মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এখন পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।পদ্মা সেতুর কারণে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে।
প্রতি বছরের মতো এবারেও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সাজসাজ রব কুয়াকাটার পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
সরেজমিনে দেখা গেছে,হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট গুলোতে কাজ চলছে।দোকানিরা নানা উপকরণের পশরা সাজাচ্ছেন। ট্যুরিজম বোটের মালিকরা তাদের পর্যটক বহনকারী বোট গুলোতে রঙের ছোঁয়ায় নৈপুণ্যতায় ভরপুর করছে।আচার ও চকলেট বিক্রেতারাও উন্নতমানের চকলেট ও আচারের সমাহার এনেছেন।শুঁটকি পল্লীর ব্যবসায়ীরা শুঁটকি সারিবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে রাখছেন।সব মিলিয়ে দম ফেলানোর ফুরসত নেই এখানকার ব্যবসায়ীদের।সেই সঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের মধ্যেও প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেছে।
হোটেল ও মোটেলের কর্তৃপক্ষ আশা করছে,এবার ঈদের পাঁচ দিনের ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকবে এখনকার জনপদ।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয় কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফের। তিনি বলেন,কয়েক বছর আগেও তেমন কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই আমরা কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের সেবা দিতে পারতাম। এখন পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকেই পর্যটকদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রস্তুতি নিয়েও।
তিনি আরও বলেন,যে পরিমাণ পর্যটকদের আগমন ঘটবে বলে মনে করছি সে পরিমাণে আবাসিক ব্যবস্থা নেই কুয়াকাটায়।আমাদের কমিউনিটি ট্যুরিজমকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই দেখছি,যাতে পর্যটকরা অন্তত রাত্রিযাপনটা করতে পারে।
কুয়াকাটা বার্মিজ আচার দোকানের পরিচালক মো. সোহাগ বলেন,‘দোকানে নতুন আচার আনছি।পুরোনো আচার ফেলে দিয়ে নতুন আচার সাজিয়ে রাখছি।গত বছরের ঈদে আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি হয়েছিল।আশা করছি এবারও হবে।
সৈকতে রাখা ছাতা বেঞ্চের মালিক মো. বেল্লাল বলেন, ‘পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে এসে ছাতার নিচে বসে সমুদ্র দেখেন। ঈদকে সামনে রেখে রঙের কাজ শেষ করেছি।নতুন করে তোষক বানিয়েছি।
ফাইবার বোটের মালিক হোসাইন আমির বলেন, ‘এবারের ঈদে বোট গুলো রঙের তুলিতে নতুনত্ব আনছি।আশা করছি, পর্যটকদের সেবা দিতে পারব।
কনফিডেন্স ট্যুরিজমের পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি পুরোপুরি শেষের পথে। পাঁচ দিন টানা ছুটিতে যেসব পর্যটক কুয়াকাটায় বেড়াতে আসবেন তাদের সেবা দিতে পারব।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সেক্রেটারি কে এম জহির বলেন,‘ঈদুল ফিতরের আগেই সব ট্যুরিজম সেন্টার তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষ করেছে। সামাল দিতে বেগ পেতে হবে না।
খাঁন প্যালেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল খাঁন জানান, ‘আমরা প্রতিটি কক্ষের চাঁদর পরিবর্তন করছি।পুরো রমজান মাসে বেশিরভাগই রুম খালি ছিল।ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এরই মধ্যে আমাদের অধিকাংশ রুম রিজার্ভেশন হয়ে গেছে।দিন যত যাচ্ছে সামনে ততই ফোনের মাধ্যমে কিংবা সশরীরে এসেও অনেকে রুম বুকিং করছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের এসআই হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঈদ মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে পর্যটকের আগমন ঘটবে কুয়াকাটায়।আমরা সেভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করে রেখেছি। পুরো সৈকতটি আমরা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখতে সক্ষম হবো।