গত এক বছর ধরে শ্বশুরের ধষর্ণের শিকার হয়ে ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে পুত্রবধূ। স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন ও শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ায় ওই ভুক্তভোগীকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করতো শ্বশুর বজলুর রহমান সরদার (৪৫) নামে ওই ধর্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালি ইউনিয়নের পূর্ব নারায়নপুর গ্রামে। এঘটনায় ধর্ষণের শিকার পুত্রবধূ বাদি হয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে শশুরের নামে পিটিশন ৮৯ / ২৩ মামলা দায়ের করে।
বিজ্ঞ আদালত মামলাটি কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে এফ,আই,আর হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে অফিসার ইনচার্জ মামুন রহমান গত ১ মার্চ মামলাটি থানায় এজাহার হিসেবে গণ্য করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেফতার এড়াতে লম্পট শ্বশুর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
মামলা সূত্রে এবং ভুক্তভোগী জানান,শারীরিক দুর্বলতার কথা গোপন রেখে পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের বজলুর রহমান সরদারের ছেলে মাসুদুর রহমানের সঙ্গে গত ২০২২ সালের ২৫ জুলাই পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর।
বিয়ের এক মাস পরে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে উপজেলার শেরআলী ক্লিনিকে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের ফাঁকা কেবিনে অসুস্থ অবস্থায় পুত্রবধূকে জোর করে ধর্ষণ করে শ্বশুর বজলুর রহমান। পরবর্তীতে বাড়িতে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দীর্ঘ ১১ মাস ধরে পুত্রবধূকে ধর্ষণ করতেন শ্বশুর নামের ওই লম্পট। শ্বশুরের ধর্ষণের শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়ে ওই ভুক্তভোগী। নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেও লোকলজ্জার ভয়ে ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানায়নি ওই গৃহবধূ।
পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে শ্বশুর বাড়ি থেকে সুকৌশলে বাবার বাড়িতে পালিয়ে যায় ভুক্তভোগী। বাড়িতে যেয়ে সমস্ত ঘটনা খুলে বলে তার স্বজনদের। অসুস্থ অবস্থায় বাবার বাড়িতে পালিয়ে আসার পরে চিকিৎসার জন্য ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তার মা। হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টের মাধ্যমে জানতে পারেন ভুক্তভোগী ১২ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে জোর পূর্বক গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকে প্রভাবশালী শ্বশুর। উপায় না দেখে নিজেকে মামলা থেকে বাঁচাতে স্থানীয় নেতাদের দিয়ে ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মিমাংসার চেষ্টা চালান শ্বশুর বজলুর রহমান। বিষয়টি কোন ভাবে আপোষ না করে শ্বশুরের বিচারের দাবিতে আদালতের মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ।
থানায় মামলা রেকর্ড হওয়ার পর থেকে পালিয়ে রয়েছে তার শ্বশুর। তবে তিনি পালিয়ে থাকলেও বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীকে ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে ধর্ষক শ্বশুর বলে জানান ভুক্তভোগী।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নকিব হোসেন জানান, আদালতে মামলার পর থেকে আসামি পালিয়ে রয়েছে। এছাড়া আসামিকে আটকের জন্য অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
আরাফাত আলী
মোবাইল ০১৭২৩৫৩০৪০০