মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
ঝালকাঠিতে ৫শ’ বছরের ঐতিহ্য হিসেবে আজও ঠায় দাঁড়িয়ে আছে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মিয়া বাড়ি জামে মসজিদ।স্থানীয়দের কাছে এটা তিন গম্বুজ মসজিদ নামেই পরিচিত। সরেজমিন ঘুরে জানাযায়,ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ভারুকাঠি গ্রামে আস্তানা গেড়েছিলেন বাংলার সুবাদার মুঘল সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় ছেলে শাহ সুজার সঙ্গী শেখ আব্দুল মজিদ।তিনিই এ মসজিদের নির্মাতা।তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদের দেয়াল ৪২ ইঞ্চি পুরু।মসজিদের সামনে ঘাট বাঁধানো সুবিশাল দীঘি।এ দীঘি ও মসজিদের সঙ্গে জড়িত অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে-বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের স্মৃতি।মিয়া বাড়িতে তার নিকটাত্মীয়রা বসবাস করতেন।সেই সূত্রে এখানে বেড়াতে এসে দীঘিতে গোসল,মসজিদে নামাজ আদায় করতেন একে ফজলুল হক।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,অনিন্দ্য সুন্দর মিয়াবাড়ি জামে মসজিদটি ভারুকাঠি গ্রামের প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম আকর্ষণ।এটি ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছে বলে ধারণা করেন গ্রামের প্রবীণরা।দ্বিতল মুঘল আমলের কারুকার্য মণ্ডিত।মূল মসজিদে রয়েছে তিনটি দরজা।চারপাশে পিলারের উপর নির্মিত হয়েছে ছোট বড় পাঁচটি মিনার।মিনার গুলোও নান্দনিক নকশায় অলংকৃত। তিনটি গম্বুজের মাঝেরটি সবচেয়ে বড়।এটির ভেতরেও রয়েছে কারুকার্য।
ভারুকাঠি গ্রামের প্রবীণ নেছার উদ্দিন আহমেদ জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন,এ মসজিদ নির্মাণের সঠিক সময় এখন কেউ বলতে পারবে না।তবে বাপ-দাদার মুখে শুনে এসেছি মসজিদটি প্রায় ৫শ’ বছরের পুরোনো।মসজিদ ও দীঘি একই সময় নির্মাণ করা হয়েছে।মসজিদ সংলগ্ন কাঁঠাল গাছের গোড়া থেকে সব গুলো করবস্থানই বাঁধাই করা।
তিনি আরো বলেন, শেরে-বাংলা একে ফজলুল হক আমার দাদার খালাতো ভাইয়ের ছেলে।তার অনেক স্মৃতি এই মসজিদ ও দীঘির ঘাটলায় আছে।পাকিস্তান আমলের মন্ত্রী খান বাহাদুর আফজাল পিরোজপুরের বাসিন্দা।তার মাতুল বাড়ি এটা।খান বাহাদুর আফজালেরও অনেক স্মৃতি রয়েছে এখানে। ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মিয়া বাড়ি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট জামে মসজিদ। ঝালকাঠি কলেজ মোড় থেকে বাসে নবগ্রাম যেতে হবে। এরপর টেম্পুতে চড়ে গুদিগাটা নেমে একটু ভেতরে গেলেই দেখা মিলবে ভারুকাঠির ঐতিহ্য মিয়া বাড়ি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট জামে মসজিদের।