এস এম তাজুল হাসান সাদ, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার কাঁচাবাজার গুলোতে বাজার নিয়ন্ত্রণে বেঁধে দেওয়া দাম বাস্তবায়নে প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের পর আলু শূন্য হয়ে পড়েছে কালিগঞ্জের হাট-বাজারগুলো। কোন দোকানেই মিলছে না আলু। এতে অনেকটাই ভোগান্তিতে পড়েছেন আলু ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে আলুর দাম সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি হওয়ায় আলু আনছেন না তারা।
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে হিমসিম অবস্থার মধ্যে গত ১৪ সেপ্টেম্বর চারটি পণ্যের দাম বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে প্রতি কেজি আলুর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ টাকা। আর প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, ডিম প্রতি পিছ ১২ টাকা আর প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি করতে হবে ১৬৯ টাকায়। সরকার দাম বেঁধে দিলেও তা বাজারে বাস্তবায়ন হয়নি।
এরমধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আজহার আলী কালিগঞ্জের মৌতলা পাইকারী বাজার এবং কৃষ্ণনগর বাজার সহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে পন্য বিক্রয় হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করেন।
মনিটরিং এর পর থেকে আলু শূন্য হয়ে পড়ছে কালিগঞ্জের অধিকাংশ হাট-বাজার।
সরেজমিনে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কালিগঞ্জ,শ্যামনগর দুই উপজেলার সর্ব বৃহৎ পাইকারি কাঁচাবাজার মৌতলা গোল আলু শূন্যে একাধিক আড়ৎ ঘুরেও মেলেনি আলুর দেখা। এতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।
আলুর পাইকারী ব্যবসায়ী শ্রী মধুসুদন ঘোষ ও মো: আব্দুল্লাহ বলেন এখানে আলু আসে জয়পুরহাট ও ঠাকুরগাঁও থেকে, সেখানে আড়ৎগুলোতে আলু কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৭ টাকা,খরচ সহ আমাদের প্রতি কেজি আলু ৩৯/৪০ টাকা বিক্রয় করতে হবে কিন্তু সরকারী নির্ধারিত দাম ৩৫ টাকা যে কারণে আলু বিক্রয় করা সম্ভব হচ্ছেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন আড়ৎগুলোতে আলুর দাম প্রতি কেজি ৩৭ টাকা নিলেও আমাদেরকে ক্যাশ মেমো করে দিচ্ছে ২৮ টাকা এভাবে লুকোচুরি করে আলু বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছেনা।কৃষ্ণনগর বাজারের আলু কিনতে আসা ক্রেতা সুশান্ত ঘোষ বলেন, প্রশাসনের অভিযানের পর থেকে সারা বাজার ঘুরে কোথাও আলু পাওয়া যাচ্ছেনা।
অনেকে আবার পরিস্থিতির জন্য ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। রতনপুর বাজারের মনির হোসেন সহ অনেকেই বলেন, এভাবে হটাৎ করে আলু যাবে কোথায়? খোঁজ নিলে গুদামগুলোতে আলু পাওয়া যাবে। প্রশাসন যদি পাইকারদের গুদামগুলোতে অভিযান চালায় তবে সাধারণ ক্রেতারা ধার্য মূল্য আলু পাবে।
একাধিক খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ৪০ থেকে ৪২ টাকা। তাই খুচরা বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে তা বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ কারণে তারা আলু আনছেন না, বিক্রিও করছেন না।মৌতলা বাজার কমিটির সভাপতি শেখ মাহমুদুল হক বলেন, সরকারের বেঁধে দেয়া ৩৫ টাকা দামে আলু বিক্রি করতে বলায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাইকারি বাজারে ৪২ টাকা দরে আলু কিনে ৩৫ টাকায় বিক্রি সম্ভব না। এতে ব্যবসায়ীরা মোকাম থেকে আলু আনা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বাজার আলু শূন্য।
এই পরিস্তিতে সরকারের জরুরী পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে দ্রুত ভোক্তা পর্যায়ে আলুর সরবরাহ নিশ্চিত করবে ও প্রসাশনের নজরদারীতে সাধারণ ক্রেতারা বাজারে ধার্য মুল্য আলু পাবে এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সচেতন মহল।