শিমুল হোসেন,নিজস্ব প্রতিবেদক।
কালিগঞ্জে বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে শতাধিক গাছ জোরপূর্বক কাটার অভিযোগ উঠেছে স্হানীয় একটি পক্ষের বিরুদ্ধে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের প্রবাজপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় চলমান দেওয়ানী মামলার প্রতিপক্ষরা আইন মান্য করলেও স্হানীয়রা আইন অমান্য করে বিরোধপূর্ণ জমি দখলের চেষ্টা, বাদীপক্ষের ভয়ভীতি ও হুমকি হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছে বলে ভূক্তভোগীদের অভিযোগ।
জানা গেছে, উপজেলার প্রবাজপুর মৌজায় “ক” তপশীল বর্ণিত সম্পত্তির মধ্যে হইতে “খ” তপশীল বর্ণিত এসএ ২ নং খতিয়ানে ১৪২ নং দাগে (বর্তমানে আরএস ১ নং খতিয়ানে ১৯৪ নং দাগ) ১৩ শতাংশ সম্পত্তির উপর চলাচলের পথ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
এ নিয়ে গত ৬ জুন প্রবাজপুর এলাকার মৃত শেখ আবু হায়দারের ছেলে আবু হাবিব, আবু সাঈদ, আবু মাসুদ দিং বাদী হয়ে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, কালিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), বসন্তপুর ইউনিয়ন ভূমি সরকারী কর্মকর্তা,মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যানকে বিবাদী করে ১৯৪/২৩ নং দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে তার কিছু দিন যেতে না যেতেই ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের অবসারপ্রাপ্ত গ্রাম পুলিশ হায়াত আলী গাজীর স্ত্রী আমেনা খাতুন বাদী হয়ে প্রবাজপুর এলাকার আবু সাঈদ, আবু মাসুদ, গণেশ কাহার সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সাতক্ষীরার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৭ ধারা মোতাবেক ১৭২৪/২৩ নং মামলা দায়ের করেন। আদালত নালিশী সম্পত্তিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। পুলিশ আদালতের নির্দেশে নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বাদীর স্বামী হায়াত আলী, প্রবাজপুর এলাকার শেখ রফিকের ছেলে নূর ইসলাম, মৃত কৃষ্ট কাহারের ছেলে উত্তম কাহার, মৃত বকুল কাহারের ছেলে শিবু কাহার, শিবু কাহারের ছেলে কার্তিক কাহার, মৃত তারাপদ কাহারের ছেলে অশোক কাহার সহ বেশ কিছু দুষ্কৃতিকারী নালিশী সম্পত্তিতে বিবাদী গংদের লাগানো বাঁশ গাছ, কলা গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ গাছালি কেটে ক্ষয়ক্ষতি করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নালিশী সম্পত্তির উপর চলাচলের জন্য সরকারি পথের কোন সন্ধান মেলেনি। উক্ত স্হানে বিভিন্ন প্রকার গাছ গাছালি কেটে দেওয়া হয়েছে। বৈদ্যুতিক তারের উপরে বাঁশ কেটে ফেলে রাখায় সেখানে বিপদজনক অবস্তায় রয়েছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমনটি আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। ভূক্তভোগী আবু মাসুদ বলেন, এসএ খতিয়ানের পথ ছিল, বর্তমান আরএস খতিয়ানে উক্ত সম্পত্তি জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ড হয়েছে।
এই সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য আদালতে দেওয়ানী মামলা চলমান আছে। তারপরও কতিপয় ব্যক্তি জোরপূর্বক বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে ক্ষতিসাধন অব্যাহত রেখেছে। পিটিশন মামলার বাদী আমেনা খাতুন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিবাদী পক্ষ সরকারি পথ দখল করে আসছিল। সম্প্রতি কোর্ট থেকে পথ উন্মুক্ত করার জন্য আদেশ পেয়েছি। তাই আমরা বন-জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করেছি।
তবে এ ঘটনায় অন্যান্য অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল হাকিম ও ইউপি সদস্য কলিম গাজী বলেন, সরকারি পথটি উদ্ধারের জন্য যা যা করণীয় আমরা করবো।
বসন্তপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জিএম ফয়েজ আহমেদ বলেন, এ ব্যাপারে ইতিপূর্বে সেখানে যাওয়া হয়েছে। আবারও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সরেজমিনে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে। এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন রহমান বলেন,আমরা বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করেছি।