বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বর্বর অপারেশন সার্চলাইটের পর মানুষ আশ্রয় খুঁজতে থাকে শহর থেকে গ্রামে এবং গ্রাম থেকেও আরও নিরাপদ জায়গায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৭ ই মার্চের পরোক্ষ স্বাধীননতা ঘোষণার পরই বাঙালি বুঝতে পারে পাকিস্তান দমন নিপীড়নের পথ বেছে নিচ্ছে এবং ২৫ শে মার্চ লেট নাইট বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার আগে ইপিআর এর ওয়ারলেসে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন যা মেজর জেডএখান মুজিবকে কে গ্রেফতার করতে যেয়ে দেখতে পান এবং তিনি তার লিখিত বইা ‘The way it was’ লিখেছেন এবং পাকিস্তানের ‘ডন’ পত্রিকা সেই বরাত দিয়ে সারা বিশ্বে প্রকাশ করে। উল্লেখ্য, বেলাল আহম্মেদ তখন ঢাকা রেরিও তে চাকুরী করতেন। তিনি ১০ K W এর একটা রেডিও ট্রান্সমিটার এনে কালুরঘাট স্হাপন করেন যার শব্দ দূরত্ব বহন শক্তি ছিলো ১৫ কিঃমিঃ in equal surface. যেহেতু চিটাগং টিলায় ভরা হয়তোএমন uneven surface distance ১০ কিঃমিঃ হতে পারে, সেখান থেকে আওয়ামী নেতা মুস্তাফিজ, সাংসদ সন্দ্বীপ, আঃ হান্নান সাংসদ বার বার নিজেস্ব ঘোষনা ও বঙ্গবন্ধুর সাইক্লোস্টাইল কপি শহরে বিতরন সহ এই বেতার কেন্দ্র থেকে ঘোষনা করেছেন বার বার।
বেলাল আহমেদের ভাষায় চিটাগং শহরে যুদ্ধ রত মেজর রফিক কো এনে কিছু বলাতে চেয়েছিলেন। তিনি যুদ্ধে ব্যস্ত বলে আসতে অপারগতা জানান, সব শেষে বলেছিলেন সেনা বাহিনীর লোক যদি একান্ত চাই
আমার গোয়েন্দা খবর কে একজন অফিসার শোয়াত শীপ অস্ত্র খালশের পর কালুরঘাট মাঠের ভিতর অবস্থান নিয়েছেন, তাকে ডাকতে পারো।
জিয়াকে ডেকে আনলে তিনি ও অন্যদের মত একটু systemic জনগনের প্রতি আহ্বান জানান সেখানে বঙ্গবন্ধুর নামটা জুড়ে দিয়ে।
উল্লেখ্য বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার পর,তখনই বাঙালি যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বপাকিস্তান কর্মরত ছিলো তারা তাদের ট্রুপস নিয়ে বেরিয়ে নিরাপদ স্হানে পজিশন নেন দু’একজন মেজর কর্নেল ছাড়া!
বাংলাদেশের ভিতর থেকে টাঙ্গাইলের কাদের সিদ্দিকী বাহিনী, গোপালগঞ্জের হেমায়ত বাহিনী, বরিশালের কুদ্দুস বাহিনী এমনি ১৩ টা বাহিনী গড়ে ওঠে দেশের ভিতর প্রতিবেশী দেশে না যেয়ে।
পাকিস্তানিদের হত্যা ধর্ষণ অগ্নিসংযোগ লুটপাট বেড়ে গেলে বাঙালি যুবক রা ভারতে যেয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে আসে।
বাগেরহাটের মোল্লাহাট, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর থানায় প্রচুর হিন্দু ছিলো। রজব আলী বলে বাগেরহাটের একজন ‘খান জাহানের মাজার’ রক্ষক নেতা ছিলেন তিনি বিরাট রাজাকার বাহিনী গঠন করে চিতলমারী বাজার পর্যন্ত লুটপাট হত্যা ধর্ষণ শুরু করেন। তখন ভারত থেকে ফিরে এসে মোল্লাহাটের চর কুলিয়া, চালটুরি, আড়ুয়া বর্নি, কচুয়া বাগেরহাট সদরের সন্তোষপুর মুক্তি যোদ্ধা ক্যাম্প গড়ে ওঠে। সন্তোষ পুর ক্যাম্প ছিলো অনেক বড় ক্যাম্প যার ব্রাঞ্চ চৌকি ছিলো ধোপা খালি হাইস্কুল ও বলেশ্বরের পাড়ে খলিশা খালি ষষ্টি হালদারের বাড়ী। পাকসেনারা হালদার বাড়ী বলেশ্বর নদী দিয়ে এসে আক্রমণ করে মেশিন গানের ব্রাশ ফায়ারে ৪০০ উপরে মানুষ হত্যা করে। সে বধ্যভুমি আজও অরক্ষিত তবে চিহ্নিত করা আছে। উল্লেখ্য যে পাকসেনা আক্রমণের পর সন্তোষপুর ক্যাম্পের কমান্ডার জনাব ‘তাজুল ইসলাম’ হালদার বাড়ী ও ধোপা খালাি চৌকি (সাব ক্যাম্প) দুটো প্রায় ২৫ জনের মত মুক্তিযোদ্ধা দিয়ে তৈরি করেন।
ধোপা খালী ক্যাম্প কমান্ডার ছিলো ‘প্রফেসর ফরহাদ হোসেন।’ তিনি তখন ছাত্র। আমার নিকটতম বন্ধু।
হালদার বাড়ী দোতলা বিল্ডিং টা যে পরিবার মুক্তিযোদ্ধা
দের বসবাসের জন্য নিজ জীবনের ঝুকি নিয়ে অন্যত্র বাস করে দেশের জন্য ত্যাগ করেছিলেন আজ ও স্বাধীনতার ৫০/৫২ বছরে তাদের বিল্ডিং টা মেরামত করে দেয়া হয় নাই বা কোন কেউ সরকারের দৃষ্টিতে আনেন নাই। আজ ও দেখা যায় পাক সেনাদের ২/৩ ইঞ্চি মর্টারের শেলের ছিদ্র, তার মধ্যেই সেই পরিবার বসবাস করেন।
সাংবাদিকের ক্যামেরায় উঠে এসেছে ছবি। আমি সে সময় কয়েকবার সন্তোষপুর ক্যাম্পে গেলেও হালদার বাড়ী যাই নাই।
স্হানীয় প্রশাসনও আওয়ামীলীগের নেতাদের কে অনুরোধ বিষয়টা মাননীয় সাংসদের দৃষ্টিতে আনলে অবশ্যই তিনি যথাযথ ব্যবস্হা নিবেন কারন এ অঞ্চলের উন্নয়নে তিনি মুক্ত এবং সবসময় তৎপর!