আহসান উল্লাহ বাবলু সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ
আশাশুনিতে দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছরের বসবাসের ভিটাবাড়ির সামনে দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়ে একমাত্র আয়ের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাথে সাথে ভিটেবাড়ির মধ্যে খুঁটি বসিয়ে দখলের প্রাথমিক কাজ সম্পন্নের পায়তারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা ঘটেছে সোমবার উপজেলার মাড়িয়ালা গ্রামে।
মাড়িয়ালা গ্রামের কেরামত আলির ছেলে আবু বক্কর ছিদ্দিক ও পরিবারের অন্য ওয়ারেশরা জানান, তারা ১৯৭০ সাল থেকে মাড়িয়ালা মৌজায় ডিপি ১৯৫, ৪১২৯, ৩৫৩১, ২৬২৫, ২৬২৩ নং খতিয়ানে ১২৮৬৮ দাগের জমিতে বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছেন। সেখানে তাদের ঘরবাড়ি, গাছগাছালি, বাপ-দাদাদের কবর স্থান, দোকান পাট সহ সংসারে যাকিছু প্রয়োজন সবই রয়েছে। বসবাস করা অবস্থায় তারা মাদার জোয়ার্দ্দারের ছেলে মইজদ্দিন জোয়ার্দ্দারের কাছ থেকে ৬০ শতক ও হাজরা জোয়ার্দ্দারের ওয়ারেশ আমির জোয়ার্দ্দার, হানিফ ও মতিয়ার জোয়ার্দ্দারের নিকট থেকে ৪৫ জমি ১৯৯০ সাল থেকে বিভিন্ন সালে ও সর্বশেষ ২০১৫ সালে কোবালা দলিল মূলে ক্রয় করেন। দখলকৃত জমি চলতি সেটেলমেন্টে ১৯৬৮৫ নং আপত্তি কেসের মাধ্যমে খন্ড রেকর্ড প্রাপ্ত হয়েছেন তারা। জমির খাজনাদিও পারিশোধ করেছেন। পস্নটে মোট ১.২০ একর জমির মধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে বর্তমানে ৯১ শতক অবশিষ্ট রয়েছে। ৯১ শতকের দক্ষিণ মাথায় করিম জোয়ার্দ্দার তার নিজের ও মা-বোনের অংশ ভোগ দখল করে আসছেন। বিগত আম্ফান সাইক্লোনে ভেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে গেলে তারা তাদের ঐ জমির মাটি ২০ হাজার টাকায় বিক্রয় করেছিলেন। পস্নটের উত্তর মাথায় আবু বক্কর ছিদ্দিক গং তাদের ক্রয়কৃত ১.০৫ একর জমির মধ্যে ৮৫ শতক দখল করছেন। এবং অন্য পস্নটে ২০ শতক দখল করেন, কিন্তু বাঁধ ভেঙ্গে তা বিলীন হয়ে গেছে।
প্রতি পক্ষ করিম জোয়ার্দ্দার দিং দক্ষিণাঞ্চে দখল থাকার পরও উত্তরাংশে ছিদ্দিক দিং এর দখলীয় জমি, দোকান ও ভিটেবাড়ির অন্য ঘর জবর দখলের পায়তারা চালাতে থাকেন। তারা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সাতক্ষীরা পি-৩৬৭/২১ মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত বাদী (করিম জোয়ার্দ্দার) পÿ হাজির না হওয়ায় মামলা খারিজ করে দেন। এরপর তারা জোরপূর্বক উচ্ছেদের লÿে্য বিগত ইউপি নির্বাচনের সময় দোকান ঘরে তালা লাগিয়ে দেন। তখন উপজেলা চেয়ারম্যানের হস্ত্মÿেপে ও ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে তালা খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা থেমে থাকেনি। নির্বাচনের পর ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক দিপংকর বাছাড় দিপুর কাছে আবারও আবেদন করেন। ২৫ জুলাই তাদের বাড়িতে গিয়ে আমিন দ্বারা মাপকাজ করা হয় এবং উত্তরাংশে ভিটেবাড়ির মধ্যে খুটি পুতে সীমানা চিহ্নিত করা, দোকান (কাম বসবাসের ঘর)-এ তালা লাগিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি মান্দার জোয়ার্দ্দারের অংশের জমিতেও খুটি পুতে তাদের মধ্যে নেওয়া হয়। তারা (সিদ্দিক দিং) ধারনা করছেন, দোকান থেকে উচ্ছেদের সাথে সাথে তাদের বাড়ির মধ্যে ঘেরাবেড়া দিয়ে অবৈধ জমি ও ঘরবাড়ি থকে দখলচু্যত করার পাশাপাশি যাতয়াতের একমাত্র পথবন্ধ করে দিয়ে তাদেরকে অবরম্নদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ী পরিবারটি আয়ের একমাত্র সম্বল দোকান বন্ধ করে দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন। তারা দোকানের মধ্যে পিছনের অংশে বসবাস করে থাকেন, সেখানে ঢুকতে না পেরে ছোট্ট বাচ্চাদের নিয়ে পরের আশ্রয়ে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এব্যাপারে শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক দিপংকর বাছাড় দিপু জানান, তারা ২ জনের কাছ থেকে ৩৩ শতক জমি কিনলেও পাবে ২৩ শতক। ১০ শতক জমি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। ভোটের আগে দোকানে তালা দিলে আমি জানতে পেরে মেম্বার ইয়াছিনকে দিয়ে তালা খুলে দিয়েছিলাম এবং অভিযোগ করলে শালিসের মাধ্যমে ফয়সালা করা হবে জানিয়ে দেই। সোমবার উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেবের প্রতিনিধি বুদ্ধদেব সরকার ও আমার প্রতিনিধি মেম্বার ইয়াছিনের মাধ্যমে মাপ কাজ করা হয়। মেম্বার ইয়াছিন তালা খুলে ছিল, আবার সে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। তাদের রিপোর্ট আমাকে ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত্ম দিবেন তাই বাস্ত্মবায়ন হবে।