এম মনির চৌধুরী রানা, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের বর্ধিত সভার ব্যানারে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের এপিএস মোহাম্মদ রিদুওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েমের ছবি থাকায় হট্টগোল সৃষ্টি ও নেতারাও প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়েছেন। এ নিয়ে যুবলীগের একাংশ নেতাকর্মীরা হঠাৎ কিছু বুঝা উঠার আগেই বর্ধিত সভা বয়কট করে কনভেনশন হল ত্যাগ করেন।গতকাল রবিবার (১২ মে) রাত ৯ টায় শুরু হওয়া এ বর্ধিত সভা চলাকালে উপজেলার চরলক্ষ্যার একটি কনভেনশন হলে বয়কটের ঘটনাটি ঘটে। কিছু নেতা সভা বয়কট করলেও রাত সাড়ে ১২ টায় এ সভা শেষ হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন ও অন্যান্য নেতারা। এসব বিষয় জানতে কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা মাহবুব বর্ধিত সভায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লে কোন উত্তর না দিয়েই সভার প্রধান অতিথি জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী তাঁকে বাঁধা সৃষ্টি করে বলে দাবি করেন। এক পর্যায়ে হট্টগোল ও হইছই সৃষ্টি হলে বেশ কিছুক্ষণ সভার কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে সভা চালু হলেও বর্ধিত সভাস্থল বয়কট করে মূল অনুষ্ঠানের বাহিরে চলে যান কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা মাহবুব, শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ছৈয়দ, সহ-সম্পাদক মো. হানিফ, সদস্য সোলাইমান কবির ও চরপাথরঘাটা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ উদ্দিন চৌধুরী। তাঁদের পিছু পিছু আরো কিছু নেতাকর্মী বেরিয়ে যান। এসব যুবলীগ নেতাদের অনেকেই অর্থপ্রতিমন্ত্রীর অনুসারী বলে আখ্যায়িত করেন।
অন্যদিকে, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদকের উপস্থিতিতে সভা বয়কট করে যুবলীগ নেতারা এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় সর্বমহলে নিন্দিতও হচ্ছেন। কারণ এতে শুধু জেলা নেতাদের অপমানিত করা হয়নি। পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগের ভাবমূর্তিও মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে বলে তৃণমূল নেতারা অভিমত জানিয়েছেন। অপরদিকে, সভায় বক্তব্যদান কালে জুলধা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন ফরহাদ বলেন, ‘আমাকে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুলধার পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে আলোচনা সভা করতে বলেছিলেন। মাহে রমজান আসায় ঈদের পরে করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু এরমধ্যে উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক সেলিম ভাই বারবার বলেন কমিটি থেকে আমাকে বাদ করে দেবেন। বহিষ্কার করে দেবেন। আমি সংগঠনে রাজনীতি করতে আসলাম সম্মানের জন্য। টাকা ইনকামের জন্য নয়। এখনো নাকি আমি বহিষ্কৃত। আবার অনেকেই বলেন স্থগিত আমার পদ। আমার একটা সম্মান আছে তো। আমি জেলা যুবলীগের সভাপতির কাছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। জুলধা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কারো চাকরি করি না। আমরা সংগঠন করি। কথায় কথায় আমাদের বলা হয় কমিটি বিলুপ্ত করে দেবেন। আমরা কি পয়সা ইনকাম করার রাজনীতি করি। আমাদের বারবার কমিটি বাতিলের ভয় দেখানো হয়। এমনকি দক্ষিণ জেলা যুবলীগের মিছিল মিটিং-এ কেন যাই সেটার জন্যও ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক। আমরা রাজনীতি করি। যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারি।
চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনোয়ার সাদত মোবারক বলেন, ‘কোন একটা মিটিং হচ্ছে আমাকে লোকজন নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু ওয়ার্ডে কোন কিছু হলে আমাকে ডাকা হয় না। সুবিধার বেলায় আমরা নাই। দেওয়ার বেলায় আমরা আছি। রাজনীতি কারো বাপের সম্পদ নয়। আমাদের যখন অবমূল্যায়ন করা হয়। তখন আপনারা (জেলা-উপজেলা নেতারা) কোথায় থাকেন। আমাদের প্রাপ্ত সম্মানটা আমাদের দেওয়া হোক। সেটাই প্রত্যাশা করি। চরপাথরঘাটা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আমরা যেদিন অর্থ প্রতিমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছি সেদিনই আমাদের উপজেলা যুবলীগের মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। যুবলীগের আর কোন প্রোগ্রামে দাওয়াত পাই না। তারপরও ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে যুবলীগের বর্ধিত সভায় অংশ নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা আমাদের বক্তব্য দিতে দিচ্ছে না। বর্ধিত সভার ব্যানারে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর এপিএসের ছবি কেন থাকবে? এসব নিয়ে প্রশ্ন করতে গেলে প্রধান অতিথি আমাদের বাঁধা সৃষ্টি করেন। এই জন্য আমরা বর্ধিত সভা বয়কট করে চলে এসেছি। কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মাহবুব বলেন, ‘আমরা সভায় যে সিদ্ধান্ত গুলো গ্রহণ করি। সে সব সিদ্ধান্ত পরে বাস্তবায়ন করা হয় না? তা কাগজে কলমে রয়ে যায়। বিগত সময়ে সাবেক সভাপতি সোলায়মান তালুকদার ভাই যেভাবে কর্ণফুলী যুবলীগ কে দক্ষিণ জেলায় চাঙ্গা করেছিলেন। এখন সেই যুবলীগ নাই। অনেকটা পিছিয়ে গেছে। আমাকে ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলনের আয়োজনের আহ্বায়ক করা হলো। কিন্তু চরপাথরঘাটায় যুবলীগের কমিটি দেবার সময় আমাকে জানায়নি। আমরা পদ-পদবি নিয়ে কি করব। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবো। যদি কোন সাংগঠনিক কোন কাজেকর্মে আমাদের জানানো না হয়। এক পর্যায়ে তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমার সাথে কারো ব্যক্তিগত বিরোধ নেই। আমাদের যুবলীগের একটি নিজস্ব গঠনতন্ত্র আছে, কিন্তু বর্ধিত সভার ব্যানারে এপিএস সায়েম ভাইয়ের ছবি কেন? সায়েম ভাই আমাদের জেলা বা কেন্দ্রীয় কোন নেতা নয়। এর ব্যাখ্যা চাই আমি নেতাদের কাছে? যদি ব্যাখ্যা দিতে না পারেন তবে এই সভা আমি বয়কট করলাম। আমরা সাথে যারা একমত তাঁরাও বয়কট করতে পারেন।
এরপরে উপজেলা যুবলীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর বাদশা বলেন, ‘আজকেই যদি সায়েম ভাইয়ের ছবিটা নতুন করে ব্যানারে লাগানো হতো? তাহলে বয়কটের বিষয়টি মানা যেতো। আসলো সবাই সবকিছু জানে না। আজকে বর্ধিত সভা। সিনিয়র নেতারা আছেন। পরিশেষে যদি সিদ্ধান্ত হয়। তবে বয়কট করতে পারতেন। কর্ণফুলী যুবলীগের বর্ধিত সভায় থাকবে উপজেলার ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নেতাকর্মীরা। এখানে ইউনিয়ন যুবলীগ আমরা প্রত্যাশা করি না। এ বিষয়ে আমি কর্ণফুলী যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম।
কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াজ উদ্দিন আজাদ বলে
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।