মোঃ রায়হান আলী নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাদ দিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর ও সীল জাল করে এমপিওর জন্য কাগজপত্র প্রেরণের অভিযোগ উঠেছে। সদ্য এমপিওভুক্ত রামরায়পুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার সহ সুপার রবিউল হাসান, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নেফাউর রহমানসহ কয়েকজন সদস্যের যোগসাজসে বেআইনি ভাবে এমপিওর জন্য তাদের মনোনিত শিক্ষক-কর্মচারীর ভুয়া কাগজপত্র প্রেরণ করেন। এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার আখতারম্নজ্জামান, প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সদস্যবৃন্দ ও গ্রামবাসীর স্বাক্ষরে গত ৭ সেপ্টেম্বর জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর পৃথক দুটি অভিযোগ প্রদান করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিতে ১৩ জন শিক্ষক -কর্মচারী কর্মরত আছেন। গত ৬ জুলাই মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হলে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল সহঃ সুপারকে ভারপ্রাপ্ত সুপার পদের প্রলোভন দিয়ে সুপারসহ প্রকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাদ দিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের জাল স্বাক্ষরে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত্মের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান ভুক্তভোগী শিক্ষক -কর্মচারী ও বিশিষ্টজনরা।
এ বিষয়ে রবিউল হাসান নিজেকে ওই মাদ্রাসার সহকারী সুপার দাবী করে বলেন, ২০০৪ সালে অত্র মাদ্রাসায় যোগদান করার পর থেকে সুপার আখতারম্নজামানকে মাদ্রাসায় আসতে দেখিনি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নেফাউর রহমান বলেন, একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনায় অভিযুক্ত হওয়ায় সুপার আখতারম্নজামানকে ২০০৪ সালে বহিষ্কার করেছে মাদ্রাসা তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি। ২০১১ সালে ওই মাদ্রাসার সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর আখতারম্নজামানকে কোনদিন মাদ্রাসায় আসতে দেখেননি বা কোনদিন তার সাথে কোনো যোগাযোগ করেননি বলেও তিনি জানান।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলবেন না জানিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে জানাতে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি কোন কিছু জানাননি। অভিযোগের সত্যত্যা যাচায়ের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, গত জুলাই মাসের ৬ তারিখে এমপিও ঘোষণা হওয়ার পরদিন পুরাতন কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে বাদ দিয়ে গোপনে একটি পকেট কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সদস্যরা প্রকৃত শিক্ষক কর্মচারীদের বাদ দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ব্যাকডেটে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন বলেও জানান তিনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলবেন না জানিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। তবে জেলা শিক্ষা অফিসার, লুৎফর রহমান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে জানাতে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি কোন কিছু জানাননি। অভিযোগের সত্যত্যা যাচায়ের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।