সুদর্শন চক্রবর্তী, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
একটি মানবশিশু অপার সম্ভবনা নিয়ে পৃথিবীর বুকে ভূমিষ্ট হয়। শিশুটি ধীরে ধীরে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার অন্তরের ঘুমন্ত স্বপ্নগুলোও আকাশে পাখা মেলতে শুরু করে। একটি আলোকিত মানবসন্তান শুধু নির্দিষ্ট কোন পরিবার কিংবা রাষ্ট্রেরই সম্পদ নয়, সারা পৃথিবীর জন্যই সে অমূল্য ঐশ্বর্য। একরাশ রঙিন স্বপ্ন আর দুর্মর সাহস নিয়ে ২০০৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাংগা উপজেলার কাউলীবেড়া গ্রামের ‘হাজেরা স্বর্গে’ জন্মেছিলো এক অনুপম দেবশিশু মোঃ ওয়াকিব হাসান আবেশ।
পিতা মোঃ ওয়াহিদুজ জামান ও মাতা মৌসুমী পারভীনের প্রথম সন্তান। জন্মমুহুর্তেই তাকে দেখার জন্য শত শত মানুষ ভিড় জমিয়েছিল ‘হাজেরা স্বর্গে’। মাত্র ১৬ বছরের এই টগবগে কিশোর যখন চিরবিদায় নিয়ে অকালে মাতৃকোল থেকে মাটির কোলে চিরশয্যা গ্রহণ করে সেদিনও হাজার হাজার মানুষের চঞ্চল চোখ অশ্রুর সমুদ্রে পরিণত হয়।
আবেশ খুবই বিনয়ী ও মেধাবী ছিল। গ্রামের প্রতিটি মানুষের সঙ্গেই অন্তরের যোগ ছিল। শিকার করতে সে খুব পছন্দ করতো। হাতের নিশানা ছিল একেবারেই অব্যর্থ। স্কুলের পড়াশোনা, নিয়মিত শরীরচর্চা ও খেলাধুলার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে সে ছিল খুবই তৎপর। আবেশ বয়সে ছোট হলেও শরীরের আয়তনে ও মানসিক বুদ্ধিতে বেশ অগ্রসর ছিল। তার উচ্চতা ছিল ৬ ফিট ২ ইঞ্চি।
উল্লেখ্য, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে সে ঢাকার দক্ষিণখান থানাধীন দক্ষিণ মোল্লারটেক বড়চাচা মোঃ শহিদুল ইসলামের বাসায় বেড়াতে যায়, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ খ্রিস্টাব্দে দুপুর ১২ টার দিকে বড়চাচার নির্মাণাধীন ১০ তলা বিল্ডিংয়ের অরক্ষিত ছাদ থেকে পড়ে তার অকাল মৃত্যু হয়। আবেশের অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে আসে পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে। আকস্মিক শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় তার শিক্ষক ও সহপাঠীবৃন্দ।
আজ বাদ মাগরিব মরহুমের নামে মোটরা লালান আনন্দধাম আবেশ মঞ্চে, দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মরহুমের বাবা মোঃ ওয়াহিদুজ জামান এর আয়োজনে গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা (৪ সেপ্টেম্বর) কাউলীবেড়ার নিজ বাড়ীর জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও কোরআন খানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।