এম এ মান্নান,বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সুুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় হেনা আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূ হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার স্বামি সোহেল আহমেদসহ জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালণ করা হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে নিহত হেনা আক্তারের স্বজনদের উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার প্রায় পাঁচ শতাধিক লোক অংশ গ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিহতের বড় বোন শিক্ষিকা নূরজাহান বেগম, বড় ভাই অলি-উল্লা, সাংবাদিক নূরুল হুদা, শিক্ষার্থী মেহেদি মুশফিকুর রহমান, মামুন মিয়া, সোহেল মিয়া, ইভা মনি প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, গত ২ বছর আগে উপজেলা সদর ইউনিয়নের বাহুরটিয়া কান্দা গ্রামের শাহেদ আলী তালুকদারের ছেলে সোহেল মিয়ার সাথে একই উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের ছফি মিয়ার মেয়ে হেনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে গৃহবধূ হেনা আক্তারের উপর তার স্বামি সোহেল আহমেদসহ তার পরিবারের লোকজন শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। নির্যাতন সইতে না পেরে ওই গৃহবধূ বেশ কয়েকবারই বাবার বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য হন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে তাদেরকে বারবারই মিলমিশ করে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ওই গৃহবধূর স্বামি সোহেল মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন হেনা আক্তারকে তার বাবার বাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু সে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনতে অস্বীকার করে। এতে তার স্বামি সোহেলসহ পরিবারের লোকজন তার উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তারা পূঃনরায় গৃহবধূ হেনা আক্তারের উপর শারীরীক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। এক পর্যায়ে তারা গত ২০ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে গৃহবধূ হেনা আক্তারকে বেধরক মারধোর করে। এক পর্যায়ে তারা জোর-পূর্বক হেনার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে তাকে হত্যা করে এবং তারা এ বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে পুলিশ নিহত হেনা আক্তারের লাশের সুরতহাল করার সময় তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় বলে সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করে। পরে ঘটনার ৭ দিন পর গত ২৭ অক্টোবর নিহত হেনা আক্তারের বড় অলি-উল্লা বাদি হয়ে স্বামি সোহেল আহমেদ, শাশুড়ি আছিয়া আক্তার ও দেবর কবির মিয়াকে আসামি করে ধর্মপাশা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বক্তারা আরো বলেন, মামলা দায়েরের ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করছেনা। তাই অনতি বিলম্বে আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করে তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা বলা যাচ্ছেনা। তবে রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।###
২১-১১-২০২২ ইং।