মো রাসেল সরকার,গজারিয়া প্রতিনিধিঃ
আজ সকাল এগারোটা মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ২নং বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন বড় রায়পাড়া গ্রামের সালামত সরকার নামে সত্তরোর্ধ্ব এক ব্যক্তি তবে ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে ঢুকছেন না তিনি। কাছে গিয়ে কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান জন্ম নিবন্ধন সংশোধন বিষয়ক খবর নিতে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে এসেছিলেন। তবে পায়ের জুতা খুলে সিঁড়ির নিচে রেখে ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। বিষয়টি তার ভালো লাগেনি সেজন্য ভেতরে প্রবেশ না করে বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন।
দেখা গেলো ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সিঁড়িতে বসে আছেন সালমা আক্তার, রেনু বেগম সহ কয়েকজন মহিলা। বিভিন্ন কাজ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ এসেছেন তারা তবে তাদের কারো পায়ে জুতা নেই। কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন জুতা নিয়ে এই ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশ করা যায় না সেজন্য জুতা মাটিতে রেখে উপরে উঠেছেন তারা। আগে এমনটি ছিল না তবে গত কিছুদিন ধরে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে,জুতা খুলে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে প্রবেশ করতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোফাজ্জল মিয়া বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ মসজিদ নয় যে পাক-পবিত্র হয়ে সেখানে প্রবেশ করতে হবে। গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আসবে-যাবে তাদের পায়ে জুতা থাকবে, থাকবে না এটাই তো নিয়ম। জুতা পায়ে দিয়ে আসতে হবে এবং সেটা খুলে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে প্রবেশ করতে হবে এমন নিয়ম বাংলাদেশের কোন ইউনিয়ন পরিষদে আছে বলে আমার জানা নাই।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান জুয়েলের মুঠোফোনে অসংখ্য বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফিরোজ আহম্মেদ আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে কিছুদিন আগে চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করি। এতে করে সেবা প্রত্যাশীদের কোন সমস্যা হচ্ছে বলে আমি মনে করি না।
নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য এমনিতেই বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাপক সমালোচিত ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েল।এর মধ্যে গত ২৩ মার্চ ইউপি সদস্যদের সাথে দুর্ব্যবহার, অনিয়ম, ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয় ইউনিয়নটির ১১জন ইউপি সদস্য।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এরকম কোন ঘটনা আমার জানা নেই তবে একজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কখনোই এ ধরনের বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারেন না। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব আর চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের অনাস্থার বিষয়ে তদন্ত চলছে। গজারিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জি.এম. রাশেদুল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে তিনি দ্রুতই প্রতিবেদন পেশ করবেন।