মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর নবগঠিত উপজেলার ইউএনও বদলির দেড় মাস পরেও, পদায়নের ঘোষণা দেয়নি কতৃপক্ষ পদটি এখনো শুন্য । এতে উপজেলার দাপ্তরিক কাজে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা বেড়েছে জনদুর্ভোগ সীমাহীন ভোগান্তি চরমে, আগের মতোই অফিসের কাজে যেতে হয় সাবেক উপজেলা ধর্মপাশায়। সৃষ্টি হয়েছে জনমনে ক্ষুভ আর হতাশা, এলাকাবাসীর প্রশ্ন উপজেলা বাস্তবায়নের ১ বছর পেরিয়ে গেলেও দাপ্তরিক কাজের সেবা পাচ্ছে না এলাকাবাসী । মধ্যনগর থানার হাওর বেষ্টিত চারটি ইউনিয়নের মানুষের দির্ঘদিনের দাবি ছিলো উপজেলা বাস্তবায়ন। সুবিধা বঞ্চিত যেমনটা অবহেলিত জনগোষ্ঠীর যোগাযোগ ব্যবস্থা, চিকিৎসা সেবা , প্রশাসনিক সেবা সহ বিভিন্ন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল, তারই প্রেক্ষিতে এলাকাবাসীর দাবী পূরণে মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় উন্নীতকরণ করা হয়েছে।
ভৌগোলিক কারণেই জেলার হাওরবেষ্টিত সুবিধাবঞ্চিত চারটি ইউনিয়ন নিয়েই জনদুর্ভোগ লাগবের লক্ষ্যে , প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বিবেচনায়, মধ্যনগরবাসীকে শ্রেষ্ট উপহার হিসেবে মধ্যনগর উপজেলাটি রূপান্তরিত করা হয়। ২০২২ সালের ১৯ জুলাই মাসে ইউএনও নাহিদ হাসান খানের যোগদানের মধ্য দিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। তবে দুঃখের বিষয় এখনো প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ না হওয়ার ফলে মধ্যনগর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলায় প্রশাসনের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মধ্যনগর উপজেলার ২৩ টি দপ্তরের ২১২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন উপসহকারী প্রকৌশলী, তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীসহ মাত্র নয়জন দায়িত্ব পালন করছেন। পার্শ্ববর্তী তাহিরপুর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে এখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলেও, অফিস করতে আসেনা মধ্যনগর। তাছাড়া মধ্যনগরের ইউএনও গত ২৮ শে মে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বদলি হওয়ায় ধর্মপাশার ইউএনও শীতেষ চন্দ্র সরকার এখন এ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন সপ্তাহে ১ দিন। ধর্মপাশা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা,সমবায় কর্মকর্তা, হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা মধ্যানগর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন, তবে মধ্যনগর অফিসে আসতে দেখা যায়না কোনো দিন। ফলে বাধ্য হয়ে সকল সেবাই ধর্মপাশা উপজেলাতেই নিতে হচ্ছে।
লায়েছ ভুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রভাষক মামুন মিয়া বলেন,দাপ্তরিক কাজে এখনো ধর্মপাশা যেতে হয় ফলে মধ্যনগর উপজেলা হলেও কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী ।
বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, উপজেলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলেও জনবল নিয়োগ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম না থাকায় এখনো উপজেলাবাসী কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত ।
মধ্যনগর উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম ফারুকী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এর সহযোগিতায় এবং স্থানীয়দের আন্দোলনের ফসল এই উপজেলা। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রশাসনিক ভবন ও ইউএনও না থাকায় উপজেলার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার জনগণ।
মধ্যনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান সঞ্জীব রঞ্জন তালুকদার টিটু বলেন,জনবল নিয়োগ ও প্রশাসনিক ভবন না থাকায় এখনো মধ্যনগরের জনগণকে ধর্মপাশা উপজেলার ওপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে।
এবিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী জানান,ইউএনও পদায়নের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত প্রদায়নের ব্যবস্থা করা হবে।
এম এ মান্নান,
মধ্যনগর,সুনামগঞ্জ
০১৭৭১৯২১৬৫২