মুজাহিদ সাতক্ষীরা ব্যুরোঃ
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে ইছামতি নদীর তীর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সম্পত্তি দখল করে অবৈধ বালুর ব্যবসা করছেন প্রভাবশালীরা। নদীর তীর ও কামদেবপুর-খারাট সড়ক ঘেঁষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় বালুর স্তুপ করে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ওই এলাকাবাসী ও কামদেবপুর-খারাট সড়কে চলাচলরত যানবাহন পথচারী। বালুর পানি সড়কে এসে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। জানা গেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার ৮ নং ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের কামদেপুর মৌজার পানি উন্নয়ন বোর্ড বিআইডব্লিউটিএ এর প্রায় ৩ বিঘা জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন বালুর ব্যবসা করে আসছেন ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের রহিম আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল বারী কারিগর, নকুল চন্দ্র সাহার ছেলে লক্ষণ ও নিমাই। কামদেবপুর-খারাট সড়কের পাশে বালু বিক্রি করায় এখানে প্রতিনিয়তই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বালুর গাদির পাশেই পাঁচশতাধিক পরিবারের জনবসতি এলাকা। বাতাসের গতি একটু বাড়লেই এখানকার বালু উড়ে এসে ঘরের ভিতরে পড়ে। এ সকল বালির কারণে ছোট বড় সকলেই ভুগছে ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে। শুধু তাই নয়, বাতাসে এ বালু উড়ে পড়ে সড়কের চলাচলরত যানবাহন ও পথচারীদের চোখে মুখে। এতেই প্রতিনিয়তই এখানে ঘটছে দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউবিএ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলেও এর কোন সুফল পাননি। এ সড়কে নিয়মিত চলাচল মোটরসাইকেল চালক আব্দুল জব্বার, ইব্রাহিম মিয়া বলেন, কামদেবপুর থেকে এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন খারাট আসা-যাওয়া করি। এরকম একটি ব্যস্ততম সড়কের পাশে বালুর স্তুপ দিয়েছে, বাতাস আসলেই বালু চোখে এসে পড়ে। তখন চোখে কিছু দেখতে পায় না। এ বালুর কারণে চোখে অনেক ক্ষতি হয়। ইজিবাইক চালক ইয়াকুব আলী জানান, আমি ভাড়াসিমলা মোড় থেকে খারাট পর্যন্ত প্রতিদিন অটো চালায়। কামদেবপুর এলাকায় পৌঁছালে ইছামতি নদীর তীরে বালুর গাদি থেকে বাতাসের সাথে বালু উড়ে যাত্রীদের শরীরসহ পুরো গাড়ির গ্লাস বালুতে ভরে যায়। অনেকের চোখেও বালু যায়। এ কারণে আমাদের অটো ড্রাইভার, যাত্রী ও সাধারণ জনগণের চলাচল করতে অসুবিধা হচ্ছে। এলাকার এক গৃহবধূ জানাই, রাস্তার পাশেই স্তূপ করে রাখা বালুর গাদি থেকে বালু উড়ে এসে আমাদের খাবারের উপর পড়ে খাবার নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল বারি কারিগরের সাথে মুঠো ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন রেখে দেন। এ বিষয়ে ৮ নং ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান বলেন, আব্দুল বারীর বালুর ব্যবসার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে ওই এলাকার অনেকেই আমার কাছে বিচার নিয়ে আসছে। এ বিষয়ে আব্দুল বারী কারিগর সহ লক্ষণ, নিমাই কথা বলার জন্য তাদের ডাকলে তারা আসে নাই। তাদের বালুর ব্যাপারে আমি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেছি। তারা প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেবে। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর কুমার দাশ বলেন, বিআইডব্লিউএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে বালুর স্তুপ করা হলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।