জয়ন্ত সাহা যতন,স্টাফ রিপোর্টারঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সোনালী আশঁ পাটের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মনে হাসি-খুশির আমেজ লক্ষ করা গেছে। তাই তারা বুক ভরা আশা নিয়ে পাট ক্ষেতে কাজ করছেন ।এ উপজেলায় কৃষকেরা পাটের বীজ বপন করতে শুরু করেছেন চৈত্র মাসে। প্রচন্ড খরায় তারা সেচ দিয়ে পাটের জমি তৈরি করে বীজ বপন করেছেন। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের চরের কৃষকরাই পাটের আবাদ করেছেন সবচেয়ে বেশি। আর উচু এলাকার কৃষকরা বৈশাখের বৃষ্টির উপর নির্ভর করে পাট চাষ করেছেন। চর এলাকায় আগাম আবাদের কারণ হল আষাঢ় শ্রাবণ মাসে বন্যার পানি আসার আগে যেন পাট কাটা শেষ করা যায়।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৪ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। তন্মধ্যে জনপ্রিয় পাটের জাতগুলো হলো- বিজেআরআই-৮, ও.নাইন.নাইন.সেভেন, বঙ্গবীর, কৃষাণ ও তোষা পাট ও -৭২, ও-৯৮৯৭। যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। সম্ভাব্য উৎপাদন প্রতি হেক্টরে পাট ২.৭ মেট্রিকটন। গত ২ বছর থেকে চাষিরা পাটের দাম ভাল পেয়েছে। এ বছরও ভাল দাম পাবে এ আশা নিয়ে কৃষকরা হিসেব কষছেন অতীতের আবাদের চেয়ে লাভ বেশি হবে। কোন প্রকার সারের অভাব না থাকায় সঠিক সময়ে জমিতে সার দিতে পেরেছে কৃষকরা। বৃষ্টি হওয়ার আগে বৈশাখের প্রচন্ড খরায় কিছু-কিছু জমিতে সেচ দিয়েছে কৃষকরা যার ফলে এখন শ্যামল সবুজের সমারোহ ঘটেছে ক্ষেতের মাঠে মাঠে। ইতোমধ্যেই অনেক জমির পাট ৭ হতে ৮ ফুট করে লম্বা হয়েছে। যার কারণে অনেক চাষি পাট কেটে জাগ দিচ্ছে।পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহের কারণ হলো ২ হতে ৩ ফুট লম্বা হওয়া পর্যন্ত শাক হিসেবেও খেতে পারেন। যা থেকে শরীরের ক্যালরির ঘাটতি পুরণ হয়। পাট খড়িও বাজারে বিক্রি করে যথেষ্ঠ আয় করা যায়। বেশির ভাগ কৃষকই সাংসারিক চাহিদা পূরণের পর অবশিষ্ট পাট খড়ি বাজারে বিক্রি করেন। খোর্দ্দার চরের কৃষক বক্কর মিয়া জানান, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছেন। পাটের কচি পাতা তুলে শাক হিসেবে খেয়েছেন। পাট পঁচানোর পর সোনালী আশ বিক্রি করে পরবর্তীতে পাট খড়ি বিক্রি করেও যথেষ্ট আয় করবেন বলে তার আশা। হরিপুর চরের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, ধান, চাল ও গমের মতো যদি সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পাট ক্রয় করত তাহলে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পেতো। তিনি আরও জানান, ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে পাটের বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় বিশাল অংকের লাভটা চলে যায় তাদের পকেটে । তবে এবছর অন্যান্য বছরের তুলনায় পাটের বাজার মূল্য কম থাকায় কৃষকের মনে হতাশাও রয়েছে।উপজেলা উপ-সহকারী পাট অফিসার মাইদুল ইসলাম বীরের সাথে কথা হলে বলেন, এবছর সবখানে পাট ভাল হয়েছে। আশঁ ভাল হলে কৃষক দামও ভাল পায়।কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশিদুল কবির জানান, আমি আসার পর থেকে উপজেলায় পাটের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। চাষিদের আমরা সবসময় বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকি। পরামর্শ মোতাবেক যারা চাষ করেছেন তাদের ফলন খুব ভাল হয়েছে।