচ লাখ বাসিন্দা ও সদরের অধিকাংশ মানুষ সাধারণ চিকিৎসা গ্রহন করেন বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালে। এখানে সাতটি আবাসিক ওয়ার্ড,একটি জরুরী বিভাগ ও বর্হিবিভাগে প্রতিদিন গড়ে পাঁচশ’ রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন।
হাসপাতালের তথ্যানুযায়ী,বর্তমানে ২৫ জন চিকিৎসক ও ১৭০ জন নার্স (সেবিকা) কর্মরত রয়েছেন। সে অনুযায়ী হাসপাতালে পরিচ্ছন্ন কর্মীর পর্যাপ্ত পরিমান অভাব রয়েছে।এখানে ১৭ জন সরাসরি সরকারী রাজস্ব বিভাগ আর ১০ জন সরকার নির্ধারিত দেয়া প্রতিদিন হিসেবে বেতনে চাকরি করেন।এছাড়া চতুর্থ শ্রেনী পদে এ হাসপাতালে চাকরি নিয়ে দুইজন পরিসংখ্যান বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাকিরা দায়সারা ভাবে কাজ করছেন।ফলে হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপার রয়েছে শুন্যের কোঠায়।প্রতিদিন দুইবার হাসপাতালের মেঝে মোছার কথা থাকলেও শুধুমাত্র একবার ঝাড় দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেন কর্মচারিরা।
বিষয়টি নিয়ে ওয়ার্ড মাস্টার নূর হোসেন কোন বক্তব্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে,ভর্তি রোগীদের জন্য খাবার রান্না করার ঘরটি বিড়ালের আবাসিক স্থানে পরিণত হয়েছে। কখনো কখানো রান্না করা ভাত আর তরকারি বিড়ালে খাবার পর সেটি জোটে রোগীদের ভাগ্যে।পাশাপাশি হাসপাতালের চারপাশের ড্রেনেজ ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙ্গে পরেছে।রোগীদের ময়লা ফেলার পাত্রটি কোন দিনও ধোয়া হয়নি। অপরিস্কারে ভরা হাসপাতালের টয়লেট।সাধারণ রোগীরা পরিচ্ছন্নকর্মী এবং ওয়ার্ড মাস্টারের আইনের কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পরেছেন।
কর্মী সংকটের কথা জানিয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, এখানে ডাক্তারদেরও নিজেদের রুম নিজেদের ঝাড় দিতে হয়। নেই কোন অফিস সহকারি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একাধিকবার অবহিত করেও কোন সুফল মেলেনি।