মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
বরিশালে ইলিশ সংরক্ষণ এবং নিধনে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ও নদী গুলোতে জেলেরা মাছ ধরছেন।এখন পর্যন্ত ১২০ জেলেকে ১ বছর করে সাজা দেয়া হলেও থামছেই না মাছ ধরা।
পুলিশ বলছে, নদীতে নামা জেলেদের বেশিরভাগই বেপরোয়া।এ ছাড়া নারী ও শিশুদের মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।মা ইলিশ সংরক্ষণে ও প্রজনন মৌসুমে ইলিশের বংশ বিস্তারের জন্য বর্তমানে মাছ আহরণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে।
এর সত্ত্বেও বরিশালের মেঘনা নদীতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে নামছেন জেলেরা আর নৌপুলিশের ধাওয়া খেলে চেষ্টা করছেন পালানোর। তবে নাছোড়বান্দা পুলিশ যখন সব দিক থেকে ঘিরে ফেলে তারপর বাঁচার জন্য জেলেরা ঝাঁপিয়ে পড়েন নদীতে।
এরপরও মেলে না শেষ রক্ষা।পুলিশও নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে জেলেদের আটক করে।সেই সঙ্গে জব্দ করা হয় মাছ ও জাল।শুধু মেঘনা নদী নয়, মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর বরিশালের বিভিন্ন নদীতেই প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটছে।
আটক হওয়া জেলেরা জানান, অপরাধ জেনেও নিতান্ত অভাবের দায়ে নদীতে মাছ ধরতে নেমেছেন তারা। আটক হওয়া এক জেলে বলেন, আমরা অনেক অভাবে আছি। তাই মাছ ধরতে এসেছি। ২০ কেজি চালে তো হয় না। আমাদের পরিবারের মানুষ বেশি।
এদিকে নৌপুলিশ বলছে, নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ ধরতে নামা বেশিরভাগ জেলেই বেপরোয়া। এ ছাড়া নারী ও শিশুদের দিয়েও নদীতে মাছ ধরানো হয়। এ ছাড়া অভিযান চলাকালে জেলেদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলারও অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে এক নৌপুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জেলেরা আমাদের বিভিন্ন ভাবে আক্রমণ করে। যেমন চাকতি মারে, অনেক সময়ে আগুনের গোলাও আমাদের দিকে ছুড়ে মারে। অভিযান শুরুর পর এখন পর্যন্ত নৌপুলিশের বরিশাল অঞ্চলের ৫টি জেলায় ১২০ জেলেকে আটক করা হয়েছে।
আটক হওয়া জেলেদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ বছর করে সাজা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮টি মামলা হয়েছে। পাশাপাশি দেড় কোটি মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৭০০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ হয়েছে।
বরিশাল নৌপুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুয়ায়ুন কবির বলেন, মাছ ধরার জন্য জীবন দিয়ে দেবে, তারপরও মাছ ধরা ছাড়বে না। আমাদের লোক কত কষ্ট করে তাদের ধরছে।
এদিকে মা ইলিশ সংরক্ষণে টানা ২২ দিনের অভিযানে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে ঢাকার নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পুলিশ সুপার ড. আ.ক.ম. আকতারুজ্জামান বসুনিয়া বলেন, প্রত্যেকটি ফাঁড়িতে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা রিকুইজিশন দিয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স থেকে জনবল বাড়িয়েছি।
বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি এবং বরগুনার ৫ জেলা মিলিয়ে নৌপুলিশের বরিশাল অঞ্চল গঠিত। ১৫টি স্থায়ী ও ৪টি অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ১৯টি ক্যাম্পের প্রায় ৫০০ নৌপুলিশের সদস্য ২২ দিনের অভিযান সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে|