সজল রায়, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম রেজার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের সাতপাখিয়া পুকুরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬ নং ঘরটি মন্টু ব্যাপারীর কাছে বিক্রি করেন তিনি। মন্টু ওই এলাকার মৃত আবুহার বেপারীর ছেলে।
গত ২০ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকায় বরাদ্দের ঘরে শুতে পারেননা বৃদ্ধ, সংসার পেতেছেন আরেকজন শিরোমানে ' যার নামে বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর, তিনি বসবাস করছেন ঘরের বারান্দার এককোণে। আর খাট পালঙ্ক নিয়ে আরাম - আয়েশ ঘরের কক্ষে মধুর সংসার গড়ে তুলেছেন এক প্রভাবশালী পরিবার। অনিয়মের এমন চিত্র কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়নের সাতপাখিয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সাতপাখিয়া গ্রামে ১৩ টি ঘর নির্মাণ করেন উপজেলা প্রশাসন। তন্মধ্যে একটি ঘরের বরাদ্দ পেয়েছেন স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ হারুন অর রশিদ (৭৫)। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে ঘর ও ঘরের চাবি প্রদান করা হয়।
কিন্তু সরকারি এই ঘর দখল করে নেন স্থানীয় মো. আবুহার ব্যাপারীর প্রভাবশালী ছেলে মো. মন্টু ব্যাপারী (৪০)। ফলে বরাদ্দ পাওয়ার প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত হলেও ঘরের কক্ষে মাথা রেখে এক দিনও ঘুমাতে পারেননি অসহায় এই বৃদ্ধ। কনকনে শীত উপেক্ষা করে বসবাস করছেন ওই ঘরের বারান্দার এককোণে। আর খাট, পালঙ্ক, তোশক, গ্যাসের চুলাসহ ঘরে আরাম আয়েশে বসবাস করছেন ওই প্রভাবশালী পরিবারটি।
তবে দখলদার মন্টু ব্যাপারীর স্ত্রী মোছা. মুসলিমা খাতুন বলেন, ' ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমের মাধ্যমে এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে গত ২৪ এপ্রিল ঘরটি ক্রয় করেছি। আমার কাছে লিখিত হস্তান্তর নামা আছে। হারুন বৃদ্ধ মানুষ। তাই ঘরের বারান্দায় থাকার জায়গা করে দিছি। তিনি আমাদের তাই খেয়ে বারান্দায় থাকেন। আর আমরা ঘরের ভিতরে থাকি।
আজ বুধবার দুপুরে সরজমিনে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের দরজায় ঝুলছে তালা। আর ঘরের মালিক বারান্দার এক কোনায় কাপড় ও টিন দিয়ে ঘেরা মেঝেতে বসে আছেন। সাংবাদিকদের টের পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মানুষ ছুটে আসেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী হারুন অর রশিদ বলেন, আমার কিছু বলার নেই। বললে কি টিকে থাকতে পারব। খাচ্ছি, ঘুরছি আর বারান্দায় থাকছি।
বৃদ্ধ হারুনের মেয়ে খাদিজা খাতুন বলেন, বাবা অসুস্থ। যে যা বলে তাই বোঝে। মন্টুরা বাবাকে পাগল বানায়া ঘরে থাকে। আর কনকনে শীতে বাবা থাকেন বারান্দায়। আমরা চাই বাবার ঘরে বাবায় থাকবে। আমরা দেখাশোনা করতে চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমই এই ঘটনার মূলহোতা। তিনি টাকা নিয়ে ঘর বিক্রি করে ঝামেলা বাঁধায় রাখছে। ঘটনার একটা সমাধান হওয়া দরকার। ভাইস চেয়ারম্যানকে আইনের আনা উচিৎ।
এবিষয়ে জানতে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম রেজা'র মুঠোফোনে কলা হয়। তিনি বলেন, আমার একজন মারা গেছেন, সেখানে আছি আমি। কল দেওয়ার ১৫ মিনিট পরে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে দেখা মিলে ভাইস চেয়ারম্যানকে। এসময় এবিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস বলেন, যার নামে ঘর বরাদ্দ, তাঁর দখলেই ঘরটি থাকবে। আর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বিক্রি বা নিয়ম বহির্গত হস্তান্তরের কোনো সুযোগ নেই। হারুন সাহেবের ঘরটি হস্তান্তর বা বিক্রির একটি ডকুমেন্ট পাওয়া গেছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, যদি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নিয়ে কোনো লেনদেন হয়। এবং লেনদেনের ঘটনায় যারা জড়িত থাকবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।