মৌসুমী দাস, স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজশাহী জেলার বাঘা থানা পুলিশ কর্তৃক আনিসুর রহমান কে খুনের সাথে জড়িত প্রধান আসামি রায়হান আলী (৩৫) গ্রেপ্তার হয়েছে।
অভিযুক্ত রায়হান আলী রাজশাহী জেলার বাঘা থানার মনিগ্রামের মৃত সাদেক আলীর পূত্র। নিহত আনিসুর রহমান একউ উপজেলার তুলশিপুর গ্রামের মৃত শামসুল মোল্লার ছেলে।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, বাক প্রতিবন্দ্বী আনিসুর রহমান (৪৪) গত ২২ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. বিকাল ৪:০০ টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে ঘরে না ফিরলে পরদিন সকাল ৮:৩০ টায় পরিবারের সদস্যগণ বাঘার মনিগ্রামের বজলু মাস্টারের আমবাগানে তার জবাইকৃত লাশের সন্ধান পান। নিহতের ভায়রা ভাই রায়হান আলী হত্যার খবরটি পুলিশকে জানায়।
সংবাদ প্রাপ্তির দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুনের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্রাইমসিন পর্যালোচনা করে। মৃত্যুর রহস্য উৎঘাটনে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সব বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা হয়। তবে রহস্যের জট কোনো ভাবেই আবৃত হয় না। ক্লুলেস খুনের ঘটনায় আসামি থেকে যায় অধরা।
মৃতের স্ত্রী পারভিন বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তবে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) খায়রুল আলম, চারঘাট সার্কেল এএসপি প্রণব কুমার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বজলুর রশীদ প্রথাগত উপায়ে রায়হান আলীকে জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা ধরে এগিয়ে যেতেই রহস্যের উন্মীলন হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রায়হান আলী স্বীকার করে আনিসুর খুনের ঘটনায় সে নিজেই পরিকল্পনাকারী ও সেই হত্যাকারী।
এরপরই পুলিশ অভিযুক্ত রায়হান আলীকে গত ২৪ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করে। আনিসুর খুনের ঘটনায় রায়হান আলী স্বত:প্রণোদিত হয়ে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় নিজের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
গত চারমাস পূর্বে রাজশাহীর বাঘার গাক নামের একটি বেসরকারি সংস্থা হতে নিহত আনিসুর ও তার স্ত্রী পারভিন বেগমের নামে অভিযুক্ত রায়হান নব্বই হাজার টাকার ঋণ নিয়ে তা শোধ করতে চরম মানসিক চাপের মধ্যে পড়ে। এরমধ্যে অতিশয় দারিদ্র্যে আনিসুরের স্ত্রী পারভিন অভিযুক্তের নিকট পাঁচ হাজার টাকা ধার চাইলে সে আরও হতাশায় নিমজ্জিত হয়।
অভিযুক্ত মনে করেছিল যৌথভাবে ঋণ গ্রহণকারী দুইজনের মধ্যে একজন মৃত্যুকরণ করলে সেই ঋণ পরিশোধ করতে হয় না। এমন গুজবে বশবর্তী হয়ে রায়হান আলী বাঘা বাজার হতে একটি চাকু ক্রয় করে ভায়রা ভাই আনিসুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী গত ২২ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. রায়হান আলী বজলু মাস্টারের আমবাগানে আনিসুর রহমান ঠান্ডামাথায় খুন করে লাশ ফেলে তার নিজ বাড়িতে অবস্থান করে।