স্টাফ রিপোর্টারঃ
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বিবাহিত এক যুবক ও এক গৃহবধূকে আটকে রেখে শারিরীক নির্যাতনসহ পরকীয়া প্রেমিকের মোটর সাইকেল আটকে রেখে জোর পূর্বক অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক সক্রীয় কর্মীসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে।
গত সোমবার ৫ ডিসেম্বর দুপুরে উপজেলার কুসুমপুর গ্রামের চুন্নু মিয়ার বসত বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয়রা জানায়, গত সোমবার শ্রীনগর উপজেলার বৌ বাজার এলাকার পল্লী বিদ্যুতের সার্ভিস ম্যান ও সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলী এলাকার এক গৃহবধূ পরকীয়া সম্পর্কের সূত্র ধরে অবৈধভাবে মেলামেশার জন্য পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারী শ্যামলের মাধ্যমে উপজেলার কুসুমপুর গ্রামের চুন্নুর বসত ঘরে গেলে চুন্নুর প্রতিবেশী রাতুল নামে বিএনপির এক সক্রীয় কর্মী লোকজন নিয়ে প্রেমিক যুগলকে আটকে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ফাস করে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবী করে।
প্রেমিক যুবক নগদ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্থানীয় বিএনপির কর্মী রাতুলের নেতৃত্বে ফকির, সজল, নয়ন ও নিরবসহ আরো বেশ কয়েকজন মিলে তার মোটর সাইকেল ঘটনাস্থলে উপস্থিত মেহেদী নামে এক যুবকের অটো-রিকশার গ্যারেজে জিম্মায় রেখে পরদিন মঙ্গলবার সকালে ১৮ হাজার টাকার বিনিময়ে মোটর সাইকেল প্রেমিক যুবককে ফিরিয়ে দেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী প্রেমিক যুবক অভিযোগ করে বলেন, আমি ভুল করেছি। তারা আমাকে ওই মেয়েসহ আটকে মারধর করে আমার কাছে ৪০ হাজার টাকা দাবী করে। আমি নগদ টাকা দিতে না পারায় তারা আমার মোটর সাইকেল মেহেদীর গ্যারেজে আটকে রাখে।
পরদিন মেহেদী, রাতুল ও ফকিরসহ তাদেরকে ১৮ হাজার টাকা দিলে তারা আমার মোটর সাইকেল ফিরিয়ে দেয়। আমি অন্যায় করে থাকলে আইনের মাধ্যমে সাজা দিলে আমি মাথা পেতে নিতাম।তারা আমাকে ভয় দেখিয়ে জোর করে আমার কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। আমি আমার টাকা ফিরত চাই। এ ব্যপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করবো। বাড়ির মালিক চুন্নুর স্ত্রী মোসাঃ রবেদা বেগম বলেন, শ্যামলের মাধ্যতে ওইদিন তারা আমার বাড়িতে আসছিলো। আমি তাদের ঘরে থাকতে দিয়ে ভুল করেছি। এছাড়া আমার কোন দোষ নাই। আমরা কিছু করি নাই। আমরা ওদের আটকাই নি। রাতুল, ফকির সজল, মেহেদী, নয়ন, নিরবসহ পাড়ার লোকজন নিয়ে এসে তাদের আটক করে। পরে ফকির ও রাতুলের মাধ্যমে মিমাংসা করেছে।
মোটর সাইকেল আটকে রেখে টাকা নিয়েছে কিনা আমি জানি না। অভিযুক্ত গ্যারেজ মালিক মেহেদী বলেন, মোটর সাইকেল রাখার জায়গা ছিলো না তাই আমার গ্যারেজে রাখছে। পরদিন রাতুল ও ফকিরসহ আমরা মিলে যার মোটর সাইকেল তার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হইছে। মোটর সাইকেল আটকে রেখে টাকা নেওয়ার ব্যপারে জানতে চাইলে এ বিষয় কথা বলতে অসন্তোষ প্রকাশ করে গ্যারেজে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। অভিযুক্ত বিএনপি কর্মী রাতুল বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি সেদিন ঢাকায় ছিলাম। প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি ঘটনা কিংবা মিমাংসার কিছুুই জানি না। এ ব্যপারে ইছাপুরা ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সৈয়দ আহসান কবীর শিশির বলেন, ঘটনাটি স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। যদি কেউ অন্যায় করে থাকে তাহলে আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার হবে। তারাতো এ বিচার করার এখতিয়ার রাখে না। মোটর সাইকেল আটকে রেখে তারা ১৮ হাজার টাকা নিয়েছে সেটা ভুক্তভোগী যুবক আমার কাছে বলেছে। তারা যা করেছে সম্পূর্ণ অন্যায়। যারা এ অন্যায় করেছে তাদের সবার বিচার হওয়া উচিৎ। ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সুমন মিয়াকে এ ব্যপারে জানানো হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।