শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ফুলবাড়িতে পুলিশের অভিযানে গাঁজাসহ আটক-১ নামে বেনামে সম্পত্তিসহ কোটি টাকার মালিক শিক্ষা নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের পঞ্চগড়ে গ্রাম আদালত নিয়ে সচেতনতার জন্য সমন্বয় সভা দক্ষিণ জেলা বিএনপি পদ ফিরে পাওয়ায় দোয়া মাহফিল গভীর রাতে শীতার্তদের মাঝে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব ফরিদপুর এর শীতবস্ত্র বিতরণ ফুলবাড়ীতে ৫০ বোতল ফেনসিডিল সহ অটোরিকশা চালক গ্রেফতার ফুলবাড়ীতে আ’লীগ-ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেফতার চট্টগ্রামে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র-গুলি উদ্ধার গাজীপুর মহানগরে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বড়দিন উদযাপন গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন গীর্জা পরিদর্শন করেন জিএমপি’র মাননীয় পুলিশ কমিশনার

অস্তিত্ব সংকটে ঝালকাঠির কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ি।

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ২৬২ বার পঠিত

 

মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরোঃ

কীর্তিপাশা জমিদার বাড়িটি ঝালকাঠি জেলার একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা।জমিদার বাড়িতে এসে দেখলাম ইতিহাসে যা আছে এখানে তার উল্টো।জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে জমিদার বাড়িটি।যে যার মতো করে দখল দিয়ে মূল বাড়ীটি কোনঠাসা করে রেখেছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে,বাড়িটি খুঁজে বের করা দুষ্কর। বাড়ির সামনে একটি বালিকা বিদ্যালয়,পাশে আরেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নার্সিং কলেজ স্থাপন করা হয়েছে।

কোথাও বড় করে লেখা নেই কীর্তিপাশা জমিদার। এমন দৃশ্য দেখে একবার ফিরে যাইতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু কস্ট করে আসলাম তাই একটু খুঁজে দেখলাম।
এমনটাই বলছিলেন চট্টগ্রাম থেকে কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ী দেখতে আসা আবদুস সোবহান নামে এক ব্যাংকার।এখানে বরিশাল থেকে ঘুরতে আসা সজল,রাকিব ও মাহাতাব নামে তিনজন শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদক কে জানান,জমিদার বাড়ির উপরে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য এই জমিদার বাড়ি আসব অনেক দিন থেকেই ভাবছি।

তাই আজ সকাল সকাল চলে আসলাম এখানে।কিন্তু এসে দেখি আমরা তিনজন বাদে বাহিরের আর দুইজন সহ মোট পাঁচজন বাড়িটি ঘুরে দেখলাম।যতটা আনন্দ নিয়ে বরিশাল থেকে বাইকে করে এখানে আসলাম আসার পর নিরানন্দ আড্ডায় পরিণত হয়েছে।

বাড়িটির ইতিহাস ঐতিহ্য আর অস্তিত্ব ধরে রাখতে সরকারি ভাবে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। না হলে একদিন পুরোপুরি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে ঝালকাঠির প্রাচীন নিদর্শন কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ী এমনটাই মনে করছে এই তিন যুবক।

জমিদার বাড়িতে ঝালকাঠির স্থানীয় বাসিন্দা ঘুরতে আসা মোঃ কামাল উদ্দিন রানা জানান, জমিদার বাড়িটি এখন জঙ্গল বাড়িতে পরিণত হয়েছে। স্কুলের পিছনের ঢাকা পড়েছে বাড়ীটি।জরাজীর্ণ বাড়িটির সুরকী, ইট,বালু আস্তে আস্তে ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়ে যাচ্ছে।একসময় বিলীন হয়ে যাবে এই বাড়ীটি।তখন অদৃশ্য ইতিহাসের স্বাক্ষী হবে বাড়িটি।এখনই সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নেওয়া উচিত বাড়িটি রক্ষায়।না হলে বাড়িটি পুরোপুরি মাদক সেবনের আখড়ায় পরিণত হবে।

স্থানীয় নিতাই দাস নামে ৯৫ বছরের এক বৃদ্ধ জানান, দাদু কি আর বলব! এই বাড়ি দেখতে দেশবিদেশ থেকে কত মানুষ আসত।এখন আর তেমন আসে না। বাড়িটির চারপাশে কিছুনা কিছুই গড়ে উঠছে। রাস্তা থেকে পথচারি দেখতে পায় না। এজন্যই অনেকের আগ্রহ কমে গেছে। দিন দিন বাড়িটির জায়গা কমে যাচ্ছে। উইপিকিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের ঝালকাঠি জেলার একটি ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। এটি ঝালকাঠি সদর উপজেলা থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে প্রায় ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে কীর্তিপাশা গ্রামে অবস্থিত।

আরো জানা গেছে, কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয় প্রায় একশ বছর আগে।বিক্রমপুর জমিদারের বংশধরের কিছু অংশ প্রায় ১৯ শতকের শেষ সময়ে ঝালকাঠি জেলার কীর্তিপাশা জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯ শতকের প্রথম দিকে বিক্রমপুর জমিদার বংশের রাজা রাম সেনগুপ্ত এই কীর্তিপাশা গ্রামে আসেন।এখানে তিনি তার দুই ছেলের জন্য দুইটি বাড়ি নির্মাণ করেন।বড় ছেলের জন্য পূর্ব বাড়ি যা ছিল ১০ আনা বড় হিস্যা জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত।
আর ছোট ছেলের জন্য পূর্ব বাড়ি যা ৬ আনা ছোট হিস্যা জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত ছিল। ছোট ছেলের জমিদার বাড়ি অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে গেছে। আর বড় ছেলের জমিদার বাড়ির কিছু অংশ টিকে আছে। এই জমিদার বাড়ির জমিদার পুত্রকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়। এবং তার স্ত্রীও তার সাথে মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাদেরকে একসাথে সমাধিস্থ করা হয়। এখানে এখনো একটি নাটমন্দির, হলঘর, ছোট ও বড় মন্দির আছে।এই জমিদার বংশের দুজন বিখ্যাত ব্যক্তি হচ্ছেন রোহিণী রায় চৌধুরী ও তপন রায় চৌধুরী।

আজ বুধবার (০৫ অক্টোবর)সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, জমিদার বাড়ির একটি অংশে রয়েছে প্রসন্ন কুমার মাধ্যমিক বিদ্যালয়।নাটমঞ্চ ও হলরুমে কমলিকন্দ নবীন চন্দ্র বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আরেক পাশে একটি সরকারি নার্সিং কলেজের ভবন।
আর মূল জমিদার বাড়ি ও দুর্গামন্দির লতা-পাতা, জঙ্গলে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।জমিদার বাড়ি লেখা কোন ধরনের সাইনবোর্ড বা স্থাপনার নাম লেখা নেই|

বাড়িটির পিছনের অংশের অবস্থা একদম ভূতুড়ে।বৃষ্টির পানিতে বাড়িটির ছাদ চুবিয়ে চুবিয়ে পানি পড়ে নিচের মেঝে ভেজা অবস্থাতে রয়েছে।পাশাপাশি দরজা জানালা কোনটাই আস্ত নেই।যে যার মতো করে খুলে নিয়ে গেছে। ঝালকাঠি সদর উপজেলা নিবার্হী অফিসার সাবিকুন নাহার জানান, কীর্তিপাশা জমিদার বাড়ির পুরানো ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে|প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তের পর প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।