আজহারুল ইসলাম সাদী, স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ মাতানো সাবেক নাইজেরিয়ান ফুটবলার মাগালান উগোচুকউ (৩৪) মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (২৬ জুন) সাতক্ষীরা সদরের ভাদড়া ফুটবল মাঠে আটদলীয় রোহান ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচ চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি।
তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ভাদড়া বাউখোলা স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি ও টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটির সভাপতি মাস্টার রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘আটদলীয় টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে বাউখোলা স্পোর্টিং ক্লাবের মুখোমুখি হয় সাতক্ষীরা টাউন স্পোর্টিং ক্লাব। ভাদড়া বাউখোলা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন মাগালান। খেলা শেষ হওয়ার কিছু সময় আগে হঠাৎ মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে সাতক্ষীরা সিবি হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ৩টার দিকে মারা যান মাগালান।’
রুহুল কুদ্দুস আরও বলেন, ‘মাঠে অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি ঢাকায় অন্য নাইজেরিয়ান ফুটবলারদের জানানো হয়েছিল। খবর পেয়ে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় ঢাকা থেকে খুলনা হাসপাতালে গেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা টিমের সাবেক ফুটবলার আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়ে মাগালান। তখন তার ভাষা বুঝতে না পারায় কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। নিজের সমস্যার কথা জানালেও তার কথা কেউ বুঝতে পারেনি। পরে আমি গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছি। আমাকে বলেছিল, তাকে কিছু খেতে দিতে। কারণ সে প্রতিটি খেলায় না খেয়েই মাঠে নামে। গতকালও না খেয়ে খেলতে নেমেছিল। খেতে দেওয়ার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সাতক্ষীরা শহরের সিবি হাসপাতালে সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট খারাপ আসলে চিকিৎসকরা খুলনা মেডিক্যালে নিয়ে যেতে বলেন। খুলনায় নেওয়ার পর চিকিৎসকরা দ্রুত হার্টে রিং বসানোর পরমর্শ দেন। বিদেশি ফুটবলার হওয়ায় পাসপোর্ট জমা দিতে বলেন চিকিৎসকরা। সেটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। রাত ৩টার দিকে মারা যায়। তাকে বাঁচাতে আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলাম না।’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে পথচলা শুরু হয় মাগালানের। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের হয়ে অভিষেক। পরের বছর যোগ দেন চট্টগ্রাম আবাহনীতে। এক বছর সেখানে কাটান নাইজেরিয়ান এই তারকা।
২০২১/২২ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলেন।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তিন ক্লাব মিলিয়ে ৩৪ ম্যাচ খেলেছেন। ১১টি গোল ও একটি অ্যাসিস্ট আছে। যার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার হয়ে ১০ ম্যাচে ৬ গোল, চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে ১২ ম্যাচে ৩ গোল ও একটি অ্যাসিস্ট এবং ব্রাদার্সের হয়ে ১২ ম্যাচে ২ গোল করেছেন মাগালান।