মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরোঃ
বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় রুবি আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই রুবি আক্তারের স্বামী স্বপন বেপারী পলাতক রয়েছেন।নিহতের স্বজনদের দাবি, স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় রুবি আক্তারকে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নে বড়াকোঠা গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে উজিরপুর থানা পুলিশ।
নিহত রুবি আক্তার বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড গ্রামের বজলু হাওলাদারের মেয়ে। বড়াকোঠা গ্রামের স্বপন বেপারীর সঙ্গে ১৩ বছর আগে রুবি আক্তারের বিয়ে হয়। স্বপন বেপারী ও রুবি আক্তারের সংসারে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে।
রুবি আক্তারের ভাই মো. রাসেল জানান, তার দুলাভাই স্বপন বেপারীর সঙ্গে আরেক মেয়ের পরকীয়া সম্পর্ক চলে আসছিলো। বিষয়টি জানার পর স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেন তার বোন রুবি। এনিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিলো। উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্বপন বেপারীকে অন্য মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
মঙ্গলবার রাতে স্বামী স্বপনের মোবাইলে এক মেয়ের অশ্লীল ছবি দেখতে পান রুবি। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে রুবির বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন স্বপন বেপারী।
রাসেল বলেন, মঙ্গলবার রাতে রুবি ফোন দিয়ে ছবির বিষয়টি জানিয়ে ছিলো। বাবা-মায়ের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিলো। বাবা-মা ঘুমিয়ে পড়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। আজ ভোরে ভাগ্নে রাহাত ফোন দিয়ে জানায় মারধর করে তার মাকে বাবা মেরে ফেলেছে। এরপর স্থানীয় লোকজন নিয়ে ওই বাড়িতে গেলে বোন রুবির মৃতদেহ দেখতে পাই। দুলাভাই স্বপন বেপারী লোকজন দেখে পালিয়ে যান।
রুবির বাবা বজলু হাওলাদার জানান, পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় আমার মেয়েকে স্বপন হত্যা করেছে। এরপর ঘরের আড়ার সঙ্গে মৃতদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে নাটক সাজিয়েছে। আমি এ ঘটনায় স্বপনের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছি।
স্বপন বেপারীর বাবা আকবর বেপারী জানান, স্বপনের সঙ্গে রাতে রুবির ঝগড়া হয়েছিল। এ কারণে হয়তো অভিমান করে রুবি ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাকে কেউ হত্যা করেনি। ভয়ে স্বপন বাড়ি থেকে পালিয়েছে।
উজিরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিন উদ্দিন জানান, স্বজনদের অভিযোগ থাকায় মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে হত্যা না আত্মহত্যা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।