সময়ের সংলাপঃ-
কোথায় সুখ????আমরা কোথায় পাব সেই সুখ?? আমি এখন সুখের সন্ধানে বেরিয়েছি।
সুখের অভিযানে প্রথমেই আমি আমার মামার বাড়িতে গেলাম সুখ খুঁজতে। মামির ছেলেটা খুবই অবাধ্য।সে মামিকে খুব জ্বালায়।সে মামিকে বলে, "খুব খাচ্ছি,সুখ পাচ্ছি"।
আমি সেসময় রুমে গিয়ে দেখি মামাতো ভাই টিভি দেখতে দেখতে খাবার খাচ্ছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি সুখী???
সে ছিল উশৃঙ্খল, আমার ঘাড়ে বসে নাচতে থাকে।রেগে গিয়ে তাকে ধপাস করে মাটিতে ফেলে দেই। আমি তাকে আবারও বললাম,"তুমি কি সুখী?"
সে উত্তর দিল,"না"।
আমি অবাক হয়ে বললাম,একটু আগে তো তুমি নিজেই বলেছ,তুমি খাবার খাচ্ছ, সুখ পাচ্ছ।
মামতো ভাই বলল,"আরে না!!তখন তো খাবার খাচ্ছিলাম,তাই সাময়িক তৃপ্তি মেটাতে কথাগুলো বলি।"
আমি এখানে কোন সুখী ব্যক্তি পেলাম না।
আমি এখন আমার এ অভিযান সমাপ্তি করে নানুর বাড়ি যাব সুখী মানুষ খুঁজতে।
বিকেলের ট্রেনে গেলাম নানুবাড়ি।
সেখানে ছোট মামাকে জিজ্ঞেস করলাম,"আচ্ছা মামা,তুমি কি সুখী?"
মামা বললেন,"কই,না তো সুখী না ।কত অভাব-অনটন লেগেই থাকে বাড়িতে। "
আমি চুপ হয়ে গেলাম।এখানেও আমি সুখী মানুষ পেলাম না।
সেখান থেকে বেড়িয়ে আমি চলে গেলাম এক আত্মীয়
দের বাড়িতে।
তাকেও আমি ঠিক আগের মতই প্রশ্ন করি??
এবারো একই উত্তর পাই। আমি লোকটিকে জিজ্ঞাসা করি,"তোমার তো অনেক টাকা,তাহলে তুমি তো সুখী "। উত্তরে তিনি বললেন, আমি লাখপতি কিন্ত কোটিপতি না।আমার আরো অনেক টাকা দরকার।
(মানুষ স্বভাবতই যত পায় তত চায়-- কথাটি মনে মনে ভাবি)
উনাকে সুখী না দেখে আমি আমার নিজের বাড়ির দিকে রওয়ানা দেই।
রাস্তায় হাটতে গিয়ে দেখি একটি ছোট ছেলে রাস্তায় বসে কাঁদছে।ছেলেটির বয়স পাঁচেক হবে।বুঝতে পারি ছেলেটি ভিখারি। আমি জানি ছেলেটি দুঃখী। তবু জিজ্ঞেস করি,"বাবু,তুই কি সুখী??"
সে অবাক করে দিয়ে প্রসন্ন বদনে উত্তর দিল,"হ্যা,আমি প্রকৃত সুখী"।
আমি বলি,"তোর তো টাকা পয়সা কিছু নেই।তুই কিভাবে সুখী??"
সে বলল,"টাকা পয়সায় প্রকৃত সুখ থাকেনা।টাকা পয়সার সুখ তো সাময়িক।"
ছেলেটি আরো বলল,"আমি অনেক ভাগ্যবান যে আমার কাছে মা আছে!যদি সুখ পেতে চাও, মায়ের সেবা করে যাও।
মায়ের মত আপন কেউ হয়না।""
সনাতন ধর্মে বর্নিত আছে,মা স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।
আমি তাকে বললাম,শুধু মা কেন???অন্যান্য আত্মীয়পরিজন তো পাশে থাকে।"
সে আমাকে অবাক করে দিয়ে আরো বলল," যে আত্মীয় স্বজন পাশে থাকে তা সাময়িক।বরং জন্ম থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মা শুধু সঙ্গ দেবে।
স্ত্রী সঙ্গ দেবে ঘরের আঙ্গিনা পর্যন্ত।সমাজ সঙ্গ দেবে শ্মশান/কবর পর্যন্ত।
কিন্ত মা আজীবন সঙ্গ দেবে।অনেকে ভাবে টাকা থাকলেই সুখ পাওয়া যায়। কিন্ত প্রকৃতসুখ নিজের মনের প্রশান্তির মাঝে গৃহীত। "
ছলছল চোখে তাকিয়ে বললাম,"তোর বয়স মাত্র পাঁচ, আর এত কঠিন তত্ত্বজ্ঞান আমাকে শ্রবন করালি??"
ছেলেটি অপরুপ সুন্দর কন্ঠে বলল,"শিক্ষা দেবার/ নেবার কোন বয়স হয়না!"
নীতিকথা :-
সবসময় ভাবতে হবে,"অন্যের যা নেই,তা আমার আছে।"
নিজের আত্মশুদ্ধিতেই সুখ,নিজের প্রশান্তিতেই সুখ।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।