সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বকশীগঞ্জে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন বন্ধু ফোরামের সভাপতি মোস্তফা আক্তারুজ্জামান পল্টুর ৫৫তম জন্মদিন পালন  কালিগঞ্জে বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত  কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবে কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  “প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ” জানিয়েছেন মজিবুর রহমান দেওয়ান কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের কার্য নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে  বকশীগঞ্জের মুনীরা বেগম জামালপুর জেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত ভাঙ্গায় এখনও ছাত্রীদের ক্লাস নেন সেই “লম্পট” আজাদ! (পর্ব-১) মুন্সীগঞ্জে মামলার পলাতক আসামি গ্ৰেফতার। বকশীগঞ্জে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন

মুন্সীগঞ্জে রাতের আধারে নিজের সন্তানকে স্ত্রীর কাছ হতে চুরি করে বিক্রি করে দিলেন পিতা

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৫০ বার পঠিত

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

মুন্সীগঞ্জে মায়ের কাছ হতে ৩ মাসের শিশু সন্তানকে চুরি করে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পিতার বিরুদ্ধে। ঘাতক পিতার কাছ হতে ওই বাচ্চাটিকে কিনে নিয়ে উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট এলাকার আলি ইসলাম সৌদি আরবে শিশুটিকে পাচার করে দিয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবারটি।

সরেজমিনে শনিবার রাতে লৌহজং উপজেলার মাওয়া পুরানতন ঘাট সংগ্লগ্ন চৌরাস্তায় ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বিষয়টি নিয়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থাণীয়রা ঘাতক পিতাকে আটক করে রেখেছে।

জানাগেছে, মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার কৃষ্ননগর গ্রামের গিয়াসউদ্দিন এর ছেলে আলীয়েস (২৫) এর সাথে কিছুটা মানুষিক ভারসাম্যহীন কাজলী বেগমের প্রায় ২ বছর আগে স্থানীয় ইমাম দিয়ে সরা কাবিনের মাধ্যমে বিয়ে হয়। প্রায় ৩ মাস আগে ওই দম্পত্তির আলিফ (৩ মাস) নামের এক পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। কিন্তু ১০দিন আগে রাতের আধারে শিমুলিয়া ঘাট এলাকার একটি বাসায় কাজলী বেগম তার স্বামী আলীয়েস ৩ মাসের শিশু আলিফকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুম থেকে উঠে কাজলী বেগম দেখেন তার ছেলে আলিফ ও তার স্বামী আলীয়েস নেই। তারপর হতে মাওয়া ঘাট এলাকায় ছেলের জন্য কেঁদে ফিরছিলেন কাজলী বেগম। বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে পেরে কাজলী বেগমকে তার আত্মীয় আব্দুল হকের বাসায় নিয়ে আসেন। পরে সেখানে আলিয়াসের মাকে আটক রেখে তার ছেলেকে খবর দিলে আলিয়াস মায়ের কাছে আসলে এলাকাবাসী তাকে আটক করে । এর আগেও জন্মের পর একমাস বয়সের সময় আলিফকে ৫০,০০০/ টাকায় মাদারীপুর এলাকায় বিক্রি করে দেন বাবা আলিয়েস। সেখানে অলিফকে বিক্রি করে দেওয়ার পরে আলিয়াস আশ্রয় নেয় এসে তার সৎ বাবা লৌহজং উপজেলার আব্দুল হকের বাসায়। পরে ছেলে বিক্রির বিষয়টি এই এলাকায় জানাজানি হলে এলাকার লোকজনের সহায়তায় মাদারীপুর হতে পুলিশের সহায়তায় ওই ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে কাজলীর বেগমকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে আব্দুল হক বলেন, আমি গরীব মানুষ মাওয়া এলাকার মঙ্গল বেপারীর বাড়িতে ভাড়া থেকে ফেরি করি। আমি আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে আলিয়েসের বিধাবা মাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে এখানে ঘর সংসার করছি। দেড় মাস আগে আমার স্ত্রীর আগের ঘরের ছেলে আলিয়েছ আমাদের বাসায় তার স্ত্রীকে নিয়ে আসে। পরে আমরা জানতে পারি সে তার ছেলেকে বিক্রি করে দিয়ে এখানে এসেছে। পরে এই এলাকার লোকজন পুলিশের সহায়তায় মাদারীপুর হতে তার বাচ্চাকে উদ্ধার করে কাজলী বেগমকে বুঝিয়ে দেই এবং বাচ্চা বিক্রি করে আসার বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় মেম্বার ও আমি মিলে আলিয়েছকে আমার বাসা হতে বের করে দেই। পরে আলিয়েছ তার স্ত্রীকে নিয়ে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নেয়। সেখানে থেকে সে পুনরায় আবার তার ছেলেকে ৪০,০০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে কাজলী বেগম বলেন, ১০ দিন আগে আমি আমার বাচ্চাকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার পাশে আমার স্বামী আলিয়েছ ও তার ভাইও ঘুমিয়ে ছিল। পরে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার স্বামী ও তার ভাই নাই আমার ছেলে আলিফও নাই।

এ ব্যাপারে ঘাতক পিতা আলিয়েছ বলেন আমার স্ত্রী কাজলী বেগম মাদারীপুর জেলার লেকপাড়া এলাকায় ভিক্ষা করতো। সেখানে তার সাথে আমার পরিচয় হয়। ২ বছর আগে আমি তাকে বিয়ে করি। বিয়ের পরে দেশে মাদারীপুর ছিলাম। ৩ মাস আগে আমার একটি ছেলে বাচ্চা হয়। জন্মের একমাস পরেই আমি আমার স্ত্রী ছেলের ঠিকমতো যত্ন করতে না পারায় আমার খালার কাছে ৫০,০০০/ টাকায় বিক্রি করে দেই।পরে পুলিশ উদ্ধার করে আমার কাছে বাচ্চাটি ফিরিয়ে দেয়। বাচ্চা ফিরে পাওয়ার পরে আমরা শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতাম। ওই ঘাট এলাকায় আলি ইসলামের সাথে আমার পরিচয় হয়। আলি ইসলাম আমাকে বলে তোর বাচ্চাটি আমার কাছে বিক্রি করে দে। প্রয়োজনে বাচ্চা বড় হলে তুই নিয়ে যেতে পারবি। ছেলেকে দেখতে চাইলে দেখতেও পারবি। তার কথায় আমি রাজি হই। সে আমাকে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে। কিন্তু সে ছেলে আমার কাছ হতে নিয়ে সৌদি আরবে পাচার করে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আলি ইসলাম বলেন, আমি বাচ্চা ওর কাছ হতে কিনি নাই। ও ওর বাচ্চা ঢাকা দোহার এলাকার এক লোককে পালতে দিয়েছে। আমি সামনে ছিলাম। দোহার এলাকার ওই লোক সৌদি আরবে থাকে। সে বাচ্চা নিয়ে সৌদি আরবে চলে গেছে কিনা বিষয়টি আমার জানানেই।

এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলার মেদেনিমন্ডল ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য লিলেন মৃধা বলেন, আলিয়েছ মাদারীপুরে তার বাচ্চা বিক্রি করে আমার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল। আমি বাচ্চাটিকে মাদারীপুর হতে পুলিশের সহয়তায় উদ্ধার করে দিয়ে তাকে আমার এলাকা হতে তাড়িয়ে দেই। সে বাচ্চা নিয়ে পূনরায় কি করছে বিষয়টি আমার জানানেই।

এ ব্যাপারে লৌহজং থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।