মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
ছোট-বড় ইটের টুকরার স্তূপ ছড়িয়ে আছে চারদিকে।কোথাও পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা।নিয়মিত যান চলাচলের কারণে কোথাও কোথাও মাটি দেবে গেছে।একনজর দেখলে বোঝা দায়,এটা স্টেডিয়াম নাকি পরিত্যক্ত কোনো ময়দান।প্রায় ১৬ দিন আগে ঝালকাঠির শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে শেষ হয়েছে মাস ব্যাপী রূপসী বাংলা মেলা।এরপর ওই মাঠের এমনই করুণ দশা।
খেলোয়াড় ও ক্রীড়ামোদীদের অভিযোগ,মেলা শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও খেলাধুলার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে পারেনি জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা। তবে মাঠ পরিষ্কার না করার বিষয়ে দায় নিতে নারাজ জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা।তাঁরা বলছেন,জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবে।জেলা প্রশাসনের দাবি,মেলা পরিচালনা কর্তৃপক্ষ মাঠ পরিষ্কার করবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা যায়,শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে রূপসী বাংলা মেলা গত ২২ মার্চ শেষ হয়। স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকে মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান হিসেবে লেখা ছিল জেলা প্রশাসনের নাম।তবে মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল খুলনার মেসার্স চামেলী ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
মেলার কারণে গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে এ মাঠে খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যায়।ওই দিন দুপুর থেকে মেলার মাঠ প্রস্তুতের কাজ শুরু হয়।এর পর থেকে টানা ৪৮ দিন মাঠটি মেলা পরিচালনা কমিটির দখলে ছিল।তবে মেলা শেষে মাঠ খেলাধুলার উপযোগী না করে দিয়েই ঝালকাঠি ত্যাগ করেন চামেলী ট্রেডার্সের লোকজন।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ও সাবেক খেলোয়াড় হানিফ মাহমুদ বলেন, মাঠটি দ্রুত খেলাধুলার উপযোগী না করা হলে অনুশীলন করতে না পেরে অনেকেই খেলাধুলা থেকে দূরে সরে যাবেন।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ খান বলেন,‘আগামী সভায় আমরা মাঠের বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।জেলা প্রশাসক মহোদয় মাসব্যাপী মেলার জন্য খেলার মাঠ বরাদ্দ দিয়ে অনুমতি দিয়েছেন।তাই খেলার মাঠ তাঁরাই ঠিক করে দেবেন।এর দায়ভার ক্রীড়া সংস্থা নেবে না।জেলা প্রশাসক মহোদয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতির দায়িত্বেও আছেন।বিষয়টি তিনিই দেখবেন।
ক্রীড়া সংস্থার কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য রইচ আহম্মেদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসন মেলা কমিটির কাছে মাঠ ভাড়া দিয়েছে।সেই টাকার কিছু অংশ যদি ক্রীড়া সংস্থাকে দেওয়া হয়,তাহলে আমরা মাঠ মেরামত করে খেলাধুলার উপযোগী করে দিতে পারতাম।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম বলেন,মেলা শেষ হওয়ার পর দুই দিনের মধ্যে মাঠ পরিষ্কার করে দেওয়ার কথা ছিল।কিন্তু এত দিনে কেন চামেলী ট্রেডার্স মাঠ পরিষ্কার করেনি, সেটা খোঁজ নেওয়া হবে।
চামেলী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. রাসেল হাওলাদার বলেন, ‘আমি লক্ষাধিক ইট ভাড়া নিয়ে মাঠে বসিয়েছিলাম।যাঁদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছি, মাঠ পরিষ্কার করার দায়িত্ব তাঁদের।