মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জের স্কুলছাত্রী জেসি মাহমুদ (১৬)হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিজয় রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।আজ ৫ ই ফেব্রয়ারী (রোববার ) বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে জেসি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুন্সীগঞ্জ সদর ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক এস এম শফিকুল ইসলাম বিজয়কে আদালতে প্রেরণ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জসিতা ইসলামের আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মুন্সীগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর জামাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গতকাল শনিবার রাতে বিজয়কে গ্রেপ্তারের পরে আজ রোববার বিকাল সাড়ে ৩টা’র দিকে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব।
এদিকে মেয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। নিহত জেসির বাবা সেলিম মাহমুদ।
তিনি ‘আমাদের কে বলেন, আমার মেয়েকে হারিয়েছি। এখন আমার ছেলে ও স্ত্রী দেশে অভিভাবকহীন রয়েছে। তাদের নিরাপত্তার কথা আমাকে সবসময়ই ভাবতে হচ্ছে। র্যাবকে ধন্যবাদ জানাই তারা কৌশল অবলম্বন করে
বিজয়কে ধরেছে। আমি এই হত্যাকান্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
সেলিম মাহমুদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আসামি বিজয়কে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও শেল্টার দিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল। প্রথম থেকেই এই মহলটি আসামি বিজয়কে পালানো থেকে শুরু করে আত্মগোপনে থাকা, এবং তাকে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করাসহ সকল ধরনের সহযোগিতা করে সক্রিয় রয়েছে। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের গ্রেপ্তারে আমি সন্তুষ্ট। তবে, এই হত্যাকারীদের শেল্টারদাতাদের যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চিহ্নিত করে জনসম্মুখে তুলে ধরে এটাই আমার দাবী ।
বিজয়কে গত কাল ৪ঠা ফেব্রয়াারী (শনিবার ) রাজধানীর ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারের আগে সে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিলো। এর মধ্যে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে তার এক বন্ধুর
বাড়িতে ৪ দিন, ফরিদপুরের একটি মাজারে ছদ্মবেশে ২২ দিন ও সর্বশেষ রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় আরেক বন্ধুর বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার হয় বিজয়।
এসময় বিজয় জেসির ভাই জিদানকে জেসির অসুস্থতার কথা বলে হাসপাতালে আসতে বলে। জেসির ভাই হাসপাতালে এসে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলেন। ঢাকায় নেয়ার পথে জেসি পুরোপুরি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুনরায় হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর ঘটনা শুনে বিজয় ও আদিবা কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। জেসির লাশ ময়নাতদন্ত শেষে জেসির ভাই
জানতে পারে জেসিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
পরবর্তীতে জেসির ভাই মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় বিজয় ও আদিবাসহ আরও ১-২ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি
হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা রুজুর পর ৪ জানুয়ারি আদিবাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে বর্তমানে জেল-হাজতে রয়েছে।