আল-হুদা মালী স্টাফ রিপোর্টারঃ
দুর্যোগপুর্ন আবহাওয়া বঙ্গপোসাগরে মাছ ধরাতে যাওয়া জেলেরা বিপাকে পড়ে সাতক্ষীরা রেঞ্জ পশ্চিম বনবিভাগের আওতায় স্মার্ট পেট্রোলিং টিমের নিয়মিত টহল কালে তাদের অবস্থা দেখে মানবিক সহযোগিতা এগিয়ে আসার কারনে ঘরে ফিরতে সক্ষম হয়েছে ৬৫ জেলে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ খুলনা এর সুযোগ্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন মহোদয়ের নির্দেশনায় সহাকারী সাতক্ষীরা বন সংরক্ষক এম. কে. এম ইকবাল হোছাইন চৌধুরী, রেঞ্জ কর্মকর্তা, সাতক্ষীরা রেঞ্জের তত্ত্বাবধানে সাতক্ষীরা স্মার্ট পেট্রোলিং টিম-০২ এর টিম লিডার মো: স্বাদ আল জামি এর নেতৃত্বে নিয়মিত টহলকালে গত ২০ আগস্ট রোজ শনিবার আনুমানিক সকাল ১০টার সময় মালঞ্চ নদী হয়ে খোবরাখালীর ভারানী থেকে মাহমুনা নদীর দিকে যাওয়ার পথে স্মার্ট টিম ট্রলার দেখতে পায়। স্মার্ট টিম ফিশিং ট্রলারের কাছাকাছি গেলে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং বলতে থাকে যে, আমাদের ০৫ (পাঁচ) টি ফিশিং ট্রলারের মধ্যে ০২ টি ট্রলার সাগরের বড় বড় ঢেউ, প্রবল প্রোত ও ঝড়ো হাওয়ার আঘাতে পানিতে ডুবে যায়। ০২ টি ট্রলারের মধ্যে ২০-২৫ জন জেলে ছিল। আমাদের সামনেই ০২ টি ট্রলার ডুবে যায় এবং আমাদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য আমরা কিভাবে এখানে এসেছি তা আমরা নিজেও জানিনা।
আমাদের প্রয়োজনীয় খাবার পানির সংকট রয়েছে। তাৎক্ষনিক ভাবে মোঃ স্বাদ আল জামি স্মার্ট পেট্রোলিং টিম লিডার-০২ ট্রলারসহ জেলেদেরকে নিজ হেফাজতে নিয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা, সাতক্ষীরা রেঞ্জ মাহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেন। রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশনাক্রমে জেলেদেরকে উদ্ধার পূর্বক রেঞ্জ কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। উদ্ধারকৃত ট্রলার সমূহের মধ্যে দুইটিতে ১৫(পনের) জন করে ৩০ (ত্রিশ) জন এবং একটিতে ১১ (এগার) জনসহ মোট ৪১ (একচল্লিশ) জ আছে। ৩(তিন) টি ট্রলারের নাম এফ.বি. মায়ের দোয়া, এফ.বি লাকি ও এফ.বি.ভাই ভাই। তাছাড়াও শনিবার সন্ধ্যা আনু: ৮ টার সময় স্মার্ট টিম হলদেবুনিয়া রায়মঙ্গল নদী হতে ভাসমান ২৪ (চব্বিশ) জন ছেলেকে উদ্ধার করে হলদেবুনিয়া অফিস হেফাজতে নিয়ে আসেন ও তাদেরকে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তীতে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ওয়্যারলেস বার্তায় অবহিত করেন। রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশে বাকি ২৪ (চব্বিশ) জন জেলেকে হলদেবুনিয়া হতে রেঞ্জ কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
জেলেদের নিকট হতে জানা যায় গত ১৯ আগস্ট নিম্নচাপের প্রভাবের কারণে তারা দুর্বিপাকে পড়েন। এছাড়াও সাতক্ষীরা রেঞ্জের অন্যান্য টহল ফাঁড়িও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত আছেন। উদ্ধার কৃত জেলেরা বলেন, বন বিভাগের এই সহযোগিতায় আমাদের উদ্ধার এর পর খাদ্য সহয়তা সহ সকল সুবিধা প্রদান করায় আমরা খুশী।
উদ্ধার কৃত জেলের মধ্যে আল্লারদান ফিশিং নৌকার মাঝি নাসির জানান, আমরা সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে আবহাওয়ার সমস্যার কারনে স্বাভাবিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় যাওয়ায় আমরা ভাসতে ভাসতে আসার সময়ে বন বিভাগের মানবিক সহযোগিতার কারনে আজ আমরা ঘরে ফিরতে পেরেছি।
সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা এম,কে,এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সকল স্টেশন ও ক্যাম্পের কর্মকর্তা/ কর্মচারীগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসের মত ভয়াবহ প্রাকৃকিত দুর্যোগের মধ্যেও নদী বেষ্ঠিত সুন্দরবন রক্ষার কাজে সর্বদা নিয়োজিত আছেন। এ সাফল্য বন বিভাগ তথা সরকারের। আপনারা সংবাদ কর্মী ভাই ও বোনেরা এ সংক্রান্ত আরোও তথ্য সরবরাহ করলে আমরা তড়িৎ উদ্ধার কাজে অংশ গ্রহণ করব। সুন্দরবন সব সময় নিজের বুঝ পেতে ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসের মত ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে আমাদের জান মাল রক্ষা করে। তাই সুন্দরবনকে রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। সংবাদ সম্মেলনে অংশ গ্রহন করার জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি জয় বাংলা।