হাফিজুর রহমান, কালীগঞ্জ থেকে:
ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রীর গর্ভের সন্তানের পিতৃত্বের দাবিতে ও ধর্ষক মসজিদের ইমাম হাবিবুল্লাহ এর গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের চৌহমনী বাজারের প্রধান সড়কে( রবিবার ২৩ অক্টোবর) বেলা১১ টার সময় ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন নাগরিক সমাজের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
উক্ত কর্মসূচিতে আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জি, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তপন মন্ডল, আব্দুল জব্বার, মনিরুজ্জামান, ওকালত আলী, আবুবক্কার গাইন, আনসার আলী প্রমূখ। বক্তারা বলেন উপজেলার রত্নেশ্বরপুর গ্রামের মহাসিন আলীর লম্পট পুত্র হাবিবুল্লাহ পার্শ্ববর্তী গোবিন্দপুর জামে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করতো। উক্ত মসজিদে কোরআন শিক্ষার অন্তরালে রত্নেশ্বর পুর গ্রামের অসহায় দিনমজুর আজগার আলী মল্লিকের কন্যা ডি, আর, এম আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আসমা খাতুন কে বিয়ের ফাঁদে ফেলে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তোলে। সেই সুবাদে গত ১৫/৮/২০২১ ইং তারিখে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে লম্পট ইমাম হাবিবুল্লাহ তাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এতে করে কলেজ ছাত্রী গর্ভধারণ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। একপর্যায়ে আসমা তার বাবা-মাকে ঘটনা খুলে বললে বিষয়টি জানার পর ইমাম হাবিবুল্লাহকে জানালে সে প্রথমে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে। পরে বিয়ে করতে অস্বীকার করলে ঘটনার বিচার চেয়ে ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী শওকত হোসেনকে জানায়। চেয়ারম্যান বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে কালক্ষেপণ করায় গত ৩/ ৮/ ২০২২ ইং তারিখে আসমা একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে। অতঃপর ঘটনাটি নিয়ে আবারও গত ১৭/ ৮/ ২০২২ তারিখে চেয়ারম্যানের নিকট গেলে তিনি বিচার করতে অস্বীকার করলে চেয়ারম্যানের সহায়তায় ধর্ষক ইমাম হাবিবুল্লাহ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় চেয়ারম্যান গর্ভের সন্তান একাধিক ব্যক্তির বলে তাড়িয়ে দেয়।
কোন উপায়ান্তর না দেখে সন্তান কোলে নিয়ে থানায় গিয়ে কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে দর্শক ইমাম হাবিবুল্লাহকে আসামি করে গত ২২/৮/ 2022 ইং তারিখে ৯(১)২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ধারা মোতাবেক থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। মামলা নাম্বার ২৫। মামলা দায়েরের পর হতে২ মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ আজও পর্যন্ত ধর্ষক হাবিবুল্লাহকে গ্রেফতার করতে পারিনি। এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী মানববন্ধন কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের জানান মামলা করার পর হতে পুলিশ তার কোনো খোঁজই নেইনি। সে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন সন্তানের পিতৃত্ব দাবি গ্রেফতার এবং ন্যায় বিচারের দাবি জানান। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান গাজী শওকত হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন আমি ৫ মাস পর জানতে পেরে সমঝোতা করতে ব্যর্থ হই। তবে সন্তানের বিষয়টি নিয়ে তিনি একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে সাংবাদিকদের নিকট তুলে ধরেন। এই ধরনের ঘটনা চাপা রেখে প্রশাসনকে না জানিয়ে বিচার করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর মেলেনি।