সুনামগঞ্জের অন্তর্ভুক্ত মধ্যনগর উপজেলার সীমান্তে চোরাকারবারির সিন্ডিকেট এখন তোঙ্গে, ধরাবাঁধা ছাড়াই প্রকাশ্যে ভারত থেকে অবাধে অনায়াসে আনছে গরু মাদক দ্রব্য সহ বিভিন্ন জাতের পণ্য, প্রশাসন দেখেও না দেখার করছে বান। এলাকার উত্তর বংশীকুণ্ডা ইউনিয়নের মহেষখলা, কাইতাকোনা, কড়ইবাড়ী, কড়ই চড়া, ঘিলাগড়া, বাঙ্গালভিটা সহ সীমান্তের বিভিন্ন চোরাইপথে আনছে ভারতীয় অবৈধ মালামাল। রাতের অন্ধকারে চোরাকারবারিরা প্রতিনিয়ত ভারতের মেঘালয় পাহাড় পাড়ি দিয়ে, ভারতীয় শত শত গরু এবং সাথে ইয়াবা, গাঁজা, মদ,বিভিন্ন জাতের মাদক দ্রব্য সহ বিভিন্ন পণ্য পাচার করে, অবাধে প্রবেশ করছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সীমান্তবর্তি প্রায় ১২ টি গ্রামের একটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র স্থানীয় প্রশাসন ও কিছু অসাধু স্হানীয় নব্য হলুদ সাংবাদিককে ম্যানেজ করে, এসব অবৈধ পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে । চোরাকারবারির নেতা মোঃ করিম ও লতিফ মিয়ার সাথে কথা বললে তারা জানান আমরা কয়েকজন কতিত সাংবাদিককে মাসোয়ারা দিয়ে এ অবৈধ ব্যবসা করছি।
আরও জানা গেছে, ভারতীয় গরু পাচারকারী চক্রটি প্রতিদিন গভীর রাতে গরু সহ বিভিন্ন জাতের মাদক দ্রব্য চোরাই পথে বাধাগ্রস্ত ছাড়াই নামিয়ে আনছে দেদারসে ।
মহেষখলা বাজার ও দাতিয়াপাড়া নতুন বাজার সহ বিভিন্ন গরুর হাটে এসব ভারতীয় চোরাই গরু বিক্রি করছে অসাধু চোরাই ব্যবসায়ীরা। মহিষখলা ও দাতিয়াপাড়া গরুর হাটের ইজারাদার কতৃক ভূয়া রশিদ দিয়ে কালোবাজারিদের সহযোগিতা করেছে । ভারতীয় অবৈধ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কালোবাজারী গরু ও মাদক ব্যবসায়ীরা হচ্ছে, উত্তর বংশীকুণ্ডা ইউপির মহেষখলা গ্রামের এরশাদ মিয়া, আলমগীর মিয়া, সাদ্দাম, আমিরুল ইসলাম, ফারুক মিয়া, নজরুল।
গোলগাঁও গ্রামের, হাসমত, রুবেল মিয়া, শরিফ মিয়া। মাটিয়ারবন গ্রামের কুরফান আলী, লতিফ, আফাজ, আছব আলী, জব্বার, আয়নাল, শফিকুল, বাসেদ, মিস্টার মিয়া, মজিদ, হারিছ উদ্দিন, সুলতান মিয়া, নবাবপুর গ্রামের মোঃ করিম মিয়া, শালমান শা,রাজন মিয়া,অন্তপুর গ্রামের দিলু মিয়া ও লক্ষ্মীপুর গ্রামের করজুল ইসলাম, কড়ই বাড়ির গ্রামের আতাবুর, গুক্কুর, খোকন, পাশবর্তি নেত্রকোনা জেলার রংচাতি ইউনিয়নের চইতা গ্রামের রহিম মেম্বার, তার বড় ভাই লাল মিয়া, রংপুর গ্রামের নয়ন মিয়া, আবুল মিয়া সহ সংঘবদ্ধ চক্রটি এখন সক্রিয় কালোবাজারি তালিকায় । তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে খুব দাপটের সঙ্গে ভারতীয় গরু পাচার করছে। তাদের নিয়োজিত ২০/২৫ জনের একটি দল সার্বক্ষণিক পাচার কাজে নিয়োজিত রয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
এ চক্রটি রাতের অন্ধকারে গরু ও বিভিন্ন জাতের মাদক, দেশের গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, করিম মিয়া, এরশাদ মিয়া, আলমগীর, কালু মিয়া ওরফে আমিনুল এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকজন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় গরু ও মাদক সহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করছে। শুধু তাই নয়, ভারতীয় মাদক এবং হুন্ডি ব্যবসাও করেছেন। তাদের ব্যবসাও জমজমাট বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
উত্তর বংশীকুণ্ডা ইউপি জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সে বলেন, আমাদের বর্ডার এলাকায় গরিব অসহায় লোকজন হয়তো কিছু টুকটাক ব্যবসা করলেও করতে পারে, তবে ব্যাপকভাবে নয়। তারপরও ভারতীয় বিএসএফ, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) টহল অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও চোরাইপথের কিছু পণ্য আসতেও পারে, তবে আমার জানার বাইরে।
এ বিষয়ে বিজিবির মাটিয়াবন ক্যাম্পের ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা নায়েক সুবেদার আব্দুল খালেকের ব্যবহৃত সরকারি ০১৭৬৯৬১৩১২৩ নাম্বার মুঠো ফোন করা হলে তিনি প্রতিবেদকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি নয় এবং উর্ধতন কৃতপক্ষ অজুহাত দেখিয়ে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
এ বিষয়ে বিজিবির বাঙ্গালভিটা ক্যাম্পের ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা নায়েক সুবেদারের ব্যবহৃত সরকারি ০১৭৬৯৬১৩১২৪ নাম্বার মুঠো ফোনে একাধিকবার কল করেও তিনি ফোনটি না ধরায় তাঁর সাথে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বিজিবির মহেনপুর ক্যাম্পের ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা নায়েক সুবেদার মোঃ রাজ্জাক আমাদের সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা তৎপর আছি এবং আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি চোরাই কারবারিদেরকে গ্রেপ্তার করার।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবির) ২৮ সুনামগঞ্জের অধিনায়ক মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে খতিয়ে দেখবেন।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবির) ৩১ নেত্রকোনার অধিনায়ক এ, এস, এম জাকারিয়া বলেন, সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিজিবি জোরালো ভূমিকা পালন করছে এবং পাচারকারী গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।