মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
ঝালকাঠি শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিকের বোতলসহ ফেলনা সামগ্রী কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহ করা নূরভানু বেগমের (৫০) জন্য সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।আজ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবেকুন নাহার শহরের পোনাবালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে নূরভানুকে একটি ঘর বরাদ্দ দেন।
এদিকে নূরভানুকে একটি ভ্যানসহ কিছু পুঁজি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ রাজ্জাক সেলিম।এতে হাসি ফুটেছে দরিদ্র নূরভানুর মুখে।
সম্প্রতি নূরভানুকে নিয়ে বেশ কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়|সংবাদটি ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুমের নজরে এলে তিনি অসহায় নূরভানুকে সরকারি আবাসন প্রকল্পের একটি ঘর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি ঝালকাঠি সদরের ইউএনওকে নির্দেশ দেন।
ঝালকাঠি শহরের পুরাতন কলাবাগান এলাকার সোহরাব হাওলাদারের স্ত্রী নূরভানু বেগম।শহরের অলিগলি আর গ্রামগঞ্জে ভাঙারিসামগ্রী কুড়িয়ে বিক্রি করে সংসার চালান তিনি।তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী একটি ভাড়া করা ভ্যান আর বড় একটি বস্তা।সড়কে পড়ে থাকা বিভিন্ন প্লাস্টিকসামগ্রী সংগ্রহ করেন তিনি।পরে তা কেজিদরে বিক্রি করে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা আয় করেন।এর মধ্যে প্রতিদিন ভ্যান ভাড়ার ৭০ টাকা গুনতে হয়। হাতে ২৫০ টাকার মতো থাকে।তাই দিয়েই চলে তাঁর সংসার|
স্বামী সোহরাব হাওলাদার বছর খানেক আগে রঙের কাজ করতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে পা ভেঙেছেন।সে থেকে তিনি আর ভারী কাজ করতে পারেন না।মাঝেমধ্যে দিনমজুরের কাজ করে কিছু আয় করেন।তাঁদের একমাত্র ছেলে রিয়াজ হাওলাদার বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছেন।বৃদ্ধ মা বাবার খোঁজ রাখেন না|
এখন নতুন ঘর পেয়ে নূরভানুর মুখে হাসি ফুটেছে।অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘আইজ আমার মনে ঈদের খুশি। আমার দুর্দশার সংবাদ পইড়া ডিসি আফায় (জেলা প্রশাসক) একখান ঘর উপহার দেছে।একখান ভ্যান গাড়ির ব্যবস্থাও অইতে আছে।এইডা আমার জীবনে বড় আনন্দের বিষয়।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রাজ্জাক সেলিম বলেন, ‘নূরভানুর ছবি ও সংবাদ দেখে তাঁকে একটি ভ্যানসহ ব্যবসা করার জন্য কিছু পুঁজি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।ভবিষ্যতেও তাঁকে সর্বাত্মক সহায়তা করা হবে।
ইউএনও সাবেকুন নাহার বলেন,নূরভানুর দুর্দশার সংবাদ দেখে জেলা প্রশাসক ওই নারীকে একটি ঘর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর নির্দেশে সদরের পোনাবালিয়া আবাসন প্রকল্পের প্রথম সারিতে একটি ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে।