সোহারাফ হোসেন সৌরাভ সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে টিফিন পিরিয়ডে জন্মদিনের কেক কেটে টিকটক করার অপরাধে শিক্ষকের চড় থাপ্পড়ে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। উত্তেজিত জনতা চড়-থাপ্পড়ের ফলে স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা বললেও পরিবার ও স্কুল কতৃপক্ষ আত্মহত্যার ফলে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে। তবে ময়নাতদন্তের পরে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে অভিমত পুলিশের। এ ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আরও সাতটি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও মারধরকারী শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে জানা গেছে। কমপক্ষে ৫ ঘন্টা তান্ডব চালানোর পরে সন্ধ্যা নাগাদ পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।রোববার দুপুরে নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এঘটনা ঘটে।
মৃত্যুবরণকারী স্কুল ছাত্রের নাম প্রতাপ চন্দ্র দাস। সে চন্ডীপুর গ্রামের মনোরঞ্জন দাসের ছেলে ও নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। মারধর করা শিক্ষকের নাম অবকাশ খাঁ। তিনি উপজেলার কাজলা গ্রামের অধিবাসি ও স্কুলের সহকারী শিক্ষক।
স্কুলের শিক্ষক অবকাশ খাঁ জানান, টিফিন পিরিয়ডে স্কুলের ছাদে কেক কেটে টিকটক ভিডিও করছিল প্রতাপ। আমি বকাবকি করলে সে পাল্টা আমার সাথে দুর্ব্যাবহার করে। এতে আমি রাগান্বিত হয়ে তাকে বেশ কয়েকটা চড়-থাপ্পড় মেরেছি। পরে প্রতাপ তার বন্ধুদের নিয়ে বাড়ি চলে যায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোনায়েম হোসেন জানান, বেয়াদবি করার কারণে কয়েকটা চড় মারা হয়েছে। এতেই দূর্ঘটনা ঘটে গেছে।
প্রতাপের কাকি তাপসী দাস জানান,প্রতাপ বাড়িতে এসে টয়লটে ঢোকে। টয়লেট থেকে বমি করতে করতে বের হয়। এসেই সে খুব অসুস্থ্য বোধ করছে বলে জানায়। আমরা তাকে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়। তবে কোন ধরণের কীটনাশক সে খেয়েছে,এমন প্রশ্নের উত্তর তাপসী দাস দিতে পারেনি।
এদিকে, প্রতাপের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার সহপাঠীসহ এলাকাবাসী বাড়ি থেকে মরদেহ নিয়ে স্কুল চত্বরে এসে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভে হাজারো মানুষ অংশ নেয়। তারা প্রধান শিক্ষকের কক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করে।
সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের পাশাপাশি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একটি মোটরসাইকেল। খবর পেয়ে কালিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বেগ পেতে হয়।৫ঘন্টা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া স্থানীয় আমিনুর রহমান জানান, তার কানে এমনভাবে চড়- কিল ঘুষি মারা হয়েছে যে, সে বাড়ি ফিরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে দুইজন শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।