যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর চিঠির জবাব পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ শুক্রবার চিঠিটি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মার্কিন দূতাবাসে পাঠানো আওয়ামী লীগের চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে।
বিএনপি-জামায়াত ও সমমনাদের অবরোধ ও অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যেও আওয়ামী লীগ সংলাপে বসবে, এমন পরিবেশ নেই। এ ছাড়া বাস্তবধর্মী ফলাফলের জন্য সংলাপে বসার মতো এত সময়ও হাতে নেই।অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে নিঃশর্ত সংলাপের আহ্বান জানিয়ে গত সপ্তাহে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ডোনাল্ড লু।
ওই চিঠির জবাবেই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চিঠিটি লিখেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন, আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট। আওয়ামী লীগ অনেক মাস ধরেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিঃশর্ত সংলাপে বসার জন্য দরজা খোলা রেখেছিল। কিন্তু বিএনপি সংলাপে বসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকায় সংলাপের সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ নেয়নি।চিঠিতে কাদের বলেন, বর্তমানে বিএনপি ও তাদের সমমনা জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলো সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অবরোধ, অগ্নিসংযোগ করছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে অবরোধকারীরা ১৫৪টি অগ্নিসংযোগ ও হামলা করেছে।সংলাপেরে বিষয় টেনে এতে আরো বলা হয়, চলমান অবরোধ ও এ ধরনের কর্মসূচির প্রধান দাবির মধ্যেও আওয়ামী লীগ যদি বিএনপি ও অন্যদের সঙ্গে সংলাপে বসে তাহলেও অর্থবহ সংলাপের পরিবেশ থাকছে না।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী সপ্তাহগুলোতে ৩০০ আসনের প্রার্থী পর্যালোচনা ও বাছাই, নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন, প্রচারণার কৌশল চূড়ান্ত চূড়ান্তকরণ, ভোটারদের কাছে প্রচারণাসহ নির্বাচন সম্পর্কিত কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। এর অর্থ অনুকূল পরিবেশ থাকলেও বাস্তবধর্মী ফলাফল মিলবে এমন অর্থবহ সংলাপের মতো প্রয়োজনীয় সময় নেই।
চিঠিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে আন্তর্জাতিক বন্ধু ও অংশীদারদের সাহায্য ও সহযোগিতার প্রশংসা করা হয়।
একই সঙ্গে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে সব পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের অঙ্গীকার পূণর্ব্যক্ত করা হয়।এতে বলা হয়, জনগণের ভোটাধিকারকে আওয়ামী লীগ পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করে। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকারের কথাও এতে উল্লেখ করা হয়।
নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগগুলো চিঠিতে উল্লেখ করে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সঙ্গে অংশীদারীকে আওয়ামী লীগ গুরুত্ব দেয়। আওয়ামী লীগ আশা করে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে আন্তর্জাতিক বন্ধুরা সব ধরনের সহযোগিতা করবে।