এম এ মান্নান বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ছেলে মেয়ে বিভেদ নাই,সবার জন্য শিক্ষা চাই"
স্লোগানকে সামনে রেখে বর্তমানে পুরুষদের সাথে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নারী শিক্ষা। হাওর অধ্যুষিত মধ্যনগর এলাকায়ও বর্তমানে মেয়েদের পড়াশোনায় অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো যা স্বাধীনতা পুর্বে ছিল অকল্পনীয়। ১৯২০ সালে মধ্যনগর বি পি উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৪৭ বছর কোন ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করার জন্য খোঁজে পাওয়া যায় নি। নুরজাহান বেগম ছিলেন প্রথম ছাত্রী যিনি ১৯৬৮ সালে মধ্যনগর বি পি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম অংশগ্রহণ করেন।১৯৬৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করলেও সেবার তিনি কৃতকার্য হতে পারেননি পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে মধ্যনগর বি পি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১ম ছাত্রী হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীনের গৌরব অর্জন করেন।
মধ্যনগর গ্রামের শিক্ষক পরিবার (মো: মহিউদ্দিন পঞ্চায়েত বাড়ির জনাব মুসলিম উদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন, মনির উদ্দিন, নুরুল হক) এর ভাগ্নি বংশীকুন্ডা নিবাসী মরহুম আইয়ুব আলী তালুকদার সাহেবের বড় মেয়ে নুরজাহান বেগম, শিক্ষক মামাদের আবদারে এবং তৎকালীন বি.পি.উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকুন্দ লাল জোয়ার্দার স্যারের আগ্রহে ১৯৬৬ সালে মধ্যনগর বি.পি.উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেনীতে(একমাত্র ছাত্রী)ভর্তি হন।এর আগে তিনি অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত বংশীকুন্ডা জুনিয়র স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯৬৯ সালে এসএসসি পাস করার পর মোহনগঞ্জ কলেজে ভর্তি হলেও স্বাধীনতা যুদ্ধ, চাকরি ও অন্যান্য কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হয়ে উঠেনি। তিনি ১৯৭৩ সালে খিদিরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়(বংশীকুন্ডায়)
যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন সে বছরই স্কুলটি জাতীয়করন করা হয়। ১৯৭৪ সালে বদলী হয়ে বংশীকুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯৭৮-৭৯ সালে তিনি সুনামগঞ্জ পিটিআই থেকে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন। ১৯৮০ সালে তিনি মধ্যনগর বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যোগদান করেন। ২০০৫ সালে এ স্কুল থেকে ৩২ বছরের শিক্ষকতা জীবন শেষ করে অবসর গ্রহণ করেন।
নুরজাহান বেগম ১৯৫৩ সালে নানা মো: মহিউদ্দিন পঞ্চায়েত এর মধ্যনগর গ্রামের বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা বংশীকুন্ডা নিবাসী মরহুম আইয়ুব আলী তালুকদার, মাতা মরহুমা জুবেদা খাতুন। চাচা মরহুম আক্কেল আলী তালুকদার, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মধ্যনগর এলাকার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।ব্যক্তিগত জীবনে তিনি মধ্যনগর বি পি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ মরহুম মিছবাহুর রেজা চৌধুরীর স্ত্রী এবং ৫ ছেলে ও ১ মেয়ের গর্বিত মা। ছেলে মেয়েরা সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে সম্মানজনক পদে আসীন আছে। এক ছেলে অষ্ট্রেলিয়া আরেক ছেলে কানাডায় সপরিবারে অবস্থান করছে।
নুরজাহান বেগম বলেন-তখনকার সময়ে মেয়েদের লেখাপড়া করা খুবই কঠিন ছিল। নবম শ্রেণিতে আমিই ছিলাম একমাত্র ছাত্রী। ছাত্রীদের মধ্যে মধ্যনগর বাজারের বাবু হেমচন্দ্র রায়ের মেয়ে রংমালা, বাবু বীরেশ্বর রায়ের মেয়ে শ্যামু বালা রায় তখন ক্লাস সিক্স/সেভেন এর ছাত্রী ছিল। মেয়েরা তখন স্যারদের সাথে ক্লাসে যেত আর ক্লাস শেষে উনাদের সাথেই কমনরুমে ফিরে আসত তাই সহপাঠী ছাত্রদের নাম তেমন ভাবে জানা হয়ে উঠেনি। বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে মেয়েদের ঈর্ষনীয় সাফল্য আমাকে খুবই আনন্দিত করছে বিশেষ করে এ বছর এইচএসসিতে মধ্যনগর বি পি হাই স্কুল ও কলেজ থেকে একমাত্র জিপিএ ৫ পাওয়া লাকীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থতার সাথে নেক হায়াত দান করেন।২৮/০২/২৩
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।