মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি-
মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার শহরের খালইষ্ট এলাকায় এক পরিবারে ৩ কন্যা ও এক বৃদ্ধাকে রাতে জুসের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করে ঘরে থাকা মূল্যবান স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার মামলায় ৩ আসামিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে মুন্সীগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার মধ্যম কলাকোফা গ্রামের লিটন মিয়ার ছেলে রিয়াজউদ্দিন সুমন (২৫),মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে লিটন মিয়া (৪৫) ও লিটন মিয়ার ছেলে বিরাজুল ইসলাম (২৮)। রায়ের সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে তাঁদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী বুলবুল আহম্মেদ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২৩ ইং সালের ২১ অক্টোবর নেত্রকোনার নিবাসী সদর উপজেলার খালইষ্ট এলাকার ভাড়াটিয়া আব্দুল আজিজ এর ছেলে একলাস মিয়া (৪৫) এর কনফেকশনারি দোকানের ব্যাবসা পরিচালনা করার জন্য রিয়াজউদ্দিন সুমনকে দায়িত্ব দিয়ে ২৩ সালের ২৯ অক্টোবর বাদির খালইষ্ট ভাড়া বাড়িতে তার ৩ কন্যা ও শাশুড়িকে রেখে রিয়াজউদ্দিন সুমনকে দেখে রাখার দায়িত্ব দিয়ে নেত্রকোণা জরুরি কাজে স্ত্রীকে নিয়ে চলে যায়। একই তারিখ রাতে রিয়াজ উদ্দিন সুমন তার পরিচিত লিটন মিয়া ও বিরাজুল ইসলামকে বাড়ি নিয়ে আসেন।
ওই দিন রাতে রিয়াজউদ্দিন সহ লিটন মিয়া ও বিরাজুল ইসলাম মিলে একলাস মিয়ার ঘরে থাকা ৩ কন্যা জান্নাত আকতার, একামনি ও কেয়া মনি সহ বাদির বৃদ্ধা শাশুড়িকে জুসের সাথে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে অচেতন করে ঘরের আলমারিতে রক্ষিত ৩ ভড়ি স্বর্ণালংকার ও ১১ লাখ টাকা নিয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে বাদির ৩ কন্যা ও শাশুড়ি স্বাভাবিক হলে একলাস মিয়াকে খবর দিলে তিনি নিজ ভাড়া বাড়িতে এসে ঘটনার বিস্তারিত জেনে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ করেন। পরে থানা পুলিশ আসামিদের খবর দিলে তারা থানায় এসে ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করে এবং বাদির সমস্ত কিছু ফেরত দিবে বলে অঙ্গীকার করেও কোন কিছু ফেতর না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে গত ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর মুন্সীগঞ্জ আদালতে এসে মামলা দায়ের করে। পরে মামলাটি আদালতে বিচারাধিনে থাকাবস্থায় ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে ওই রায় ঘোষণা করেন।
এব্যপারে মামলার বাদি একলাস মিয়া বলেন, আমি বিশ্বাস করে আসামি রিয়াজ উদ্দিন সুমনকে ব্যবসার দায়িত্ব দেই। আমি ও আমার স্ত্রী জরুরি কাজে নেত্রকোণ গিয়েছিলাম। ঘটনার তারিখে রিয়াজউদ্দিন আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করে তার পরিচিত লিটন ও বিরাজুলকে আমার বাড়িতে এনে আমার ৩ মেয়ে ও শাশুড়িকে অচেতন করে ঘরে থাকা ৩ ভড়ি স্বর্ণ ও ১১ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। আসামিরা থানায় এসে সমস্ত টাকা ও স্বর্ণ ফেরত দিবে বলে আর দেয় নাই। এঘটনায় আমি মামলা করলে আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে সাজার আদেশ দিয়েছেন। আমি বিচারকের রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।