বিশেষ প্রতিনিধিঃ
জামালগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সদর ক্লিনিকের আয়া শিল্পী রাণী কর বিভাগীয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্ট্যান্ড রিলিজের দু’সপ্তাহ না যেতেই আবারো আগের কর্মস্থলে পুনরায় বহাল হয়েছেন। উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জামালগঞ্জ সদর ক্লিনিকের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা বাসন্তী রাণী তালুকদারকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করার দায়ে আয়া শিল্পী রাণী করের বিরুদ্ধে গত ১৯ আগস্ট যথাযথ মাধ্যমে সিলেট বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক বরাবরে তিনি লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে পরে ২৩ আগস্ট জনস্বার্থে স্ট্যান্ড রিলিজ করে ছাতক বদলি করা হয়। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, স্ট্যান্ড রিলিজকৃত শিল্পী রাণী কর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জামালগঞ্জ সদর ক্লিনিকে আয়া পদে কর্মরত থাকাকালীন তার কার্যালয়ের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা বাসন্তী রাণী তালুকদারকে নানা ভাবে ফাঁসানোর জন্য দাপ্তরিক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্যাবলী বিভিন্ন মাধ্যমে ভিডিও করে ইউটিউবারদের কাছে পাঠিয়ে অফিসের ভেতরে থেকে অপতৎপরতা চালাতেন। এবিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গত ১৭ আগস্ট আয়া শিল্পী রাণী কর মানসিক ও শারিরীক ভাবে পরিদর্শিকা বাসন্তী তালুকদারকে নির্যাতন করলে বাসন্তী রাণী তালুকদার সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। পরে সুস্থ হয়ে তিনি সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকের কাছে গত ১৯ আগস্ট একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৩ আগস্ট শিল্পী রাণী করকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে ছাতক পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ক্নিনিক বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু ক’দিন যেতে না যেতেই ছাতকে ক্নিনিক বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. শহীদুল ইসলামের সুপারিশক্রমে জেলা পরিবার পরিকল্পনা দফতরের উপ-পরিচালক বরাবরে আবেদন করে মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই চলতি মাসের গত ০৫ সেপ্টেম্বর পুনরায় জামালগঞ্জ আগের কর্মস্থলে ফিরে আসেন। এঘটনায় জামালগঞ্জ সংশ্লিষ্ট পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীরা বিস্মিত হয়েছেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে, স্ট্যান্ড রিলিজকৃত শিল্পী রাণী কর পরে কথা বলবেন বলে ফোন সংযোগ কেটে দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এবিষয়ে জামালগঞ্জ পরিবার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে ক্লিনিক বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. নাহিমুল হোসাইন মজুমদারের কাছে স্ট্যান্ড রিলিজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, উর্ধতন কতৃপক্ষ বিভিন্ন কারণে স্ট্যান্ড রিলিজে বদলি করতে পারেন। এবিষয়ে কিছু বলতে পারবো না বলে তিনি প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান। এরপর ছাতক পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপজেলা কর্মকর্তা ও জামালগঞ্জের প.প. কার্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চৌধুরী রাজীব মোস্তফা জানান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে দুটি সাইড আছে। একটি ক্লিনিক সাইড, অপরটি নন ক্লিনিক সাইড। আয়া শিল্পী রাণী কর ক্লিনিক সাইডের মেডিকেল অফিসারের আওতাধীন। তিনি স্ট্যান্ড রিলিজের মাধ্যমে ছাতকে বদলী হয়েছেন জেনেছি। এখানে জয়েন করার পরে হয়তো মানবিক অথবা পারিবারিক কারণ দেখিয়ে ক্নিনিক বিভাগের মেডিকেল অফিসারের মাধ্যমে প্রোপার চ্যানেলে দরখাস্ত করেছেন। তিনি পুনরায় জামালগঞ্জে বদলী হয়েছেন কিনা তা আমি এখনও জানি না। এবিষয়ে ছাতক প.প.কার্যালয়ের ক্নিনিক বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা.শহীদুল ইসলাম জানান, কেউ যদি বদলীর আবেদন করে তবে সেটি ফরোয়ার্ড করা আমার দায়িত্বে আছে। তবে বদলীর বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। এব্যাপারে জানতে চেয়ে সুনামগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক বিকাশ কুমার দাসের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।